করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু

দেয়া হচ্ছে করোনা ভ্যাক্সিনের দ্বিতীয় ডোজ
দেশে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে আজ থেকে। পাশাপাশি নিবন্ধিতদের প্রথম ডোজের টিকা দেয়াও চলবে।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকেই রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে করোনা ভ্যাকসিন দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হয়। নির্ধারিত সময়ের আগেই অনেকে হাসপাতালে উপস্থিত হন। যারা ২৮ জানুয়ারি, ৭ ফেব্রুয়ারি ও ৮ ফেব্রুয়ারিতে প্রথম ডোজ নিয়েছেন, তারাই আজ দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিচ্ছেন।
এ জন্য দুইদিন আগে থেকে মোবাইল নম্বরে এসএমএস যেতে শুরু করেছে। এসএমএস না গেলেও প্রথম ডোজের টিকা কার্ড নিয়ে আগের কেন্দ্রে গিয়ে টিকা দেওয়া যাবে।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক আজ শুরুতেই টিকা নিয়েছেন হাসপাতালটি থেকে। তিনি জানিয়েছেন, দ্বিতীয় ডোজ নিবন্ধনে সুরক্ষা অ্যাপসে কোনো সমস্যা হবে না। ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের জন্য ভ্যাকসিন সার্টিফিকেট ও ভ্যাকসিন পাসপোর্ট তৈরির পরিকল্পনার কথাও জানিয়েছেন প্রতিমন্ত্রী। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কেএম নুরুল হুদাও ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন আজ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার এক হাজার ছয়শ' জনকে এই ডোজ দেয়া হবে।
জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৫৫ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া হয়েছে, দেশে মোট টিকা এসেছে এক কোটি দুই লাখ ডোজ। হাতে আছে ৪৭ লাখ ডোজ। আট লাখের ঘাটতি রয়েছে।
এর আগে, স্বাস্থ্যসচিব লোকমান হোসেন মিয়া জানিয়েছিলেন, "টিকা নিলেও আমাদের মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আমরা যতো বেশি সচেতন হবো তত বেশি সুরক্ষিত থাকতে পারবো। আমরা চেষ্টা করবো ডাক্তার-নার্সসহ সব পর্যায়ের মানুষকে নিয়ে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মোকাবেলা করতে পারি।"
আরও পড়ুন: দেশে করোনায় দক্ষিণ আফ্রিকার ভ্যারিয়েন্ট বেশি ছড়াচ্ছে
এদিকে, টিকা গ্রহণ নিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জনসাধারণের উদ্দেশে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়-
১. বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) থেকে এসএমএস পাওয়া সাপেক্ষে দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে।
২. যারা যোগ্য হবেন তাদের মোবাইল ফোনে এসএমএস চলে যাবে। যাদের ভ্যাকসিন দেওয়ার পর দুই মাস অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু এসএমএস পাননি তারা অবশ্যই টিকা কার্ড এবং টিকা কার্ডের ফটোকপি নিয়ে টিকা কেন্দ্রে আসবেন।
৩. দ্বিতীয় ডোজের জন্য আগত সবাইকে টিকা কার্ড এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে আসতে হবে। কারও টিকা কার্ড হারিয়ে গেলে কিংবা কোনও কারণে নষ্ট হয়ে গেলে অনলাইন থেকে পুনরায় কার্ড ওঠানো যাবে।
৪. দুই মাস পূরণের আগে ২য় ডোজের ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে না, তবে পরে নেওয়া যাবে (১২ সপ্তাহ পর্যন্ত)।
৫. রেজিস্ট্রেশনকৃত হজ যাত্রীদের বয়স ১৮ বছরের বেশি হলেই রেজিস্ট্রেশন করে ভ্যাকসিন নিতে পারবেন। (এমন হজযাত্রীর সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। তাদের দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করে ভ্যাকসিন নিতে বলা হয়েছে। সৌদি আরবের হজ কর্তৃপক্ষও জানিয়েছে, ভ্যাকসিন গ্রহণের প্রমাণপত্র ছাড়া এবছর হজে অংশ নিতে দেওয়া হবে না)।
৬. প্রথম ডোজের টিকা দেওয়ার কর্মসূচি আগের মতোই এমনকি রমজান মাসেও অব্যাহত থাকবে তাই প্রথম ডোজের টিকা নেওয়ার জন্য অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করে নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
৭. পর্যাপ্ত ভ্যাকসিন আছে, শেষ হওয়ার ভয়ে কেউ ভীত হবেন না, গুজবে বিশ্বাস করবেন না, রোজা রেখে ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে।
৮. কেন্দ্র পরিবর্তন করে আপাতত দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন নেওয়া যাবে না।
৯. টিকা কেন্দ্রে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরে আসতে হবে এবং প্রত্যেক টিকা গ্রহণকারীকে অন্তত ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনায় আরো বলা হয়েছে, টিকাদাতা এবং স্বেচ্ছাসেবীদের সহযোগিতা করলে গ্রহীতার কাজ দ্রুত এবং সহজ হবে।
এছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্যে বাইরে গেলেই ঘরে ফেরার পর বা যেখানে সুবিধা আছে সেখানে সাবান-পানি দিয়ে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। সঠিক তথ্যের প্রয়োজনে ৩৩৩, ৯৯৯ অথবা ১৬২৬৩ হেল্প লাইনে ফোন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ২৭ জানুয়ারি কুর্মিটোলা হাসপাতালে নার্স রুনুকে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন দেওয়ার মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে করোনার টিকাদান কার্যক্রম শুরু হলেও আনুষ্ঠানিকভাবে তা শুরু হয় ৭ ফেব্রুয়ারি। একজন ব্যক্তিকে দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিতে হবে।
বিভি/এনজি
মন্তব্য করুন