• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ: ৬ আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

প্রকাশিত: ১৮:৫৬, ৯ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ১৯:২১, ৯ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
বাসে ডাকাতি-ধর্ষণ: ৬ আসামির ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

কুষ্টিয়া থেকে ছেড়ে আসা ঈগল পরিবহনের বাসে টাঙ্গাইলে ডাকাতি ও ধর্ষণের মামলায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ ১০ আসামিকে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হয়। মঙ্গলবার বিকালে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারজানা হাসানাত ৬ আসামিকে ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপরদিকে পৃথক পৃথকভাবে অন্য ৪ আসামি ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা হাসানাতের কাছে আসামি মো. আসলাম, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বাদল কুমার চন্দ্রের কাছে আসামি রাসেল তালুকদার, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমানের কাছে আসামি মো. আলাউদ্দিন ও সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আকরামুল ইসলামের কাছে আসামি মো. নাঈম সরকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে আদালতের বিচারকগণ জবানবন্দি লিপিবদ্ধ শেষে আসামিদের জেল হাজতে প্রেরণ করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের (উত্তর) অফিসার ইনচার্জ মো. হেলাল উদ্দিন জানান, বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলায় ঢাকা, গাজীপুর ও সিরাজগঞ্জ এলাকা থেকে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সোমবার ৭ আগস্ট রাতে টাঙ্গাইল ডিবি পুলিশের কাছে আসামিদের হস্তান্তর করে র‌্যাব সদস্যরা। পরে মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) বিকালে ১০জন আসামিকে টাঙ্গাইল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আনা হলে মূল পরিকল্পনাকারীসহ ৬ জনের ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। 

অন্য চার জন এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে পৃথক ভাবে চারজন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

রিমান্ডে নেওয়া ৬ আসামিরা হলেন- মূল পরিকল্পনাকারী টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মজিবুর রহমানের ছেলে মো. রতন হোসেন (২১), জামালপুর জেলার মেলান্দহ এলাকার শামসুল মন্ডলের ছেলে মো. সোহাগ মন্ডল (২০), জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি এলাকার মো. সোলায়মান খন্দকারের ছেলে খন্দকার মো: হাসমত আলী দিপু (২৩), ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকার মো. জামির হোসেনের ছেলে মো. বাবু হোসেন জুলহাস (২১), নীলফামারী সদর থানার মৃত জাবেদের ছেলে মো. জীবন প্রামাণিক (২১) ও খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা এলাকার মো. খলিলের ছেলে মো. আব্দুল মান্নান (২২)।

স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ৪ আসামি হলো- ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর এলাকার মো. সাদেক মিয়ার ছেলে মো. আলাউদ্দিন (২৪), গাজীপুর জেলার কাশেমপুর এলাকার মো. মমিন সরকারের ছেলে মো. নাঈম তালুকদার (১৯), সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ এলাকার মো. আবুল তালুকদারের ছেলে রাসেল তালুকদার (৩২) এবং সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ এলাকার মৃত আবুল তালুকদারের ছেলে মো. আসলাম তালুকদার রায়হান।

এর আগে এ মামলায় রাজা মিয়া (৩২), আব্দুল আওয়াল (৩০) ও নুরনবী (২৬) কে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতে তারা এ ঘটনায় জড়িত থাকা মর্মে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

এ নিয়ে এ মামলায় মোট ১৩ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে ৭ আসামি আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন।

উল্লেখ্য, গত ২ আগস্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস নারায়নগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখান থেকে যাত্রা শুরুর পর তিন দফায় যাত্রীবেশী কয়েক জন ডাকাত বাসে ওঠে। বাসটি টাঙ্গাইল অতিক্রম করার পর ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে বাসটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। তারা যাত্রীদের হাত, পা, চোখ বেঁধে তাদের সব মালামাল লুট করে নেয়। এ সময় বাসে থাকা এক নারী যাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হন। ডাকাতরা বাসটি টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের দিকে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাসটি মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া নামক স্থানে রাস্তার খাদে নামিয়ে দেয় তারা। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা যাত্রীদের উদ্ধার করে। পরে পুলিশ এলে যাত্রীরা ডাকাতি ও নির্যাতনের বিষয়টি জানান। ওই বাসের যাত্রী হেকমত মিয়া বাদী হয়ে ৩ আগস্ট মধুপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন: