• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ফরিদপুর চিনিকলে চোর ধরে মারধরের শিকার প্রহরী

হারুন আনসারী

প্রকাশিত: ১৭:৫০, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
ফরিদপুর চিনিকলে চোর ধরে মারধরের শিকার প্রহরী

খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও মালামাল সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট ও বেহাত হয়ে যাচ্ছে

১৯৭৪ সালে ফরিদপুরর মধুখালীতে ১৩০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠা করা হয় ফরিদপুর চিনিকল। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির লোকসানের পরিমাণ ৬৫৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকারও বেশি। ভালো জাতের আখের অভাব, শুধু চিনি উৎপাদনে নির্ভরশীলতা এবং শ্রমিক-কর্মচারীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় লাভের মুখ দেখছে না প্রতিষ্ঠানটি। এ অবস্থায় খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও মালামাল সংরক্ষণের অভাবে নষ্ট ও বেহাত হয়ে যাচ্ছে। সংঘবদ্ধ চক্র এসব চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছৈ।


সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে মিল গেট থেকে তল্লাশী চালিয়ে একটি ট্রাকের টুলবক্স থেকে উদ্ধার হয় মূল্যবান যন্ত্রাংশ। হাতেনাতে ওই যন্ত্রাংশ উদ্ধারের পর জড়িতদের শাস্তির পরিবর্তে মারধর করা হয়েছে নিরাপত্তা রক্ষীকে। এনিয়ে সাধারণ শ্রমিক ও নিরাপত্তা রক্ষীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ রয়েছে। দিনের পর দিন একটি চক্র এভাবে যন্ত্রাংশ খুলে খুলে চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বলে তারা অভিযোগ করেন নিরাপত্তা রক্ষী আঃ রহমান।


 ফরিদপুর চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মোঃ আব্বাস আলী অভিযোগ করেন, উদ্ধার হওয়া ফুয়েল পাম্প নামে ওই যন্ত্রাংশ ঘষে রঙ তোলার নমুনা মিললেও ঘটনা ধামাচাপা দিতে উদোড় পিন্ডি বুদোড় ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা চলছে।

তবে এব্যাপারে জানতে চাইলে পরিবহন প্রকৌশল বিভাগের ব্যবস্থাপক মন্তব্য করতে রাজি হননি একেএম কামরুল হাসান। তিনি উল্টো অভিযোগকারীদেরই দায়ি করেন।

দুর্নীতিবাজদের কারণে এই মিলটিও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। সাধারণ শ্রমিকেরা চুরির সাথে জড়িতদের উপযুক্ত বিচার দাবি করেছেন। 

বর্তমানে মিলটিতে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শ্রমিক মিলে কর্মরত রয়েছে ৫৭০ জন। আখ মাড়াই মৌসুমে পর্যাপ্ত আখের সরবরাহ না থাকায় মৌসুমের বড় একটা সময় উৎপাদন বন্ধ থাকে। অথচ বাজারজাতকরণ, বিতরণ, যন্ত্রাংশ মেরামত, লেনদেন ও ব্যবস্থাপনার কাজ চলে সারা বছর জুড়েই। আগামী ২৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে নতুন আখ মাড়াই মৌসুম। গত বছর মাত্র মাসখানেক চললেও এবছর চারমাসই মাড়াই মাস চালুর আশা করা হচ্ছে। পর্যাপ্ত আখের সরবরাহ রয়েছে জানিয়ে মিল কৃর্তপক্ষ বলছে এবার তারা লাভের মুখ দেখবেন। 

 মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ খবির উদ্দিন মোল্লা বলেন, মিলটি স্থগিতের তালিকায় ছিলো। সদর দপ্তর পাঁচ বছরের রোড ম্যাপ দিয়েছে। সেটি বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। চুরি রোধেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বছরের পর বছর লোকসানের কারণে ২০২০ সালে বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও পরে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশন পাঁচ বছরের রোডম্যাপ গ্রহণ করে সচল রাখে ফরিদপুর চিনিকল। এবছর আখ মাড়াই মৌসুমে মিলটি লাভের মুখ দেখবে বলে আশা করা হচ্ছে। 

 শুধুমাত্র চিনি উৎপাদনে সীমাবদ্ধ না থেকে মিলটিকে আধুনিকায়ন ও পণ্য বহুমুখীকরণ উদ্যোগ গ্রহণ করে জেলার একমাত্র এই ভারি শিল্প প্রতিষ্ঠানটিকে লাভজনক হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিবে এমনটিই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
 

মন্তব্য করুন: