• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

কুবি’র সিনিয়র ছাত্রলীগ নেত্রীকে পেটালেন জুনিয়র নেত্রী

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২২:১৭, ২৩ জানুয়ারি ২০২২

ফন্ট সাইজ
কুবি’র সিনিয়র ছাত্রলীগ নেত্রীকে পেটালেন জুনিয়র নেত্রী

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলে সিনিয়র এক নেত্রীকে মারধর করেছে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগেরই আরেক জুনিয়র নেত্রী।

শনিবার (২২ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে ওই হলের ২০৯ নম্বর কক্ষে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, ‘তুই’ সম্বোধনের প্রতিবাদ করায় শাখা ছাত্রলীগের উপ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক ও আইসিটি বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীর হাতে মারধরের শিকার হন লোক প্রশাসন বিভাগের ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। মারধরের এক পর্যায়ে সিনিয়র এই শিক্ষার্থী অবচেতন হয়ে পড়েন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই একই কক্ষে অবস্থান করলেও বিভন্ন সময় জুনিয়রের কাছে দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে আসছেন তিনি। এই বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ ও শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে জানানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সংগে কথা বলে জানা গেছে, শনিবার রাত ৮টার দিকে হলের লকারের চাবিকে কেন্দ্রকে করে সিনিয়র ছাত্রীকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করেন জুনিয়র ছাত্রলীগ নেত্রী। এর প্রতিবাদ করলে তখন সিনিয়র ছাত্রীর চুলের মুঠি চেপে মারধর করতে থাকেন। এক পর্যায়ে এই ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে হলে অবস্থানকারী অন্যান্য ছাত্রীদের সহযোগিতায় তিনি জ্ঞান ফিরে পান।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে শনিবার দুপুরে নিজের বিছানার পাশে বইয়ের র‌্যাক রাখেন সিনিয়র ছাত্রলীগ নেত্রী। এই সময় জুনিয়র এই নেত্রী র‌্যাক সরাতে বললে কথা কাটাকাটি হয়। এর সূত্র ধরে রাতে লকারের চাবি নেওয়াকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া বিভিন্ন সময় ওই কক্ষের সদস্যদের সংগে জুনিয়র নেত্রীর দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহত সিনিয়র ছাত্রী বলেন, গত তিন বছর ধরেই আমাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি-ধামকি ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে আসছে সে (জুনিয়র শিক্ষার্থী)। এই বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ হল প্রাধ্যক্ষকে বিভিন্ন সময়ে জানানোর পরও কেউ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। সর্বশেষ সে আমার ওপর হামলে পড়ে। এতে আমি চিৎকার করলে পাশের রুমের মেয়েরা এসে আমাকে উদ্ধার করে।

হল ছাত্রলীগের আরেক নেত্রী নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন, ছাত্রলীগের কমিটিতে তাঁর (উপ-ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক) পদ থাকলেও তাঁকে কখনো দলীয় কোনো কার্যক্রমে দেখা যায় না। পদ ব্যবহার করে হলে সে বিভিন্ন সময় প্রভাব খাটিয়ে আসছে।

মারধরের বিষয়ে অস্বীকার করে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রলীগের জুনিয়র নেত্রী বলেন, এই রকম কিছু তো হয়নি। মারধরের বিষয় তো আসেনি। আপুর সংগে একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিলো। পরে আমি আপুকে সরি বলছি। এটি রুমের মধ্যে ছিলো, রুমের মধ্যে সমাধান হয়েছে।

ছাত্রলীগের পদ ব্যবহার করে প্রভাব খাটানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরেক নেত্রীর ওপর আমি কীভাবে প্রভাব খাটাবো। উনিও তো নেত্রী।

এসব বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ইসলাম মাজেদ কিছুই জানেন না বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, আমি এই ব্যাপারে কিছু জানি না। আপনি সভাপতিকে জিজ্ঞেস করুন।

শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ-এর ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

প্রক্টর অধ্যাপক ড. কাজী মোহাম্মদ কামাল উদ্দীন বলেন, আমি এখনো অভিযোগ পাইনি। হলের বিষয় হলের প্রভোস্ট দেখবে। আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসলে আমরা খতিয়ে দেখবো।

হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সাদেকুজ্জামান তনু বলেন, ঘটনার সময় আমি বিভাগের কাজে বাইরে ছিলাম। খবর পেয়ে দু’জন আবাসিক শিক্ষককে পাঠিয়েছি। তারা তৎক্ষণাৎ তা মিটিয়ে দেন। এই ব্যাপারে আমি আরও খবর নেবো।

 

বিভি/এমএম/রিসি 

মন্তব্য করুন: