• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

প্রাদেশিক আইনসভা থেকে দলীয় সদস্যদের পদত্যাগের ঘোষণা ইমরান খানের

প্রকাশিত: ২২:৫৪, ২৬ নভেম্বর ২০২২

আপডেট: ২৩:৩০, ২৬ নভেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
প্রাদেশিক আইনসভা থেকে দলীয় সদস্যদের পদত্যাগের ঘোষণা ইমরান খানের

ছবি: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

পাকিস্তানের প্রাদেশিক সব আইনসভা থেকে নিজ দলের সদস্যরা পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির সাব্কে প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। ইসলামাবাদ অভিমুখী লং মার্চের পরিবর্তে সংসদ থেকে পদত্যাগের দলীয় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে শনিবার ( ২৬ নভেম্বর) রাওয়ালপিন্ডিতে এক সমাবেশে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

ইমরান খান বলেছেন, পিটিআই বর্তমান সরকার ব্যবস্থার অংশ হবে না এবং প্রাদেশিক সব আইনসভার আসন ছেড়ে দেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, আমরা এই ব্যবস্থার অংশ হবো না। আমরা সব আইনসভা থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আমরা দেশের এই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পিটিআই বর্তমানে পাঞ্জাব, খাইবার পাখতুনখাওয়া, আজাদ-কাশ্মীর এবং গিলগিট-বালতিস্তানে ক্ষমতায় রয়েছে।

পিটিআই চেয়ারম্যান বলেন, পিটিআই ধ্বংসযজ্ঞ অথবা বিশৃঙ্খলা এড়াতে ইসলামাবাদ অভিমুখী লং মার্চ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বিভিন্ন প্রদেশের পিটিআইদলীয় মুখ্যমন্ত্রীদের সাথে শিগগিরই বৈঠক করবেন বলে জানিয়েছেন। পরে পিটিআইয়ের সংসদীয় দলের সঙ্গে বৈঠক করে কবে আইনসভা থেকে পিটিআইয়ের সদস্যরা পদত্যাগ করবেন সেবিষয়ে ঘোষণা দেবেন।

বিশ্রাম শেষে শনিবার (২৬ নভেম্বর) লংমার্চে ফিরেছেন ইমরান খান। রাওয়ালপিন্ডিতে কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্যে বলেছেন, মৃত্যুভয় দূর করে রাজপথে লড়াই চালিয়ে যান। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে লংমার্চ শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। বন্দুক হামলায় গুলিবিদ্ধ হওয়ায় কয়েকদিন তিনি এ কর্মসূচি থেকে দূরে ছিলেন। তবে লংমার্চ চলমান ছিলো।

রাওয়ালপিন্ডির সমাবেশে ইমরান খান বলেন, ‘জাতির সামনে এখন দুটি পথ খোলা। একটি আশীর্বাদ ও মহানুভবতার; অন্যটি অপমান ও ধ্বংসের। এখন জাতিকে যেকোনো একটি পথ বেছে নিতে হবে।’ নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘যদি স্বাধীনভাবে বেঁচে থাকতে চান, তাহলে মৃত্যুভয় থেকে নিজেদের মুক্ত করুন, রাজপথে নামুন। ভয় পুরো জাতিকে দাসে পরিণত করবে।’

এ সময় পিটিআইয়ের ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মাহমুদ কুরেশি বলেন, ইমরান খান প্রমাণ করেছেন, তিনি মাথানত করবেন না। তিনি লক্ষ্যের পথে অবিচল এগিয়ে যাবেন।

আগাম নির্বাচনের দাবিতে ইমরানের নেতৃত্বে গত ২৮ অক্টোবর রাজধানী ইসলামাবাদ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। এরপর যতো দিন গড়িয়েছে এই কর্মসূচিতে জনসমাগম ততোই বেড়েছে। 

৩ নভেম্বর পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান পাঞ্জাবের ওয়াজিরাবাদ শহরে লংমার্চ করছিলেন। এ সময় তার ওপর বন্দুক হামলা হয়। পায়ে গুলি লাগে তার। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর লাহোরের শওকত খানুম হাসপাতালে ছিলেন ইমরান। পরে সেখান থেকে তাকে জামান পার্কের বাসায় নেওয়া হয়। সেখানেই বিশ্রামে ছিলেন তিনি। শনিবার ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে রাওয়ালপিন্ডিতে পৌঁছান । এরপর সন্ধ্যায় তিনি হেলিকপ্টারে সমাবেশস্থল রেহমানাবাদে যান।

শনিবার সকাল থেকেই পিটিআইয়ের লাখো কর্মী-সমর্থক মিছিল নিয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে পৌঁছান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে সমাবেশে লাখো মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। এ সময় অনেকে ইমরানের ছবিযুক্ত প্ল্যাকার্ড ও পিটিআইয়ের দলীয় পতাকা বহন করেন। লংমার্চ ঘিরে পুরো রাওয়ালপিন্ডি নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলে পুলিশ। বিভিন্ন জায়গায় চেক পয়েন্ট বসিয়ে তল্লাশি করা হয়।  

ইমরানের এই কর্মসূচির তীব্র সমালোচনা করেছে পাকিস্তান সরকার। তাদের দাবি, দেশকে অস্থিতিশীল করতে এ রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছেন ইমরান। দেশটির তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব টুইটে বলেন, পিটিআই দেশে সহিংসতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। দলটির নেতা-কর্মীরা সহিংস আচরণ করছেন। 

অন্যদিকে ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নেওয়াজ টুইটে বলেন, ইমরান খানের লংমার্চ পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। পিটিআই লংমার্চের নামে একের পর এক নাটক করছে।

দেশকে এগিয়ে নেওয়ার স্বার্থে ইমরানকে রাজপথ ছেড়ে পার্লামেন্টে ফেরার আহ্বান জানিয়েছে সরকার। সূত্র: ডন, জিও নিউজ 

বিভি/এমআর

মন্তব্য করুন: