৬ দিনের অচলাবস্থার পর আজ সরকারি প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা শুরু
ছবি: সংগৃহীত
টানা ৬ দিনের অচলাবস্থার পর আজ থেকে দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শুরু হচ্ছে বার্ষিক পরীক্ষা। ৩ দফা দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের চলমান আন্দোলন, বদলি আদেশ ও ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যেও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনায় পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত এসেছে শিক্ষক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে।
গত বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ এবং বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি এড়াতে তালাবদ্ধ কর্মসূচি সাময়িকভাবে স্থগিত রাখা হয়েছে। সংগঠন দুটির নেতাদের ভাষ্য, পরীক্ষা শুরু হওয়া পর্যন্ত এবং পরীক্ষা চলাকালীন কোনো বিদ্যালয়ে শাটডাউন কর্মসূচি কার্যকর থাকবে না।
প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের অন্যতম আহ্বায়ক মো. মাহবুবর রহমান গণমাধ্যমকে, শিক্ষার্থীদের কথা ভেবেই এ সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আমাদেরই সন্তান। তাদের ক্ষতি আমরা চাই না। দুই দিন পিছিয়ে গেছে, কিন্তু এতে শিক্ষাজীবন অচল হবে না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের আন্দোলন চলমান থাকলেও পরীক্ষাকে সম্পূর্ণভাবে আওতামুক্ত রাখা হচ্ছে।
এদিকে এরইমধ্যে ৪২ জন আন্দোলনকারী সহকারী শিক্ষককে ভিন্ন জেলায় বদলি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। বদলির তালিকায় আন্দোলনের পাঁচ শীর্ষ নেতা—খায়রুন নাহার লিপি, মো. শামছুদ্দীন মাসুদ, মো. আবুল কাশেম, মো. মাহবুবর রহমান ও মো. মনিরুজ্জামানও রয়েছেন। ফলে কেউই নিজ জেলায় থাকার সুযোগ পাচ্ছেন না।
সংগঠনটির নেতারা জানিয়েছেন, ১০ম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে, তবে পরীক্ষার সময় কোনো কর্মসূচি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করা হবে না।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) সূত্রে জানা গেছে, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এখানে ৩ লাখ ৮৪ হাজারের বেশি শিক্ষক কর্মরত। প্রধান শিক্ষকরা ইতোমধ্যে ১০ম গ্রেডে বেতনভুক্ত হলেও সহকারী শিক্ষকরা এখনো ১৩তম গ্রেডে আছেন। গ্রেড উন্নীতকরণ, উচ্চতর গ্রেড সমস্যা সমাধানসহ কয়েকটি দাবি তারা দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসছেন।
এর আগেও গত ৮-১২ নভেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষকরা। ওই সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দেড় শতাধিক শিক্ষক আহত হন। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের আশ্বাসে শিক্ষকরা কর্মস্থলে ফিরে গেলেও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অগ্রগতি না হওয়ায় তারা আবার কর্মবিরতিতে ফিরেছিলেন।
প্রসঙ্গত, আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া প্রাথমিকের বার্ষিক পরীক্ষা গত ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিলো।
বিভি/এআই




মন্তব্য করুন: