• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চাহিদা আর সরবরাহের ফারাক বিস্তর, চিন্তায় কৃষক

খোদা বকশ ডাবলু

প্রকাশিত: ১১:১৮, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ১১:২৮, ১৯ জানুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
চাহিদা আর সরবরাহের ফারাক বিস্তর, চিন্তায় কৃষক

উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও, খাদ্য উৎপাদনে জেলার চাহিদা মিটিয়ে অংশ নেয় দেশের চাহিদা মেটাতে। জেলায় আবাদযোগ্য বেশিরভাগ জমিই এখন তিন ফসলি। মালটা, কমলা, আম,কাঁঠাল, লিচুসহ প্রায় সব ধরনের ফল ফলাদির বাণিজ্যিক আবাদতো আছেই। আছে সব ধরনের আগাম ও শীতকালীন সবজিসহ আাঁখ,গম,ভুট্টা ও  নানা ধরনের ধানের আবাদ। আবাদ নিয়ে কৃষকদের গবেষণা আর সফলতার প্রারম্ভিক পর্যায়ে কোনো কোনো রাসায়নিক সারের সংকট তাদের দুঃচিন্তায় ফেলে দিয়েছে। প্রান্তিক কৃষকের রাসায়নিক সারের এই সংকটকালে কর্তৃপক্ষের পরিস্কার কথা, সারের কোনো সংকটই নেই।  

জেলার মাটি পরীক্ষায় দেখা যায় এ অঞ্চলের মাটিতে পটাশিয়ামের ঘাটতি দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি। তাই এ অঞ্চলের মাটিতে এমওপি অর্থাৎ পটাশ সারের পরিমান তুলনামূলক বেশি লাগে। আর তাই কৃষকের মাঝেও এই এমওপি সারের চাহিদা বেশি। সঠিক সরবরাহ না থাকা এবং ফসলকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে কৃষকদের বেশি দামে এমওপিসহ অন্যান্য সার কিনতে হয় যাতে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। 

এক বস্তা এমওপি সারের সরকার নির্ধারিত মূল্য ৭'শো পঞ্চাশ টাকা হলেও কিনতে হয় ১৩'শো থেকে ১৪'শো টাকায়, ক্ষেত্রভেদে ১৫'শো টাকা। ফসফেট ১১'শাে টাকা হলেও কিনতে হয়  ১৪'শো থেকে ১৫ 'শো টাকায়, ইউরিয়া ১১'শো টাকা হলেও কিনতে হয় সারে ১২'শো থেকে ১৩ 'শো টাকা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের হিসাব মতে ২০২২ সালের গত জুলাই হতে ডিসেম্বর মাসের জেলার রাসায়নিক সারের চহিদার বিপরিতে বরাদ্দের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, এমওপি সারের ৪৬১৭১ মে. টন চাহিদার বিপরিতে বরাদ্দ পাওয়া গেছে ১২৬৫১ মে. টন, টিএসপি ২৪৪৫৩ মে. টনের চাহিদা থাকলেও বরাদ্দ আসে ১০৮৯১ মে. টন, ইউরিয়া ৬৪৯৬৬ মে. টনের চাহিদা থাকলেও বরাদ্দ আসে ৩২০৫৮ মে. টন এবং ডিএপি ৩৮৯৩৭ মে. টনের চাহিদা থাকলেও বরাদ্দ আসে ২২১২৪ মে. টন। দাম বেশি ও সঠিক সরবরাহ না থাকায় কৃষকরা রাসায়নিক সারের সরকার নির্ধারিত মাত্রাও প্রয়োগ করতে পারেন না তার ফসলে। 

কৃষকদের অভিযোগ প্রভাবশালী না হওয়ায় কৃষকের জন্য সরকারের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত আমরা। চাহিদা এবং দামে বেশি হলেও আবার অনেকে রাসায়নিক সারের বিকল্প হিসেবে জৈব সার প্রয়োগের চেষ্টা করছেন তার ফসলে। 

উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. দিদারুল ইসলাম বলেন, আমরা মুখ দেখে কৃষি সেবা দেই না। মৎস অধিদপ্তর এবং চা বোর্ড কোনো সারের চাহিদা না দিয়েও আমাদের চাহিদাকৃত সার ব্যবহার করে। জনবল ঠিক রাখলে আমরা সেবার মান নিশ্চিতে আরো সক্ষম হবো বলে জানালেন মাঠ পর্যায়ের এই কৃষি কর্মকর্তা। 

নন ইফরিয়া সার গুদাম শিবগঞ্জ, ঠাকুরগাঁওয়ের ডেপুটি এ্যাসিসটেন্ট ডাইরেক্টর বলেন, আমরা সারের সরকারি বরাদ্দের বিতরণ করি মাত্র। বরাদ্দ বেশি হলে সংকট মোকাবিলা করা যাবে।

উঠান বৈঠক,দলীয় আলোচনা, লিফলেট বিতরণ, বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও মাঠ দিবসের মাধ্যমে আমরা কৃষকদের পরিমিতভাবে সার ব্যবহারের উপর গুরুত্ব আরোপ করছি বলে জানান, জেলা প্রশিক্ষণ অফিসার কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামারবাড়ী, ঠাকুরগাঁওয়ের কৃষিবিদ মোছাম্মৎ শামীমা নাজনীন।

পরিষ্কার কথা, সারের কোনো ঘারতি নেই। কৃষক আগাম ফসলের জন্য সার মজুদ করায় সার সংকট সৃষ্টি হতে পারে। আমাদের মনিটরিং অত্যন্ত কঠোর আছে। দামের বিষয়ে আপনারা সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে আমরা ব্যবস্থা নিবো বলে জানান, ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মো. মাহবুবুর রহমান। 

কৃষিকাজে রাসায়নিক সার নিশ্চিতকরণে উৎপাদন বাড়াবে ফসলের। খাদ্যে সমৃদ্ধ হবে দেশ এই প্রত্যাশা সকলের।

বিভি/রিসি

মন্তব্য করুন: