• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আস্থা বেড়েছে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরকে ঘিরে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২৩:০৯, ৩০ জুন ২০২২

আপডেট: ২৩:১০, ৩০ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আস্থা বেড়েছে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরকে ঘিরে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের আস্থা বেড়েছে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরকে ঘিরে। পূর্বের তুলনায় অধিক স্বচ্ছতা এবং সুযোগ বজায় রেখে উন্মুক্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট এই দপ্তরটি। যার প্রধান ভূমিকায় রয়েছেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম।

সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক হিসেবে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ছাত্রকল্যাণ পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর পরই তিনি শিক্ষার্থীদের সমস্যা নির্ধারণ, সমাধান এবং শিক্ষার্থীদের সার্বিক সুবিধার্থে বিভিন্ন উদ্যোগ নেন। 

যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল 'জেএনইউ স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার অফিস' নামক একটি ফেসবুক গ্রুপ খোলা। এই গ্রুপে শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট যাবতীয় বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত জানার সুযোগ রয়েছে। যাতে করে শিক্ষার্থীরা সহজেই যেকোন বিষয় জানতে পারছে। 

পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের সমস্যা ও অসুবিধার বিষয় জানার জন্য এবং শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য প্রতিটি বিভাগ থেকে দুইজন বিভাগ প্রতিনিধি মনোনীত করেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক। প্রতি মাসে বিভাগ প্রতিনিধি এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের মধ্যে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে প্রতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের পারিপার্শ্বিক অবস্থা এবং সমস্যার বিষয়গুলো উথ্বাপন করতে পারেন প্রতিনিধিরা। 

করোনাকালীন সময়ে প্রায় দেড় বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র ক্যাফেটেরিয়া বন্ধ থাকার পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে সশরীরে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাকে সামনে রেখে শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে নতুন আঙ্গিকে সেটি খোলার উদ্যোগ নেন অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম। এরপর থেকে ক্যাফেটেরিয়ার সার্বিক বিষয়টি তিনি তদারকি করছেন। 

শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সেখানে শিক্ষকদেরও খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। এবছর রমজান মাসেও শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে ইফতার প্যাকেজ এবং সেহরির ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় দিনব্যাপী ক্যাফেটেরিয়া খোলা রাখা হয়। 

গত বছর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের দুই ডোজ টিকা প্রদানের জন্য টিকা কেন্দ্র এবং শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডের জন্য বুথ স্থাপন সহ সার্বিক বিষয় পরিচালনা ও তদারকি করেন ছাত্রকল্যাণ পরিচালক ।

ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের প্রত্যক্ষ ভূমিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বৃত্তির আবেদনে সহায়তাস্বরূপ তাদের আইডি কার্ড দ্রুততম সময়ে তৈরী করা হয়। যাতে অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারে। এদিকে সহ-শিক্ষা কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন অর্জনের পর তাদের ছাত্রকল্যাণ দপ্তর থেকে তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়৷ 

অপরদিকে শিক্ষার্থীদের মানসিক অবসাদ থেকে উত্তরণেও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের প্রত্যক্ষ ভূমিকায় নেওয়া হয়েছে বিভিন্ন উদ্যোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাশ ভবনে শিক্ষার্থীদের সুপেয় পানি সরবরাহের জন্য ফিল্টার প্রদান করা হয়েছে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের মাধ্যমে।

 জানা যায়, একাডেমিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি এবার শিক্ষার্থীদের ক্যারিয়ার বিষয়ক বিভিন্ন সভা-সেমিনার এবং ওয়ার্কশপ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে ছাত্রকল্যাণ দপ্তর থেকে। শিক্ষার্থীদেরকে পরিপূর্ণভাবে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের সাথে সংশ্লিষ্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি আজ থেকে এক-দেড় বছর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ে নামমাত্র ছাত্রকল্যাণ দপ্তর ছিল৷ সেখানে শিক্ষার্থীদের কথা বলা কিংবা সাপোর্টের কোন সুযোগ ছিলনা আদৌ। তবে বর্তমান ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলামের যোগদানের পর সে চিত্র পাল্টে গেছে বলে দাবি তাদের৷ তার সার্বিক প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতায় ছাত্রকল্যাণ দপ্তর এখন শিক্ষার্থীদের জন্য বড় প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার মাধ্যমে ছাত্রকল্যাণ দপ্তরের প্রকৃত চিত্র এখন ফুটে উঠেছে।  

শিক্ষার্থীরা বলেন, এখন যেকোন সমস্যার বিষয়টি ছাত্রকল্যাণ দপ্তরে জানাতে পারি আমরা। এতে করে মনে হয় আমাদের কথা বলার এবং শোনার জায়গা রয়েছে। এমনটিই স্বাভাবিক। 

সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আইনুল ইসলাম বাংলাভিশনকে বলেন,  দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের সমস্যা নির্ধারণ ও সেগুলো সমাধানে কাজ করতে৷ আমার কাছে শিক্ষার্থীরা তাদের কথাগুলো বলার সুযোগ পাচ্ছে অন্তত। আমি সামর্থ্য অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি৷ আর এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমাকে সহায়তা করছে।

তিনি আরও বলেন, নানান সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদেরও আরও সাড়া দিতে হবে। তাদেরও বিষয়গুলো খোলামেলাভাবে বলতে হবে।

বিভি/এসি/এইচএস

মন্তব্য করুন: