• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

চোখের ছানির অপারেশনে দরকার ৩২’শ চক্ষু চিকিৎসক:বিএসএমএমইউ উপাচার্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৩৪, ২৯ জুন ২০২২

ফন্ট সাইজ
চোখের ছানির অপারেশনে দরকার ৩২’শ চক্ষু চিকিৎসক:বিএসএমএমইউ উপাচার্য

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব ছানি সচেতনা মাস পালিত হয়েছে। বুধবার (২৯ জুন) দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে এ উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারাক্ট অ্যান্ড রিফ্ল্যাকটিভ সার্জনস (বিএসসিআরএস) একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় উঠে আসে, চোখের ছানি জনিত অন্ধত্ব হলো সারা বিশ্বে প্রতিরোধ যোগ্য রোগের একটি। ছানি অন্ধত্ব এবং এর প্রতিরোধে সারাবিশ্বে সচেতনতা বাড়াতে জুন মাস পালিত হয় ছানি সচেতনতার মাস। দেশে পাঁচ লাখের বেশি ছানি রোগী রয়েছে এবং দেশ থেকে ছানি অন্ধত্ব ও ছানি প্রতিরোধে সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ রচিত ও গ্রাজুয়েট নার্সিং বিভাগের (ইংরেজি) প্রভাষক আনোয়ার পারভেজ সম্পাদিত ‘আই প্রোবলেমস এন্ড সলুশনস’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।  

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চোখের ছানি নিয়ে রোগীদের মধ্যে সচেতনতার অভাব রয়েছে। অনেক রোগীর ছানি সার্জারির প্রয়োজন হলেও রোগীরা তা করতে চাচ্ছেন না। তাদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। অনেকে ছোট অপারেশনও করতে চান না। অপারশেনকে তারা ভয় পান। অপারেশন ভীতি দূর করতে হবে।

অধ্যাপক ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, চিকিৎসাসহ স্বাস্থ্যখাতে দক্ষজনবল খুবই কম। এ সংকট কমাতে হবে। চিকিৎসক কোর্সে ছাত্র বাড়াতে হবে। শুধু চক্ষু চিকিৎসক নয়, তাদের সার্জারিও জানতে হবে। এজন্য ২০৩২ সালের মধ্যে ৩২০০ জন চক্ষু চিকিৎসকের প্রয়োজন পড়বে। এখন আছে মাত্র এক হাজার ৪০০ জন। আগামী বছরগুলোতে এ সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।

বক্তব্য রাখছেন আসাদুজ্জামন নূর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য সাংষ্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর বলেন, মানুষের মধ্যে ছানি পড়া নিয়ে সচেতনতার ঘাটতি রয়েছে। দিনদিন তাদের চোখের জটিলতা বাড়লেও হাসপাতালে রোগী কম আসে। বেশ কিছু এনজিও তাদের নিয়ে কাজ করছে। এমনকি এনজিওগুলো নিজ খরচে বাসা থেকে গিয়ে রোগীদের নিয়ে আসছে, এমনকি সব পরীক্ষা নীরিক্ষা করে চিকিৎসা করে দিচ্ছে। কিন্তু সরকারি হাসপাতালগুলোতে কিন্তু চিকিৎসা, পরীক্ষা, ওষুধসহ সব ফ্রি কিন্তু রোগীরা আসছেন না। 

তিনি বলেন , আমাদের কায়িক শ্রম কমে গেছে। আগে মানুষ প্রচুর পরিশ্রম করতো। রোগবালাই বেশি হচ্ছে। অনেকেই জানেন না তারা বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত। অনেকের ডায়বেটিস ১৮ থাকলেও তারা মিষ্টি খাচ্ছে, কোমলপানীয় খাচ্ছে। কারণ, সে জানেও না যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। 

আসাদুজ্জামান নূর বলেন, সুস্থ থাকতে হলে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি। তাহলেই যার যেই রোগ সেটি ধরা পড়বে। চিকিৎসার মাধ্যমে আবার সুস্থও হয়ে যায়। কিন্তু তারা চিকিৎসকের কাছে এমন একটা সময়ে আসে, যখন অনেকক্ষেত্রেই কিছু করার থাকে না। তিনি আরও বলেন, আমরা যেভাবে টেলিভিশন, মোবাইল, কম্পিউটার দেখি, এতে করে আমাদের চোখের খুবই ক্ষতি হয়। বিশেষ করে শিশুদের মধ্যে এই ব্যাপারটি বেশি লক্ষ্য করা যায়। তারা বইয়ের চেয়ে মোবাইল ফোন দেখতে পছন্দ করে। এভাবে চলতে থাকলে তো শুধু চোখে না, শারীরিকভাবেও তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সোসাইটি অব ক্যাটারাক্ট অ্যান্ড রিফ্ল্যাকটিভ সার্জনসের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. মোস্তাক আহমেদ ছানি সচেতনা নিয়ে একটি প্রেজেন্টেশন উপস্থান করেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসসিআরএস সভাপতি অধ্যাপক ডা. জাফর খালেদ। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মোঃ জাহিদ হোসেন, শিশু অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, কমিউনিটি অফথালমোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোঃ শওকত কবীর, সহযোগী অধ্যাপক ডা. তারেক রেজা আলী প্রমুখ অংশ নেন।  অনুষ্ঠানে ক্যাটারাক্ট সার্জন অধ্যাপক ডাঃ এম নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় রোগী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ক্যাটারাক্ট বিশেষজ্ঞ ডা. মাহবুবুর রহমান চৌধুরী, ডা.  আব্দুর রকিব তুষার ও ডা. মোঃ শওকত কবির।

বিভি/কেএইচ/এইচএস

মন্তব্য করুন: