নিরাপত্তা বাহিনী সেজে ভয়াবহ ফাঁদ!
প্রথমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলাপচারিতার মাধ্যমে সখ্যতা গড়ে তোলা। এরপর সুযোগ বুঝে ডেটিংয়ের জন্য নির্ধারিত স্থানে নিয়ে আসা। এই সুযোগেই ভুক্তভোগী নারী-পুরুষদের জোরপূর্বক যৌন নির্যাতন এবং আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করতো। এমনই একটি চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
রবিবার (২৩ জানুয়ারি) বিকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, ২২ জানুয়ারি রাতে ও আজ সকালে রাজধানীর ফার্মেগট ও মহাখালী এলাকায় র্যাব-১ ও র্যাব-২ যৌথ অভিযান চালিয়ে আপত্তিকর ভিডিও করে ব্ল্যাকমেইলে করে অর্থ আদায়কারী একটি চক্রের মূল হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- চক্রের মূলহোতা ফুয়াদ আমিন ইশতিয়াক ওরফে সানি (২১), সাইমা শিকদার নিরা ওরফে আরজে নিরা (২৩) এবং আব্দুল্যাহ আফিফ সাদমান ওরফে রিশু (১৯)। তাদেরকে গ্রেফতারকালে ভূয়া পিস্তল ও অবৈধ ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়েছে।
কমান্ডার আল মঈন বলেন, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্র। গ্রেফতারকৃত ইশতিয়াক এই চক্রের মূলহোতা এবং গ্রেফতারকৃত আরজে নীরা ও গ্রেফতারকৃত অন্য সদস্য সাদমান আফিফ রিশু তার অন্যতম সহযোগী। গ্রেফতারকৃতরা বিগত প্রায় দুই বছর ধরে নানাবিধ কৌশলে জিম্মি, ব্লাকমেইল ও প্রতারণা করে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার নারী-পুরুষদের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, তারা মূলতঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন জনের সংগে সখ্যতা গড়ে তোলে। অতঃপর কৌশলে বিভিন্ন সময়ের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ভিকটিমদের হেনস্থা ও ব্ল্যাকমেইল করে থাকে। এসব অপকর্মের জন্য তাদের ভাড়াকৃত বাসা ব্যবহার করতো। যেখানে জোরপূর্বক আপত্তিকর ভিডিওগুলো ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হতো। এছাড়া অনলাইনেও ভিকটিমদের ফাঁদে ফেলতো তারা। গ্রেফতারকৃতরা নিজেদেরকে ভূয়া সেনা কর্মকর্তা ও পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিতো।
তিনি আরও বলেন, গত ১০ জানুয়ারি রাজধানীর ভাটারা একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছের একটি রেস্টুরেন্টের সামনে গ্রেফতারকৃত রিশু’র সংগে ট্রান্সজেন্ডার নারী বিউটি ব্লগারের সাক্ষাত হয়। এসময় সারপ্রাইজ দেওয়ার কথা বলে কৌশলে তাকে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় গ্রেফতারকৃত ইশতিয়াকের ভাড়াকৃত বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে ইশতিয়াক, নিরা ও রিশু জোরপূর্বক বিউটিকে মারধর, শ্লীলতাহানী ও যৌন নিপীড়ন করার পাশাপাশি ভিডিও ধারণ করে। এসময় তারা বিউটি’র সংগে থাকা মোবাইল ফোন, স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং এক লাখ টাকা দাবি করে।
বিভি/এসএইচ/এএন
মন্তব্য করুন: