শুধু ট্রেজারি প্রধান না, ব্যাংকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে: সালেহউদ্দিন (ভিডিও)
ছয়টি ব্যাংকের ট্রেজারি প্রধানকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কঠিন হলেও এমন পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিলো বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ।
এর আগে সোমবার প্রয়োজনের অতিরিক্ত ডলার সংরক্ষণের প্রমাণ পাওয়ায় দেশের পাঁচটি ও একটি বিদেশি ব্যাংকের ফরেন এক্সচেঞ্জে বিভাগের প্রধানদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) বাংলাভিশনকে দেওয়া স্বাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সম্প্রতি বৈদেশিক মুদ্রাবাজারের বাংলাদেশের টাকার মান অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। এর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক কতগুলো পদক্ষেপ নিচ্ছে। এখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপের সঙ্গে ব্যাংকগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে। টাকার অবমূল্যায়ন যাতে না হয়। এ ক্ষেত্রে যারা ফরেন এক্সচেঞ্জ নিয়ে কাজ করেন তাদের কয়েকজন ব্যক্তিকে ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট থেকে অপসারণের নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এটা নিঃসন্দেহে একটি কঠিন পদক্ষেপ; কিন্তু আমার মনে হয় এটার প্রয়োজন ছিলো। কারণ ব্যাংকগুলোর যারা দায়িত্বশীল কর্মকর্তা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
ছয়জনকে বরখাস্ত করাই যথেষ্ঠ নয় জানিয়ে সাবেক এই গভর্নর আরও বলেন, এটাই যথেষ্ঠ না; কারণ অনেক সময় দেখা যায়, উপরের নির্দেশে বিশেষ করে পরিচালকদের নির্দেশে বা ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নির্দেশে বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে তারা (ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তা) মুনাফা করার জন্য এগুলো করে থাকেন। শুধু ফরেন এক্সচেঞ্জের বেলায় না, অন্যান্য ক্ষেত্রেও তারা এটা করে থাকেন। অতএব সেখানে ব্যাংকগুলোর পর্ষদেরও দায়বদ্ধ, দায়িত্বশীলতার জায়গা রয়েছে। এ জন্য আমি মনে করি, ব্যাংক ম্যানেজম্যান্ট, ব্যবস্থাপনা এবং পরিচালক তাদের ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। সার্বিকভাবে ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। না হলে, এই সমস্যার সমাধান হবে না। পূর্বে দেখা গেছে, কোনো কোনো ব্যাংকের এমডিকে দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। এটা ব্যাংকগুলোকে একটা কঠোর বার্তা দিবে। আমার মনে হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এটা মনিটরিং করবে।
সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেসব ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানদের অপসারণের নির্দেশনা দিয়েছেন তারা হলো
দেশি পাঁচ ব্যাংক হচ্ছে- ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, প্রাইম ও সাউথইস্ট ব্যাংক। আর বিদেশি ব্যাংকটি হচ্ছে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
মঙ্গলাবার খোলাবাজার বা কার্ব মার্কেটে ডলারের দাম ১১৫ টাকা ৬০ পয়সা পর্যন্ত উঠে যায়।
ব্যাংকগুলো নগদ ডলারও বেশি দামে বিক্রি করেছে। সিটি ব্যাংক ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। ইস্টার্ন ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৬ টাকা ৫০ পয়সা দরে। অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত রূপালী ব্যাংক সোমবার ১০৭ টাকা ৫০ পয়সা দরে ডলার বিক্রি করেছে। অগ্রণী ব্যাংক বিক্রি করেছে ১০৪ টাকায়। জনতা ব্যাংক থেকে নগদ ডলার কিনতে লেগেছে ১০৩ টাকা। আর সোনালী ব্যাংক নিয়েছে ১০২ টাকা।
বিভি/এইচএস
মন্তব্য করুন: