ছুটির ৪ ঘণ্টায়ও বাস মেলেনি হাজারো অফিস ফেরৎ যাত্রীর
বিকেল ৫টায় ছুটি হয়েছে অফিস কিন্তু রাত আটটায়ও উঠতে পারেননি গাড়িতে, ছাড়তে পারেননি কারওয়ানবাজারের অফিস পাড়াও। তাইতো একটি গাড়ি এলেই শত শত যাত্রী শুরু করেন দৌড়-ঝাঁপ। দরজায় হলেও যদি মেলে একটু ঠাঁই- সেই চেষ্টা সবার। কোনো কোনো গাড়ি উঠারই সুযোগ দিচ্ছে না। কেউ আবার দরজার কাছে গেলে ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দিচ্ছে। দিনভর এমন পরিস্থিতি সহ্য করতে হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের।
বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) দিনভর এমন পরিস্থিতি সহ্য করতে হয়েছে। গণপরিবহনের এ সংকটের কারণে এদিন কর্মস্থলেও যেতে পারেননি অনেকে। সকালে বাসে উঠতে না পেরে রাজধানীর খিলগাঁও, খিলক্ষেত, রামপুরাসহ কয়েক জায়গায় বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে অফিসগামীদের।
ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা অভিযোগ করেন, কোনো ধরনের সমন্বয় ছাড়া সব অফিস খোলা রেখে বাসে অর্ধেক যাত্রী বহনের নির্দেশনা দেয়ায় বাড়তি ভাড়ার বোঝা চাপানোর পাশাপাশি ভোগান্তিও বেড়েছে তাদের।
রাতে কারওয়ান বাজার মোড়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী আশিকুর রহমান। তিনি বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, সেই সাড়ে ৫টা থেকে বাসের জন্য দাঁড়িয়ে আছি। এখন ৮টা বাজে, অথচ বাসে উঠতে পারিনি। সব বাস দরজা লাগিয়ে আসে। মাঝে মাঝে দুএকটা বাস দরজা খুলে যাত্রী নিলেও এত মানুষের চাপে উঠার সুযোগ পাইনি।
রেহানা আক্তার নামে এক নারী খুব অসহায়ভাবে বলেন, অফিস শেষ করে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে আছি। যে পরিমাণ যাত্রী, আমি একজন মহিলা এত মানুষকে টপকে জীবনেও বাসে উঠতে পারবো না। আজ রাতে বাসায় যেতে পারবো বলে মনে হচ্ছে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, সব প্রতিষ্ঠান খোলা রেখে শুধু বাসে যাত্রী নিয়ন্ত্রণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এই সিদ্ধান্তে সরকারের সমন্বয়হীনতা স্পষ্ট। আমরা করোনা সচেতনতা নিশ্চিত করতে যেভাবে বলবো একইভাবে বলবো যাত্রীদেরও বিষয়ও গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা এভাবে আরো বেশি ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
বাড়ানো ভাড়া কমিয়ে আসনপ্রতি যাত্রী নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মানতে সর্বোচ্চ কঠোরতা এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনার পরামর্শ দেন তিনি।
এর আগে, করোনা নিয়ন্ত্রণে গেলো সোমবার বাসে অর্ধেক যাত্রী পরিবহনের নির্দেশনা দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সেদিন সন্ধ্যায়ই তড়িঘড়ি করে বৈঠক ডেকে বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়াতে মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় বিআরটিএ। মঙ্গলবার মন্ত্রণালয় পরামর্শ গ্রহণ করলে বুধবার থেকে কার্যকর শুরু হয় এ সিদ্ধান্ত।
বিভি/ কেএস/ এমএস