• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

প্রশ্নফাঁসের ‘হোতা’, কে এই আওয়ামী লীগ নেত্রী রুপা?

প্রকাশিত: ২১:২৭, ২৩ জানুয়ারি ২০২২

আপডেট: ২১:২৮, ২৩ জানুয়ারি ২০২২

ফন্ট সাইজ
প্রশ্নফাঁসের ‘হোতা’, কে এই আওয়ামী লীগ নেত্রী রুপা?

প্রশ্নফাঁস চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন দুপচাঁচিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহবুবা নাসরিন রুপা। গ্রেফতারের পরই তাঁর পরিচয় নিয়ে মানুষের মনে আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা গেছে, দুপচাঁচিয়া উপজেলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার ভূঁইপুর গ্রামের মৃত আতাউর রহমানের মেয়ে মাহবুবা নাসরিন রুপা। তাঁর বাবা ঢাকায় বেসরকারি অফিসে নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরি করতেন। এসময় ঢাকায় মাধ্যমিক ও কলেজে পড়াশোনা করেন। পরে ইডেন মহিলা কলেজে ভর্তি হন। সম্পৃক্ত হন ছাত্রলীগের রাজনীতিতে। প্রথমে কলেজ ছাত্রলীগের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন কলেজের প্রভাবশালী নেত্রী।

মাহবুবা নাসরিন রুপা এক পর্যায়ে ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্বও পালন করেন। অভিযোগ রয়েছে, এই সময় হলের সিট-বাণিজ্য ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর করতেন তিনি।

২০১৭ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় নিজ এলাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ২০১৮’র জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে হঠাৎ করেই দুপচাঁচিয়ায় ১৪ দল মনোনীত জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য প্রার্থীর পক্ষে গণসংযোগে নামেন। ২০১৯-এর মার্চে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে সংরক্ষিত আসনে প্রার্থী হওয়ার পর এলাকায় তাঁর পরিচিতি প্রকাশ পায়। 
 
ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পরিচয়ে তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের আশীর্বাদ নিয়ে নির্বাচনে নামেন। শেষ পর্যন্ত উপজেলা পরিষদে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। শপথ গ্রহণের পর উপজেলা পরিষদের প্রথম বৈঠকেই আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের ইশারায় উপজেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। রুপা ভূঁইপুর গ্রামে না থেকে তাঁর বড় চাচা দেলোয়ার হোসেনের গোবিন্দপুরের পালিমহেশপুর গ্রামে থাকতেন। এখানে থেকেই আপন ভাই রকিবুল হাসান রকিকে সংগে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালাতেন রুপা।

এরপর পর্যায়ক্রমে উপজেলা আওয়ামী লীগে নিজের প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির এবং দুপচাঁচিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য হন।

রবিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আল রাজি জুয়েল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে দলের সব পদ থেকে রুপাকে বহিস্কার করা হয়েছে। 

গ্রেপ্তারের পর ডিবি’র অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, মাহবুবা নাসরিন প্রশ্নফাঁস চক্রের অন্যতম হোতা। নিয়োগের কথা বলে চাকরিপ্রার্থী সংগ্রহ করতেন তিনিসহ কয়েকজন।

তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা মহাহিসাব নিরীক্ষকের কার্যালয়ের অধীন ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের ৫৫০টি অডিটর পদে নিয়োগের জন্য শুক্রবার ৭০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ডিবি’র গুলশান বিভাগ তথ্য পায়-চক্রের সদস্যরাই পরীক্ষার্থী সেজে কেন্দ্রে ডিজিটাল ডিভাইস নিয়ে যায়। প্রশ্নপত্র পাওয়ার সংগে সংগে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তারা ডিভাইসের মাধ্যমে চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। বাইরে থেকে তারা প্রশ্নের সমাধান পাঠায় কেন্দ্রে। চাকরি প্রার্থীদের এভাবেই পাস করাতো এই চক্র। এজন্য প্রতি চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে ১৬ লাখ টাকা করে নেওয়া হতো। অগ্রিম নেওয়া হতো দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত।

বিভি/এনএম/রিসি 

মন্তব্য করুন: