• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

স্থায়ী আবাসনে ঠাঁই হয়নি ভারতীয় যুবকের

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশিত: ১৯:২৬, ২৭ অক্টোবর ২০২১

আপডেট: ০৯:২২, ২৮ অক্টোবর ২০২১

ফন্ট সাইজ
স্থায়ী আবাসনে ঠাঁই হয়নি ভারতীয় যুবকের

দুই মাসেও স্থায়ী আবাসনে ঠাই হয়নি রংপুর মেডিকেলে পরে থাকা ঠিকানাহীন ভারতীয় এক যুবকের। শারীরিকভাবে অক্ষম এই যুবককে সুস্থ করতে দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। আপন ঠিকানায় না হলেও; আপাতোত যুবকের মৌলিক চাহিদা পুরোনে আদালতের মাধ্যমে সমাজসেবা অধিদফতরের কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া করছেন পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

দিনের পর দিন হাসপাতালের বাড়ান্দায় অযত্নে অবহেলায় পরে থাকা এই ভিনদেশির ঠাই হয়নি নিদৃষ্ট কোনো স্থানে।

বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল পরিচালক ডা. রেজাউল করিম জানিয়েছেন, দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে যুবকটি হাসপাতালে আছেন। রাস্তায় পরে থাকা এই যুবককে পথচারীরা পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কোনো পরিচয় না পাওয়ায় সমাজ সেবা অধিদফতরের মাধ্যমে তাঁর সব ধরনের সেবা দেওয়া হচ্ছে। যুবকটির কোমড় থেকে পা পর্যন্ত অবস হওয়ায় চলাচল করতে পারেন না। মেডিকেলে বোর্ড বসিয়ে তাঁর চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ভর্তি করা হয়েছে নিউরো সার্জারী বিভাগে। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার নিউরো সাইন্স ল্যাবরেটরি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ পরিচালকের। 

হাসপাতালের সমাজ সেবা অধিদফতরের অফিসার জয়নাল আবেদীন ও নূরে লাইলা জানিয়েছেন, অসচ্ছল, দুস্থ ও অসহায় মানুষদের চিকিৎসায় সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন তারা। কিন্তু এই ভারতীয় যুবকের কোনো পরিচয় না পাওয়া এবং স্বজন না থাকায় তাঁকে নিয়ে বেকায়দায় পড়তে হয়েছে তাঁদের। হাসপাতাল কর্তপক্ষের নির্দেশেই দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা সেবা। নির্দেশনা পেলেই কোনো সেচ্ছাসেবা বা সামাজিক সংগঠনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

হিন্দিভাষী আধ মরা এই যুবকের কথা অস্পষ্ট। চলতে না পারায় পুরো সময় শুয়েই কাটে তাঁর। কথা বলার চেষ্টা করা হলেও এটুকু বুঝা গেছে ভুল করে তিনি এই দেশে এসেছেন। পেশায় কৃষি শ্রমিক। নিজের জন্মভূমিতে যেতে বড় ব্যাকুল। প্রসাব-পায়খানা বাথরুমে করতে না পারায় ওয়ার্ডেও বিছানায় যায়গা হয়নি তাঁর। হাসপাতালের আয়া, বয়দের মানবিকতা তাঁকে বাঁচিয়ে রেখেছে। 

চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী কুলসুম বেগম জানালেন, তাঁর পয়ঃ পরিষ্কার, গোসলসহ সব কিছু করে দেন তিনিসহ অরও অনেকে। এই সহযোগিতা না করলে হয়তো এতোদিনে গন্ধ ছড়িয়ে পরতো। মানুষ হয়ে একজন মানুষের সেবা করা তাদের নৈতিক দায়িত্ব বলে মনে করেন তিনি।

রংপুর মহানগর পুলিশের অপরাধ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু মারুফ হোসেন জানিয়েছেন, যুবকের বিষয়টি নিয়ে নীবিড়ভাবে তদন্ত করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে তিনি ভারতীয় নাগরিক। তবে কোন প্রদেশের বাসিন্দা, কীভাবে সীমান্ত পার হয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন নয়। আইনী প্রক্রিয়া শেষে নির্ধারিত কোনো সংস্থার মাধ্যমে এই যুবককে স্থায়ীভাবে আবাসনের আশ্বাস জানিয়েছেন তিনি। গেলো দু’মাস আগে নীলফামারীর ডিমলা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এই যুবক।
 

বিভি/জেএ/এএন

মন্তব্য করুন: