নামি-দামি ব্র্যান্ডের নামে নকল ওষুধ দেশব্যাপী ছড়িয়ে দিতোঃ ডিবি
জন্ম নিরোধক আই-পিল, যৌন উত্তেজক কস্তুরি, ব্যাথানাশক মুভ, বেটনোভেট এন ক্রিম ও ওমিপ্রাজলের মতো অতিপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ এসব ওষুধ নকল তৈরি করে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই ছড়িয়ে দিতো একটি চক্র। অল্প পুঁজিতে বেশি লাভের আশায় এমন সব নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিতো তারা। এতে অসুস্থ মানুষ সুস্থ হওয়া তো দূরের কথা উল্টো আরও অসুস্থ হয়ে পড়তো রোগীরা।
অসাধু এই চক্রের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন গোয়েন্দা অনুসন্ধান চালিয়ে তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি টিম। সেই সংগে জব্দ করা হয়েছে বিপুল পরিমানের প্রস্তুতকৃত নকল ওষুধ।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকার বিভিন্ন ওষুধের দোকানে অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে ডিবি। রবিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিবি’র যুগ্ম কমিশনার (এ্যাডমিন এন্ড ডিবি-দক্ষিণ) মো. মাহবুব আলম।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ফয়সাল আহমেদ, সুমন চন্দ্র মল্লিক ও মো. লিটন গাজী।
শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১) ঢাকার কোতয়ালি থানার মিটফোর্ড এলাকার বিভিন্ন ওষুধের দোকানে অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এই সময় ১০০ পিস i-pill, ১৬০ পিস Super Gold Kosturi, ৩০০০ পিস NAPROXEN PLUS-500+20mg, ৩৫০ পিস BETNOVATE-C, 20mg, ১০০০ পিস Protobit-20mg, ১১৫ বক্স ENO, ৪০০ পিস SANAGRA-100, ১৫০০ পিস Periactin, ও ক্রীম: ১১০টি MOOV, ৩০টি Ring Guard, ৫০০ কৌটা Whitfield, ২৫০টি NIX Rubbing Balm, ৩০০টি Vix Cold Plus, ২০ কৌটা vaporub ও গ্যাকোজিমা ৪২০ কৌটা উদ্ধার করা হয়।
ডিবি’র যুগ্ম পুলিশ কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রাজধানীর মিটফোর্ডের পাইকারী ওষুধ মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে নিষিদ্ধ ও জীবন রক্ষাকারী দেশী-বিদেশী ব্র্যান্ডের নকল ওষুধ ও ক্রিম বিক্রি করছে মর্মে তথ্য পায় গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগ। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ঔষধ অধিদফতরের সহায়তায় মিটফোর্ডের সুরেশ্বরী মেডিসিন প্লাজার নিচতলার মেডিসিন ওয়ার্ল্ড ও অলোকনাথ ড্রাগ হাউস এবং হাজী রানি মেডিসিন মার্কেটের নিচতলায় রাফসান ফার্মেসীতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।
তিনি বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ড মার্কেটটি ওষুধের পাইকারী বাজার হওয়ায় নকল ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী চক্র দেশব্যাপী নকল ওষুধ ছড়িয়ে দিতে মিটফোর্ড ওষুধ মার্কেটকে 'ক্যামোফ্লাজ' হিসেবে ব্যবহার করে আসছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা অধিক লাভের আশায় এসব দেশি ও বিদেশি নামিদামি ব্র্যান্ডের ওষুধ ও ক্রীম তাদের সহযোগীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে মিটফোর্ড এলাকায় বাজারজাত করে আসছিলো।
তিনি বলেন, নকল ওষুধ প্রতিরোধে জনগনকে সচেতন হতে হবে। ওষুধ কেনার আগে সেটি রেজিস্টার্ড কিনা তা দেখতে হবে। নকল ওষুধ উৎপাদন, মজুদ ও বাজারজাতকারীদের শনাক্ত করে তাদেরকে গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান ডিবি’র এই কর্মকর্তা।
বিভি/এসএইচ/এএএন
মন্তব্য করুন: