বাড়ছে বার্ডেল্লার জনপ্রিয়তা, বিদায় ঘণ্টা ম্যাক্রোঁর? (ভিডিও)
ফ্রান্সের রাজনৈতিক অঙ্গনে পাওয়া যাচ্ছে এক বিশাল পরিবর্তনের আভাস। যেখানে ২৮ বছর বয়সী কঠোর-ডানপন্থী নেতা জর্ডান বার্ডেল্লা প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশটির ন্যাশনাল র্যালি দলের বর্তমান নেতা বার্ডেল্লার রাজনৈতিক উত্থান সাড়া ফেলছে ফ্রান্সের রাজনীতি পাড়ায়।
ফ্রান্সে আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার পর বিভিন্ন জনমত জরিপে বারদেলার নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল র্যালিকে এগিয়ে রাখা হয়েছে। বার্ডেল্লার জাতীয়তাবাদী ও অভিবাসনবিরোধী দলটির প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় আসার সুযোগ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার দিকেই নজর দিছেন তিনি। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বার্ডেল্লা বলেন, কার্যকরভাবে সরকার পরিচালনায় নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। তাই বোঝাই যাচ্ছে অচিরেই বড় একটি পরিবর্ত্নের আভাস দিচ্ছেন ডানপন্থী এই নেতা
বার্ডেল্লার নেতৃত্বে ন্যাশনাল র্যালি দলটি সম্প্রতি ইউরোপীয় নির্বাচনে বিশাল সাফল্য অর্জন করেছে, যা বর্তমান প্রেসিডেন্ট এম্যানুয়েল ম্যাক্রোঁর দলের জন্য একটি বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ম্যাক্রোঁ এই পরিস্থিতিতে একটি আগাম নির্বাচনের আহ্বান করেছেন, যা বার্ডেল্লার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করেছে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং তার দল বার্ডেল্লার কঠোর-ডানপন্থী অবস্থান এবং বিদেশী সম্পর্ক নিয়ে সমালোচনা করলেও, বার্ডেল্লার জনপ্রিয়তা কমেনি। বরং, তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ফ্রান্সের ভবিষ্যতের রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
১৯৯৫ সালে প্যারিসের উত্তর শহরতলির সেইন-সেন্ট-ডেনিসে জন্মগ্রহণ করা বার্ডেল্লা ইতালীয় অভিবাসী পিতামাতার সন্তান। তার মা ১৯৬০ এর দশকে তুরিন থেকে ফ্রান্সে এসেছিলেন, যিনি একজন সংগ্রামী অভিবাসী ছিলেন। বার্ডেল্লার জীবনে তার মায়ের ভূমিকা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কারণ তার বাবা যখন তিনি মাত্র এক বছর বয়সী তখন তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। বার্ডেল্লার মা একা হাতে তাকে বড় করেছেন। হাই স্কুলের পাট চুকিয়ে বার্ডেল্লা প্যারিস সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিষয়ে ভর্তি হন। কিন্তু পড়ে যান রাজনীতির নেশায়। ছাড়তে হয় পড়াশোনা।
বার্ডেল্লার কট্টরপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি এবং তার দলের বিদেশী সহযোগিতার কারণে তিনি প্রচণ্ড সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন। বিশেষ করে, ন্যাশনাল র্যালির রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের গুঞ্জন তাকে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন করছে। ছাড়াও, বার্ডেল্লার দলের জার্মানির কট্টর-ডানপন্থী দল এএফডি-এর সঙ্গে সম্পর্কও সমালোচিত হয়েছে।
তবে সমালোচনা সত্ত্বেও, বার্ডেল্লার জনপ্রিয়তা ক্রমবর্ধমান। তার দল অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সমালোচনা নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছে। ফ্রান্সের অনেক ভোটার বার্ডেল্লার ভিন্নধর্মী দৃষ্টিভঙ্গি এবং নেতৃত্বের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন।
বিভি/এমএফআর
মন্তব্য করুন: