• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

ডিবি-র‍্যাব সেজে ডাকাতি, অপহরণের পর আদায় করতো মুক্তিপণ

প্রকাশিত: ১৬:০৫, ২৭ অক্টোবর ২০২১

আপডেট: ১৬:১৩, ২৭ অক্টোবর ২০২১

ফন্ট সাইজ
ডিবি-র‍্যাব সেজে ডাকাতি, অপহরণের পর আদায় করতো মুক্তিপণ

তারা কখনও র‍্যাব সেজে আবার কখনও গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সেজে টার্গেটকৃত ব্যক্তিকে অপহরণ ও জিম্মি করে সর্বস্ব লুটে নিতো। দীর্ঘদিন ধরে তাদের এমন কার্যক্রম চললেও অবশেষে আসল গোয়েন্দা পুলিশের জালে ধরা পড়লো ভুয়া- র‍্যাব পুলিশ পরিচয় দিয়ে ডাকাতি করা একটি চক্রের ৯ সদস্য। 

বুধবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের গুলশান বিভাগ। এই দিন দুপুর ১২টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত রাজধানীর মতিঝিল এবং মোহাম্মদপুরে অভিযান পরিচালনা করে ডিবি। অভিযানে গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি মাইক্রোবাস, একটি প্রাইভেট কার, একটি ডামি পিস্তল, একটি ওয়ারলেস সেট, একজোড়া হ্যান্ডকাফ, দুইটি ডিবি জ্যাকেট এবং ৫০০০ পিস ইয়াবা।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. ইমদাদুল শরীফ, মো. খোকন মিয়া, মো. মাসুদুর রহমান তুহিন, মামুন সিকদার, মো. কামাল হোসেন, ওয়াহিদুল ইসলাম, মো. ফারুক বেপারী ও মো. মতিউর রহমান।

এই বিষয়ে অভিযান ডিবি’র গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. মশিউর রহমান বলেন, করোনা ভাইরাসের তীব্রতা কমে যাওয়ায় যখন জনজীবন স্বাভাবিক হয়ে এসেছে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য। তখন বেশ কয়েকটা গ্রুপ ঢাকা মহানগরী এবং আশেপাশের এলাকায় প্রায়শই প্রাইভেটকার-মাইক্রোবাস যোগে কখনো ভুয়া র‍্যাব, কখনো ভুয়া ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে ব্যাংকে টাকা জমা দিতে যাওয়া অথবা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলনকারী ব্যক্তিদেরকে প্রকাশ্য রাজপথ থেকে তুলে মাইক্রো বাসে তুলে নেয়। তুলে নেওয়া ব্যক্তিকে কখনো সাভার-আশুলিয়া, কখনো বেড়িবাঁধ, কখনো পূর্বাঞ্চল গ্রামীন এক্সপ্রেস রাস্তা হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে নিয়ে গিয়ে ব্যাপক মারধর করে নগদ টাকা এবং নগদ টাকা কম থাকলে ডেবিট ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো।

তিনি আরও বলেন, ট্রমাটাইজড এই সব ভিকটিমদের অধিকাংশই জীবন রক্ষা পাওয়ায় সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করে চিকিৎসা নিতে থাকে এবং কোনো মামলা করে না। সে কারণে অপরাধীদের এবং তাদের সংঘটিত অপরাধ সম্পর্কে অনেক সময় অজ্ঞাত থাকে শৃঙ্খলারক্ষা বাহিনী।

ডিবি ডিসি মশিউর রহমান বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা পুলিশ নিশ্চিত হয় যে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভুয়া বেশ ধারণ করে এই ডাকাত চক্রটি মতিঝিল এলাকায় ডাকাতি ছিনতাই কাজে লিপ্ত হবে। এই তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশের একাধিক টিম বলাকা চত্বর, ইউনুস সেন্টারের আশেপাশের একাধিক ব্যাংকের কাছাকাছি অবস্থান নেয়। একটা পর্যায়ে এই চক্রটি মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারে করে অপরাধ সংঘঠনের জন্য ইউনুস সেন্টারের কাছে আসে এবং সম্ভাব্য ভিকটিমকে টার্গেট করে খুঁজতে থাকে। এই সময় ডিবি পুলিশের দলগুলো এগিয়ে আসতে গেলে ডাকাতদল দ্রুত গাড়িতে উঠে দরজা খোলা রেখেই পালিয়ে যেতে চেষ্টাকালে উপস্থিত জনতার সহায়তায় ডিবি পুলিশ তাদেরকে হাতেনাতে ধরে ফেলে।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত মামুনকে নিয়ে তার মোহাম্মদপুরস্থ বাসায় অভিযান চালালে ডিবি’র একটি জ্যাকেট, পুলিশ লেখা মাস্ক এবং পাঁচ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে। গ্রেফতারকৃতদের সবার নামেই ঢাকা মহানগরী এবং দেশের একাধিক জায়গায় ছিনতাই, ডাকাতি, গণধর্ষণ, অস্ত্র এবং মাদক আইনে মামলা আছে। 

 

বিভি/এসএইচ/রিসি 

মন্তব্য করুন: