• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সিজিএ কর্মকর্তা ফাঁস করতো প্রশ্নপত্র, গ্রেফতার ১০

প্রকাশিত: ১৫:১১, ২২ জানুয়ারি ২০২২

আপডেট: ১৫:১১, ২২ জানুয়ারি ২০২২

ফন্ট সাইজ
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও সিজিএ কর্মকর্তা ফাঁস করতো প্রশ্নপত্র, গ্রেফতার ১০

বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করার পেছনের মূলহোতা হিসেবে কাজ করতো বগুড়ার ধ্রুপচাঁচিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরীন রুপা ও হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় (সিজিএ) অফিসের বরখাস্তকৃত সরকারি কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান আজাদ। তারা ফাঁসকৃত প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র টার্গেটকৃত ব্যক্তিদের কাছে গোপনে সরবরাহ করতো।

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা গুলশান বিভাগের একটি টিম দুপুর ৩টা থেকে রাত আনুমানিক ১০ পর্যন্ত ধারাবাহিক অভিযানে রাজধানীর মিরপুর, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল ও কাকরাইল এলাকা থেকে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত দশ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রুপা ও আজাদ মূল হোতা বলে নিশ্চিত হয় গোয়েন্দা পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত অপর আটজন  হলেন- নোমান সিদ্দিকী, আল আমিন রনি, নাহিদ হাসান, শহীদ উল্লাহ, তানজির আহমেদ, রাজু আহমেদ, হাসিবুল হাসান ও রাকিবুল হাসান।  

এই সময় তাদের কাছ থেকে ইয়ার ডিভাইস ছয়টি, মাস্টার কার্ড মোবাইল সিম হোল্ডার ছয়টি ব্যাংকের চেক পাঁচটি, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প সাতটি, স্মার্ট ফোন ১০টি, বাটন মোবাইল ছয়টি, প্রবেশপত্র ১৮টি ও চলমান পরীক্ষার ফাঁস হওয়া প্রশ্নপত্র তিন সেট জব্দ করা হয়।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে ডিএমপি’র মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। 

তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ গতকাল দুপুরে কাকরাইলের নিউ শাহিন হোটেল থেকে অসাধু উপায় অবলম্বনকারী দুই জন পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, কাফরুল সেনপাড়া পর্বতা এলাকার একটি অ্যাপার্টমেন্ট থেকে ডিভাইস, প্রশ্নপত্র ও উত্তর পত্রের খসড়াসহ আরও চার জনকে গ্রেফতার করা হয়। এই সময় ডিবি পুলিশের অপর দল বিজিপ্রেস উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে অভিযান চালিয়ে পরীক্ষার্থী এবং অন্যতম পরিকল্পনাকারী মাহবুবা নাসরীন রূপাকে টাকা, ডিজিটাল ডিভাইসসহ গ্রেফতার করা হয়। পরে রুমার দেওয়া তথ্যমতে অপর সিজিএ থেকে বহিষ্কৃত কর্মকর্তা আজাদসহ আরও তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, গতকাল প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ৫৫০টি অডিটর পদে নিয়োগের জন্য দুপুর ৩টা থেকে বিকাল শোয়া ৪টা পর্যন্ত ৭০ নাম্বারের এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আামাদের কাছে তথ্য ছিলো এর আগেও বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হওয়া কয়েকজন ইলেকট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল অ্যাপস এবং ব্যক্তি পরিবর্তন করে পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস, উত্তর সমাধান করে সরবরাহ করতে পারে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।

তিনি বলেন, গ্রেফতারবকৃতদের মধ্যে মাহমুদুল হাসান আজাদ, নাহিদ হাসান, আল আমিন সিদ্দিকী আগেও প্রশ্নপত্র ফাঁস করে ২০১৩, ২০১৬ এবং ২০১৯-এ গ্রেফতার হয়েছিলেন। তারা অন্যান্য আসামিদের যোগসাজশে বিভিন্ন সোশ্যাল অ্যাপস ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার করে পরীক্ষা হল থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে দেওয়া, বাইরের রুমে ওয়ানস্টপ সমাধান কেন্দ্র বসিয়ে স্মার্ট ওয়াচ, এয়ার ডিভাইস, মোবাইল এসএমএস এর মাধ্যমে উত্তর সরবরাহ করার কাজ করতো। 

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতারকৃতরা এর আগেও বিভিন্ন ব্যাংকসহ সরকারি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস এবং উত্তরপত্র সরবরাহ করে বিপুল পরিমাণ টাকা বিভিন্ন ব্যাংক, বিকাশের মাধ্যমে এবং নগদে হাতিয়ে নিয়েছিলো। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।

 

বিভি/এসএইচ/রিসি

মন্তব্য করুন: