• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

`ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি`

প্রকাশিত: ২২:৩৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১

ফন্ট সাইজ
`ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে সচেতনতা জরুরি`

মস্তিষ্কের বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমে অবনতির কারণে স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া, চিন্তা-চেতনার পরিবর্তন, ভুলে যাওয়াসহ মানসিক নানান অসঙ্গতিপূর্ণ বিষয়ের ফলে সৃষ্ট ডিমেনশিয়া রোগ প্রতিরোধে সচেতনতাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) বিশ্ব আলঝেইমারস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘ডিমেনশিয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এই কথা জানান তাঁরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডার বিভাগের সহায়তায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশ ও জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ রিটায়ারমেন্ট হোমস লিমিটেড।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌসের সঞ্চালনায় সভায় জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ রিটায়ারমেন্ট হোমস লিমিটেডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সরদার এ নাঈম বলেন, ডিমেনশিয়া সম্পর্কে সচেতন করাই আমাদের উদ্দেশ্য। 

আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আলঝেইমার সোসাইটি অব বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রেটারি জেনারেল মো. আজিজুল হক। তিনি বলেন, ডিমেনশিয়া সমাজের সব গ্রুপকেই সমানে আক্রান্ত করে। আক্রান্ত ব্যক্তির স্মরণশক্তি, উপলব্ধি, প্রকাশ ক্ষমতা এবং যুক্তি-বুদ্ধি ক্রমেই হ্রাস পায়। এটি কত দ্রুতহারে বাড়বে তা অনেকটাই ব্যক্তিনির্ভর। বর্তমানে ডিমেনশিয়া পুরোপুরি ভালো করার কোনো কার্যকর ওষুধ নেই।

স্মৃতিশক্তি হ্রাস, পরিকল্পনা বা সমস্যা সমাধানে অপারগতা, গুছিয়ে কথা বলতে বা লিখতে সমস্যা, সঠিক জায়গায় জিনিসপত্র না রাখাসহ ডিমেনশিয়ার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ প্রবন্ধে তুলে ধরেন মো. আজিজুল হক। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা সেপ্টেম্বর ২০২১ এর রিপোর্ট অনুযায়ী প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি মানুষ নতুনভাবে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। বর্তমানে বিশ্বে সাড়ে ৫ কোটিরও বেশি মানুষ ডিমেনশিয়া নিয়ে বাস করছেন, যা ২০৫০ সালে প্রায় ১৪ কোটিতে পৌঁছাবে বলে জানান তিনি। এশিয়া প্যাসিফিক রিপোর্ট অনুযায়ী, বাংলাদেশও ২০১৫ সালে যেখানে ডিমেনশিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৬০ হাজার, ২০৫০ সালে সেটি দাঁড়াবে প্রায় ২২ লাখে।

এসময় সচেতনতার অভাব, দ্রুত শনাক্ত না হওয়া, বিশেষায়িত হাসপাতাল না থাকা, বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ও দক্ষ নার্সের অভাবসহ ১০টি সমস্যার কথা তুলে ধরেন তিনি। এছাড়া এই রোগ মোকাবিলায় সফল হওয়ার জন্য বিশ্ব আলঝেইমারস্ দিবস সরকারিভাবে পালন, ডিমেনশিয়া নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা, প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দসহ ৮টি পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ জানান তিনি।

গোলটেবিল আলোচনায় আইসিডিডিআরবির বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. বদরুল ইসলাম বলেন, আমাদের দেশে ডিমেনশিয়া কোন ধরনের তা নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া যখন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে তখন তারা ফিরে আসার অবস্থায় থাকেন না। তাই যখনই দেখবেন কেউ বেশ রেগে যাচ্ছেন সাধারণ অবস্থাতে, এর মানে তিনি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন।

 নিউরোসায়েন্সের সঙ্গে ডিমেনশিয়াও সংযুক্ত। নিউরোসায়েন্স নিয়ে সরকারের পরিকল্পনা আছে, কাজ হচ্ছে। কিন্তু ডিমেনশিয়াকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না, গুরুত্ব দেওয়া দরকার বললেন, অধ্যাপক ডা. মোহিত কামাল।

খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞান ইনিস্টিটিউটের অধ্যাপক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ খুবই জরুরি। ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে স্বাস্থ্যসম্মত ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া দরকার। এছাড়া এই রোগের জন্য আলাদাভাবে সরকারি বিশেষায়িত হাসপাতাল করার দাবি জানান তিনি।

 মনে না পড়া বিষয়টিকে আমি রোগ বলতে নারাজ। এটা হতেই পারে। কিন্তু সেটির জন্য রোগের সৃষ্টি যেন না হয়, তাই সচেতনতা জরুরি বলে জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডার বিভাগের চেয়ারপার্সন সহকারী অধ্যাপক তাওহিদা জাহান।

বিভি/এএইচ/এমএস

মন্তব্য করুন: