• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইউনিয়ন ব্যাংকের ভল্টে ১৯ কোটি টাকার গরমিল

প্রকাশিত: ১০:২৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

আপডেট: ১১:১৬, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১

ফন্ট সাইজ
ইউনিয়ন ব্যাংকের ভল্টে ১৯ কোটি টাকার গরমিল

সংগৃহীত ছবি

বেসরকারি খাতের ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় সংলগ্ন গুলশান শাখার ভল্ট থেকে ১৯ কোটি টাকা উধাও হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পরিদর্শক দল গত সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকটির শাখায় গিয়ে এমন তথ্য উদ্ঘাটন করেছে।

জানা গেছে, কাগজে-কলমে শাখার ভল্টে ৩১ কোটি টাকা দেখানো হলেও প্রকৃত পক্ষে ছিলো ১২ কোটি টাকা। বাকি ১৯ কোটি টাকার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো জবাব দিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। 

এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এখন ব্যাংকটির সব শাখার ভল্ট পরিদর্শন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ভয়াবহ অনিয়মের এমন তথ্য উদ্ঘাটনের পরও শাখার কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি। গুলশান থানায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ নিয়ে কোনো অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।

জানা গেছে, গত সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং পরিদর্শন বিভাগ-৭-এর এক যুগ্ম পরিচালকের নেতৃত্বে একটি দল ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখা পরিদর্শনে যায়। সকাল ১০টার আগেই তারা শাখায় গিয়ে উপস্থিত হন। প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী শুরুতেই তারা ভল্ট পরিদর্শন করেন। কাগজে-কলমে শাখার ভল্টে ৩১ কোটি টাকা দেখানো হলেও পরিদর্শক দল সেখানে ১২ কোটি টাকা পাb। তাৎক্ষণিকভাবে এর কোনো জবাব দিতে পারেননি শাখার কর্মকর্তারা। এরপর বিষয়টি ধামাচাপা দিতে নানা তৎপরতা শুরু করে শাখা কর্তৃপক্ষ। শাখা ব্যবস্থাপকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। একপর্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি পক্ষও এ ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ার পক্ষে অবস্থান নেয়। তবে শেষ পর্যন্ত ব্যাংকটির ব্যাখ্যা তলবের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সংশ্নিষ্টরা জানান, প্রতিদিন লেনদেনের শেষ ও শুরুতে ভল্টের হিসাব মিলিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব শাখা ব্যবস্থাপক, সেকেন্ড অফিসার এবং ক্যাশ ইনচার্জের। ভল্টে টাকার হিসাবে কোনো গরমিল হলে তা মিলিয়ে নেওয়ার দায়িত্ব এসব কর্মকর্তার। অনেক সময় হিসাবের ভুলে সামান্য টাকার গরমিল হতে পারে। তবে বিপুল অঙ্কের টাকার গরমিল হলে তা ফৌজদারি অপরাধ। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে পুলিশে সোপর্দ করতে হবে। তবে এই ঘটনায় থানায় কোনো সাধারণ ডায়েরিও করেনি ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকেও এ বিষয়ে থানায় কোনো অভিযোগ দেওয়া হয়নি। উল্টো গত মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার তৎপরতা চলে। এছাড়া পরিদর্শনে গিয়ে যারা এই তথ্য উদ্ঘাটন করেছেন, তাদের চাপে রাখা হয়। সাধারণভাবে কোনো শাখার পরিদর্শনে গিয়ে ভল্টে এরকম গরমিল পাওয়া যায় না।

এ বিষয়ে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবিএম মোকাম্মেল হক চৌধুরীকে বারবার টেলিফোন ও এসএমএস করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, ইউনিয়ন ব্যাংকের গুলশান শাখার ভল্ট পরিদর্শনে গিয়ে পরিদর্শকরা টাকার গরমিল পাওয়া গেছে বলে শুনেছি। বিষয়টি নিয়ে ব্যাংকের ব্যাখ্যা তলব করবো। যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা না পেলে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিভি/এইচএস/এসডি

মন্তব্য করুন: