• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

ভারতীয় স্বজনের মরদেহ দেখার সুযোগ পেল বাংলাদেশিরা

তুহিন আরন্য, মেহেরপুর

প্রকাশিত: ১৫:৩০, ২৭ নভেম্বর ২০২২

আপডেট: ১৫:৩০, ২৭ নভেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
ভারতীয় স্বজনের মরদেহ দেখার সুযোগ পেল বাংলাদেশিরা

সংগৃহীত ছবি

মেহেরপুরের মুজিবনগরের মেয়ে সুকৃতি মন্ডল ৩৫ বছর আগে বিবাহসূত্রে ভারতের নদীয়া জেলার চাপড়া থানার হৃদয়পুরে বসবাস শুরু করেন। সীমান্তে কড়াকড়ি এবং কাঁটাতারের বেড়ার কারণে ২৫ বছর মা বাবা বোন ভাইদের সাথে দেখা নেই। ইন্টানেটে ভিডিও কল এখন এই সমস্ত পরিবারগুলোর যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন। শনিবার সুকৃতি মন্ডলের মৃত্যু সংবাদ পেলে মৃতের শেষ মুখখানি দেখতে সীমান্তের শুন্যরেখা কাঁটাতারের বেড়ার কাছে স্বজনদের আহাজারি শুরু হয়। হৃদয়বিদারক এই মানবিক ডাকে সাড়া দেয় বিজিবি-বিএসএফ। বিজিবি ক্যাম্প আবেদন পেয়ে বিএসএফকে দ্রুত মরদেহ দেখানোর ব্যবস্থা করার পত্র দেয়। উভয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সমন্বয়ে শুন্য রেখায় মরদেহ পৌঁছুলে সেখানে উভয়দেশে বসবাসরত স্বজনরা সমবেত হয়। মেহেরপুরের মুজিবনগর সীমান্তের ১০৫ নং মেইন পিলারের শুন্য রেখায় এই মানবিক দৃশ্য উভয়দেশের সৌহাদ্য ও বন্ধুত্বকে তুলে ধরে।

 

মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউপি সদস্য সিবাস্তিন মল্লিক বললেন- মুজিবনগর বিজিবি ক্যাম্প কমান্ডার শহিদ শেখ ও বিএসএফ এর হৃদয়পুর ক্যাম্প কমান্ডার তরুণ কুমার শর্মার উদার মানবিকতায় এপার ওপার বসবাসরত ভাই বোনের শেষ দেখার সুযোগ দেয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন উভয় দেশে অবস্থানরত স্বজনরা। ২১ নভেম্বর মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস গ্রামের উজ্জল শেখের সাথে ভারতের চাপড়া থানার মেয়ে আমিরা খাতুনের বিয়ে হয়। ৯০ বছর বয়সে আমিরা খাতুন মারা গেলে সেদিনও ভারতে বসবাসরত স্বজনদের একইভাবে শেষ মুখখানি দেখার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল বিজিবি-বিএসএফ।


সেবাস্তিন মল্লিক আরো জানান, মুজিবনগর বিজিবিকে জানালে তারা আমাকে আশ্বস্ত করেন এবং চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ও বিএসএফ এর মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বজনদের দেখানো সুব্যবস্থা কারান। তিনি দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে ধন্যাবাদ জানান।

বিবাহ বা দেশত্যাগের কারণে পরিবার বিভক্ত হয়ে পড়েছে সীমান্তের এপার বাংলাদেশে কিংবা ওপার ভারতে। শুন্য রেখায় কাঁটাতারের বেড়া হওয়ার কারণে স্বজনদের মধ্যে দেখা সাক্ষাৎ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে গেছে। কারো মৃত্যু সংবাদ শুনে কান্না বাহাজারি ছাড়া শেষ মুখখানি দেখারও সুযোগ ছিল না। এখন বিজিবি-বিএসএফ সীমান্তের আহাজারি বন্ধে সীমান্তের শুন্যরেখায় উভয়দেশের মরদেহ দেখার সুযোগ করে দেয়ায় খুশি উভয়দেশের স্বজনরা। তারা এই উদ্যোগের মাধ্যমে সীমান্তে মানবতার দুয়ার খুলে গেল।

মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন বলেন, দুই দেশের সীমন্তবর্তী মানুষের সম্পর্ক উন্নয়ন, অপরাধ প্রবণতা কমাতে বিজিবি-বিএসএফ এর এ ধরণের মানবিক কার্যক্রম সীমান্তবর্তী মানুষের মাঝে নতুন বার্তা বয়ে আনবে। দুই দেশের সীমান্তবর্তী গ্রামবাসীরা বলেন, এই উদ্যোগের মধ্যদিয়ে সীমান্তে মানবতা, সৌহাদ্য নতুন করে শুরু হলো।

মন্তব্য করুন: