• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

চীনে জনপ্রিয় হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ই-স্কুটি ও বাইক

ইমরুল কায়েস, চীন থেকে 

প্রকাশিত: ১৫:১৭, ৮ আগস্ট ২০২২

আপডেট: ১৫:১৮, ৮ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
চীনে জনপ্রিয় হচ্ছে পরিবেশবান্ধব ই-স্কুটি ও বাইক

চীনের লক্ষ্য ২০৬০ সালের মধ্যে শূণ্য কার্বণ নির্গমণ দেশে পরিণত হওয়া

চীনে দিনকে দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পরিবেশবান্ধব ইলেক্ট্রনিক স্কুটি ও মোটরবাইক। বেইজিংয়ের রাস্তায় অসংখ্য ইলেক্ট্রনিক স্কুটি ও মোটরবাইক চোখে পড়ে। বলা চলে তেল বা পেট্রল-অকটেন চালিত মোটরবাইকের চেয়ে রাস্তায় ই-স্কুটি ও বাইকের সংখ্যা বেশি। চায়না সরকারও এই ধরনের পরিবেশবান্ধ যানবাহনের প্রতি জনগণকে উৎসাহী করে তুলছে। চীনের লক্ষ্য ২০৬০ সালের মধ্যে শূণ্য কার্বণ নির্গমণ দেশে পরিণত হওয়া। এজন্য নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার। এরই একটি হল যানবাহনকে পরিবেশবান্ধব করা। এ কারণে সরকার জনগণকে বেশি বেশি করে ই-স্কুটার ও মোটরবাইক ব্যবহারে নানা ধরনের প্রণোদনা দিয়ে যাচ্ছে।

 

এরইঅংশ হিসেবে অফিস, পাবলিক এরিয়া, বিশ্ববিদ্যালয় ও কমিউনিটিগুলোতে চার্জিং স্টেশন বসানো হয়েছে যাতে জনগণ সহজেই এসব জায়গা থেকে ই-স্কুটার ও বাইকে চার্জ দিতে পারে। কিছু কিছু চার্জিং স্টেশন ফ্রি অর্থাৎ চার্জ দেয়ার জন্য কোন ফি দিতে হয় না। আবার কিছু কিছু বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যেও স্থাপন করা হয়েছে। নির্দিষ্ট ফি’র বিনিময়ে বাণিজ্যিক চার্জিং স্টেশন থেকে সেবা প্রদান করা হয়। আশপাশে কোথায় চার্জিং স্টেশন আছে তা জানাও সহজ। মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে গ্রাহক সহজেই চার্জিং স্টেশন চিহ্নিত করতে পারে। আবার অ্যাপসের মাধ্যমে খুব সহজে চার্জের জন্য বিলও পরিশোধ করা যায়। তবে বাসাবাড়িতে এখনও গণহারে চার্জ স্টেশন স্থাপনের অনুমতি দেয়া হয় নাই। যাতে কোনরকম দুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্যই এই ব্যবস্থা। নির্ধারিত আইন ও এ সংক্রান্ত সব গাইডলাইন মানা হলে তবেই কেবল কেউ বাসাবাড়িতে চার্জিং ফ্যাসিলিটি স্থাপন করতে পারে। 

চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-স্কুটার উৎপাদন ও রপ্তানিকারক দেশ

অল্প স্বল্প দুরুত্বের জন্য ইলেক্ট্রনিক স্কুটি ও বাইককে চীনের জনগণ সুবিধাজনক মনে করে। এজন্য রাস্তায় দিন দিন এর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ডেলিভারি ম্যানরা একচেটিয়া ই-স্কুটার ও বাইক ব্যবহার করে। পেট্রল বা অকটেন চালিত প্রচলিত মোটরসাইকেলের চেয়ে ই-স্কুটার সুবিধাজনক, সস্তা ও পরিবেশবান্ধব। তাওবাও এর তথ্য অনুসারে ই-স্কুটার ও বাইকের দাম ৭৫০ থেকে ৭ হাজার ইউয়ান বা ১০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। কোয়ালিটি, ডিজাইনসহ বৈশিষ্ট্যভেদে  একেক কোম্পানির ই-স্কুটারের দাম একেকরকম। তবে বেশিরভাগ চাইনিজ সাধারণত ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকার ই-স্কুটার কিনে থাকে। চীনের বাজারে বর্তমানে আইমা, তাইলিং, ইয়াতিন ও লভই্য়ান ব্র্যান্ডের ই-স্কুটার জনপ্রিয়। ২০২০ সালে চীনে ই-স্কুটারের সংখ্যা ছিল তিনশ’ মিলিয়ন। এই ধরনের যানের বাৎসরিক বিক্রি ১০৪.৬ বিলিয়ন ইউয়ান বা দেড় লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। চায়না বাইসাইকেল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্যমতে চীন বিশ্বের সবচেয়ে বড় ই-স্কুটার উৎপাদন ও রপ্তানিকারক দেশ। বিশ্ব বাজারের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে চীন। 

ব্যাপকহারে ই-স্কুটার ও বাইক চালু করতে পারলে ঢাকায় দুর্ঘটনার মাত্রা কমে যাবে বলে আশা করা যায়।
বাংলাদেশে বিশেষকরে ঢাকার রাস্তায় বর্তমানে কিছু ই-স্কুটার দেখা যায়। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হলে জ্বালানিচালিত মোটরসাইকেলের পরিবর্তে ই-স্কুটারের ওপর নির্ভর করা যেতে পারে। জনগণকে ই-স্কুটারে উৎসাহী করে তুলতে হবে। এজন্য নির্দিষ্ট স্থানে প্রয়োজনীয় সংখ্যায় চার্জিং স্টেশন স্থাপন করতে হবে। এতে যানজট যেমন কমবে তেমনি জ্বালানি তেলের ওপর চাপ কমবে। তাছাড়া ই-স্কুটার সহজলভ্য করতে পারলে জনগণও ব্যাপকভাবে কিনতে ও ব্যবহার করতে আগ্রহী হয়ে উঠবে। ঢাকার রাস্তায় যেমন দামি ও বিশালাকার মোটরসাইকেল দেখা যায় চীনে তেমনটা চোখে পড়ে না। এ ধরনের মোটরসাইকেল কেনার জন্য লাইসেন্স পাওয়াটা সহজ নয়। অর্থাৎ দুর্ঘটনার ঝুঁকি বিবেচনায় চীন সরকার এই ধরনের মোটরসাইকেল কিনতে জনগণকে নিরুৎসাহিত করে। ঢাকার রাস্তায় দুর্ঘটনার একটা বড় কারণ পেট্রল অকটেন চালিত দ্রুত গতিসম্পন্ন বিশালাকার এসব মোটরসাইকেল। ব্যাপকহারে ই-স্কুটার ও বাইক চালু করতে পারলে ঢাকায় দুর্ঘটনার মাত্রা কমে যাবে বলে আশা করা যায়।

মন্তব্য করুন: