ইউপি ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে মাঠে নামছে ৩৮১ বিচারিক হাকিম
আগামী ২৮ নভেম্বর (রবিবার) তৃতীয় ধাপে এক হাজার ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এসব ইউপি নির্বাচনের পরিবেশ শান্ত রাখতে বিপুল সংখ্যক বিচারিক হাকিম মাঠে নামাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামীকাল শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচদিনের জন্য ভোটের মাঠে নিয়োজিত থাকবেন এসব বিচারিক হাকিম।
ইসি’র আইন শাখার সিনিয়র সহকারি সচিব মোছা. শাহীনুর আক্তার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ভোটের মাঠে ৩৮১ জন বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনী অপরাধসহ বিভিন্ন অপরাধ আমলে নিয়ে আইন-শৃ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সংক্ষিপ্ত বিচারকাজ করবেন তারা।
স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ ও পৌরসভা) নির্বাচন বিধিমালার অধীন নির্বাচনি অপরাধসমূহ 'দ্যা কোড অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর, ১৮৯৮ (অ্যাক্ট নম্বর পাঁচ)' এর ১৯০ ধারার অধীনে আমলে নেওয়া ও তা সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচারের জন্য তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে বিচারিক হাকিম নিয়োগ সংক্রান্ত চিঠি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও তাদের সহায়তার জন্য জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে- নির্বাচন অনুষ্ঠান উপলক্ষে নির্বাচনকালীন সংঘটিত অপরাধসমূহ আমলে নেয়া ও সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার সম্পন্নের নিমিত্তে ভোটগ্রহণের পূর্বের দু’দিন, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরের দু'দিন অর্থ ২৬ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট পাঁচ দিনের জন ৩৮১ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন।
ইসি’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি দুই ইউপি’র জন্য একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ থাকবে। তবে কোনো কোনো উপজেলায় প্রতি তিন ইউপি’র জন্যও একজন করে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত থাকবেন। এসব কর্মকর্তার ভোটের দায়িত্বকে বিচারিক দায়িত্ব হিসেবে গণ্য করা হবে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত জুডিসিয়াল সাভির্সের কর্মকর্তাগণকে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের নিমিত্ত অবমুক্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশনাও দিয়েছে ইসি। এতে বলা হয়েছে- ম্যাজিস্ট্রেটগণ দায়িত্ব পালনকালে একজন বেঞ্চ সহকারি/ স্টেনোগ্রাফার/অফিস সহকারিকে সহকারি হিসেবে সংগে নিতে পারবেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাদের নিজ নিজ অফিস প্রধান ব্যবস্থা নেবেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটগণকে সংশ্লিষ্ট এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে প্রয়োজনীয় যানবাহন সরবরাহ করবেন সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক। এছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেটগণকে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকায় আদালত পরিচালনার নিমিত্ত প্রয়োজনীয় সংখ্যক সশস্ত্র পুলিশ নিয়োগ করবের সংশ্লিষ্ট পুলিশ সুপার/পুলিশ কমিশনার।
ইসি’র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, তৃতীয় ধাপে এক হাজার চারটি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে ৫৬৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এরমধ্যে চেয়ারম্যান পদে ১০০, সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ১৩২ এবং সাধারণ সদস্য পদে ৩৩৭ জন প্রার্থী রয়েছেন।
এই ধাপের নির্বাচনে ২০টি রাজনৈতিক দল চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী দিয়েছে। স্বতন্ত্রসহ চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন মোট পাঁচ হাজার ২২২ জন প্রার্থী। মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রয়েছেন চার হাজার ৪০৯ জন।
সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ১১ হাজার ৬০৯ জন। শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন ১১ হাজার ১০৫ জন।
এছাড়া সাধারণ সদস্য পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন ৩৭ হাজার ৬৯ জন। শেষ পর্যত্ন প্রতিদ্বন্দ্বীতায় রয়েছেন ৩৪ হাজার ৬৩২ জন।
ইতিমধ্যে চার ধাপের ইউপি ভোটের তফসিল ঘোষণা করেছে কমিশন। এরমধ্যে প্রথম ধাপে ৩৬৯ ও দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৩ ইউপিতে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। চতুর্থ ধাপে ২৬ ডিসেম্বর ৮৪০ ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া পঞ্চম ধাপে তফসিল ঘোষনার অপেক্ষায় রয়েছে।
বিভি/এইচকে/এসডি
মন্তব্য করুন: