• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

ইসি’র সংলাপে আসেনি ৯ দল, অংশ নেওয়াদের যতো মত

প্রকাশিত: ০১:১৩, ৩১ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
ইসি’র সংলাপে আসেনি ৯ দল, অংশ নেওয়াদের যতো মত

কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই রাজনৈতিক দলসহ বিভিন্ন মহলের আস্থা অর্জনের চেষ্টা করে যাচ্ছে।  আর এ জন্য দায়িত্ব নেওয়ার পরপর বিভিন্ন মহলের সঙ্গে মতবিনিময় করা শুরু করে নতুন কমিশন।  প্রথম ধাপে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন নিয়ে মতবিনিময়ের পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ১৭ জুলাই থেকে সংলাপ শুরু করে কমিশন। এখন পর্যন্ত যেসব দলগুলোকে ডেকেছে তার মধ্যে ২৬টি দল সংলাপে অংশ নিয়েছে। আর নয়টি দল নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ডাকে সাড়া দেয়নি। এছাড়া আগস্টের পরে সংলাপের জন্য সময় দিতে পারবে বলে জানিয়েছে জাতীয় পার্টি-জেপি। আর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কারণে পরবর্তীতে সময় চেয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি।

এদিকে রবিবার (৩১ জুলাই) সকালে জাতীয় পার্টি এবং বিকেলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে বসার মাধ্যমে শেষ হচ্ছে এই পর্বের সংলাপ।

যে নয়টি দল সংলাপে অংশ নেয়নি:
বাংলাদেশ মুসলীম লীগ-বিএমল, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিএনপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি- এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি- বিজেপি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি।

২৬ দলের কাছ থেকে এসেছে প্রায় ৩০০ প্রস্তাব: 
ইসির সংলাপে অংশ নেওয়া ২৬টি দল থেকে প্রায় ৩০০’র মতো প্রস্তাবনা এসেছে। 

জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম এর ১৩ দফা সুপারিশ:

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একাধিক দিনে ভোটগ্রহণ, নির্বাহী বিভাগ থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ না দেওয়ার প্রস্তাব করে দলটি। সরকারি দলের প্রার্থীর এজেন্ট ব্যতীত অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের পোলিং এজেন্ট ভোটকেন্দ্রে অবস্থান করতে পারে না। তাই  আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পোলিং এজেন্ট ব্যবস্থা বাতিল করার দাবি জানিয়েছে দলটি। এছাড়া তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচন কমিশনের গোপন তালিকা থেকে জনপ্রশাসন, স্বরাষ্ট, তথ্য এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সচিব নতুনভাবে নিয়োগ করতে হবে বলেও দলটি দাবি জানিয়েছে।
এছাড়াও দলটি জানায়, ইসির ৩০০ আসনে ইভিএম ব্যবহারের সক্ষমতা রয়েছে বলে আমরা মনে করি না জানিয়ে দলটি জানায়, তথাপি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যদি ইভিএম ব্যবহার করা হয়, সেক্ষেত্রে আমরা ডিজিটাল পেপার অডিট ট্রেইল ব্যবহারের পাশাপাশি পেপার অডিট ট্রেইল সংযুক্ত করার দাবী জানাচ্ছি।

বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ:

নির্বাচন কমিশনকে সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে; সংবিধানে নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী বিভাগের সহায়তা করার কথা বলা রয়েছে বলে দলটি মনে করিয়ে দেয়।

বাংলাদেশ কংগ্রেস-এর ১৬ দফা:

একাধিক দিনে ভোটে না, নির্বাচনের সময়ে স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে রাখা,  তফসিল ঘোষণার পর জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিপরিষদ কার্যকর থাকবে না, ওই সময়ে যে সরকার থাকবে তা ‘নির্বাচনকালীন সরকার’ হিসেবে গণ্য করার প্রস্তাব করেছে দলটি। এছাড়াও সকল প্রকার নির্বাচনকে নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত করতে এবং পরিচালনার দায়িত্ব এককভাবে নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যাস্ত করতে প্রস্তাব দেওয়া হয়।

দলটি আরও প্রস্তাব রাখে- ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর বিষয়ে বাংলাদেশ কংগ্রেসের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইভিএম-এর অবস্থান ও পরিচালনায় গোপনীয়তা বজায় রাখতে হবে এবং ভোট প্রদানের পর প্রতীকসহ মুদ্রিত টোকেন প্রদান পদ্ধতি চালু করতে হবে।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট- এর ৯ দফা:

নির্বাচনকালীন সময়ে পাঁচটি মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে রাখা, জেলা প্রশাসকের পরিবর্তে নির্বাচন কর্মকর্কতাকে রিটার্নিং কর্মকর্তা, ব্যালট পেপারে ভোট নেওয়া,  ৩৩% নারী নেতৃত্বে বিধান সংশোধনের সুপারিশ দলটির। জনগণের টাকা আত্মসাৎকারী কোনো ঋণখেলাপী যেনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারে সে ব্যাপারে কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহণসহ এ ধরনের কেউ প্রার্থী হলে তার প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে ইত্যাদি।

বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট):

নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে জাতীয় পরিষদ গঠনের সুপারিশ করেছে দলটি। এই পরিষদ হবে সব দলের সমন্বয়ে; দলটি জানায়, নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের দলীয় সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকদের সমন্বয়ে গঠিত হবে জাতীয় পরিষদ৷ 
 
নির্বাচনকালীন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক সংসদ ভেঙে দিয়ে উক্ত প্রাতিষ্ঠানিক রূপে সম্মিলিত রাজনৈতিক ফোরাম বা জাতীয় পরিষদে দলীয় প্রধানদের মধ্যে যিনি ইতোপূর্বে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন, এমন কাউকে 'নির্বাহী প্রধান’ নিযুক্ত করা মাত্রই ওই সর্বদলীয় ফ্রন্টই অন্তর্বর্তী বা নির্বাচনকালীন প্রাতিষ্ঠানিক সরকারের ভূমিকায় Suo Moto Government হিসেবে সক্রিয় হয়ে উঠবে। 

খেলাফত মজলিসের ৪ দফা:

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, ইভিএমের ব্যবহার না করা, প্রতিটি বুথে সিটিটিভি ক্যামেরা, সংসদ ভেঙ্গে দেওয়ার সুপারিশ করেছে দলটি। এছাড়া ইভিএম যেহেতু অদ্যাবধি জনগণ ও রাজনীতিকদের আস্থা অর্জন করতে পারেনি তাই আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম পরিহার করা। তবে, ভোটার ভেরিফাইএবল পেপার ট্রেলার সংযুক্ত করে স্থানীয় নির্বাচনে পরীক্ষা করা যেতে পারে বলে জানায় দলটি।

বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির ২০ দফা: 

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকারের তত্ত্বাবধানে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচন প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, অর্থ, তথ্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় নির্বাচন কমিশনের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হবে; দল নিবন্ধনের শর্ত সহজ করা; নির্বাচনী ব্যয় মাত্র ৫ লাখ টাকা নির্ধারণ; ‘না’ ভোট চালুর প্রস্তাব করেছে দলটি। এছাড়া নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাই রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করবেন; বিদ্যমান আসনভিত্তিক প্রত্যক্ষ নির্বাচনের পাশাপাশি দল বা জোটের সারাদেশে প্রাপ্ত ভোটের সংখ্যানুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধি নির্বাচনের ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন বলেও দলটি প্রস্তাব করে।

ইসলামী ঐক্যজোট এর ১১ দফা:

নির্বাচনকালীন সরকারের আকার সীমিত করা, ৩০ জনের বেশি প্রার্থী দিলে বেতার-টিভিতে প্রচারের সুযোগ, আস্থা অর্জন করে ইভিএমের ব্যবহারের সুপারিশ করেছে দলটি।

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস-এর ১৫ দফা:

স্বরাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে ন্যস্ত করা, ভোটের ৭ দিন আগে সেনা মোতায়েন, তফসিল ঘোষণার আগে সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া, ব্যালট পেপারে ভোট করা, ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল) এর ৯ দফা:

ইসি সংলাপে দলটির পক্ষ থেকে বর্তমান সাংবিধানিক সরকারের অধীনে নির্বাচন, নির্বাচনের সময় স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে ন্যস্তকরণ, ইভিএম চালু ও যুদ্ধাপরাধীদের ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়া, নির্বাচনে ধর্মের ব্যবহার ও টাকার খেলা বন্ধ করা বিষয়ে দলটির সুপারিশ করে।

গণতন্ত্রী পার্টির ৫ দফা:

স্বাধীনতা বিরোধী দল, যুদ্ধাপরাধীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ চায় না দলটি। এছাড়া ধর্মের অপব্যবহার নিষিদ্ধ, ইভিএমর ব্যবহারের পক্ষে মত দেয় দলটি।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির ১৩ দফা:

নির্বাচনের ৩ মাস পূর্ব থেকে এবং নির্বাচনের পরবর্তী কমপক্ষে একমাস পর্যন্ত মেজিট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন চায় দলটি। নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠন, ভোট কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা, বিভাগওয়ারি নির্বাচন, ইভিএম চালু স্বল্প পরিসরে, ‘না’ ভোট চালুর সুপারিশ করেছে।

গণফ্রন্ট:

সরকারি ও বিরোধী দলের সদস্যদের মতো বিমান-রেল, হাসপাতাল ও কারাগারের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া, সংসদের আসন সংখ্যা ৩৫০/৪৫০ করা, এক পোস্টার এক মঞ্চে প্রচার, দলগুলোকে আর্থিক অনুদান, নির্বাচনকালীন রাজনৈতিক সরকার, স্বল্প পরিসরে ইভিএম চালুসহ  ২২ দফা পরামর্শ দিয়েছে দলটি।

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন-এর ৪০ দফা:

জন প্রশাসন ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে ন্যস্ত, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া, সংরক্ষিত মহিলা আসন বিলুপ্ত করা, ইভিএম ব্যবহার না করা, সংসদ ভেঙ্গে নির্বাচন, ‘না’ ভোট চালু, দলের সব কমিটিতে ৩৩% নারী প্রতিনিধিত্ব রাখার বাধ্যবাধকতা বিলুপ্ত করার দাবি করেছে দলটি।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ এর ১২ দফা: 

সংধিান অনুযায়ী নির্বাচন, ইসিকে রাজনৈতিক বিতর্কে না জড়ানো, অসাংবিধানিক দাবিকে প্রশয় না দেওয়া, বিদেশি কূটনৈতিকদের অযাচিত নাক গলানোকে প্রশ্রয় না দেওয়া, প্রশাসনের কাজে প্রতিরক্ষাবাহিনীকে বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের অধীনে ব্যবহার করার পরামর্শ দেয় দলটি।

ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের ৯ দফা:

প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা না করে নিজস্ব লোকবল নিয়োগ, তিন দফায় ভোট করা, ইভিএমের যান্ত্রিক ত্রুটি-জটিলতা নিরসনের প্রস্তাব করেছে।

বাংলাদেশ মুসলীম লীগ এর ১৯ দফা: 

ভোটের তিন মাস আগে সংসদ বিলুপ্ত করা, ইভিএম ব্যবহার না করা, ‘না’ ভোট পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করেছে দলটি।

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ১২ দফা প্রস্তাব:

সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন; নির্বাচনকালীন স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইসির অধীনে ন্যস্ত;  আনুপাতির প্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা, ত্রুটি দূর করে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তাব করেছে দলটি।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ১১ দফা:

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার, ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সেনা মোতায়েন, স্বরাষ্ট্র ও জন প্রশাসন ইসির অধীনে ন্যস্ত, সব আসনে ব্যালট পেপার ব্যবহার, ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধহীন দলের নিবন্ধন বাতিলের সুপারিশ করেছে দলটি।

বিকল্প ধারা বাংলাদেশ এর ৭ দফা প্রস্তাব: 

সবকেন্দ্রে ইভিএম, প্রতি কেন্দ্রে সামরিক বাহিনীর সদস্য নিয়োগের প্রস্তাব করেছে দলটি।

ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ( এনপিপি) এর ১৬ প্রস্তাব:

স্বল্প সংখ্যক আসনে ইভিএম ব্যবহার, ভোটকেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা, প্রার্থীদের জামানত বাড়ানো, বিনামূল্যে ভোটার তালিকা সরবরাহ, নিবন্ধিত দলের ৩ বছরের সক্রিয়দের প্রার্থী করার প্রস্তাব করেছে দলটি।

জাকের পার্টি’র ৪ প্রস্তাব: 

দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হয়রানিমূলক আচরণ বন্ধ; ইভিএমে ভোট নয়, বরং ঘরে বসে ইভোটিংয়ের মাধ্যমে ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা করার দাবি জানায় দলটি।

যে পরামর্শ দিলো কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ:

নির্বাচনকালীন সরকার ও প্রশাসন দল নিরপেক্ষ না হলে কোনোভাবে নির্বাচন সুষ্ঠু করা সম্ভব নয়। জন আস্থা তৈরি ও ইসির দায়িত্ব পালনে মেরুদণ্ড শক্ত করে ভূমিকা নেওয়ার পরামর্শ দেয় দলটি। কোন দল নির্বাচনে আসলো বা না আসলো সেটি বড় কথা নয়, ভোটাররা অংশগ্রহণ করলেও নির্বাচন ভালো হবে বলে জানায় দলটি। 

গণফোরাম এর ১০ প্রস্তাব: 

নির্বাচনেকালে নিরপেক্ষ সরকার ব্যবস্থা, নির্বাচনী প্রচারণায় প্রত্যেক আসনে সব প্রার্থীদের জন্য প্রজেনশন সভার সুপারিশ।

বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- বাংলাদেশ ন্যাপ এর ১১ দফা প্রস্তাব: 

দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা বৃদ্ধি; প্রাপ্ত ভোটের আনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব, তফসিল ঘোষণার পর সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া, সংসদে ইভিএম ব্যবহার না করার প্রস্তাব করেছে দলটি।

বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন এর ১১ দফা: 

সংসদ নির্বাচন ২/৩ ধাপে করা যেতে পারে; যেন প্রতি কেন্দ্রে সেনা মোতায়েন করা যায়। সংসদ নির্বাচনে ১৫০ আসনে ইভিএম; ১৫০ আসনে ব্যালট পেপার এবং স্থানীয় নির্বাচনে শতভাগ ইভিএম ব্যবহার করা যেতে পারে। নির্বাচনী ব্যয় ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা যেতে পারে বলে মতামত দিয়েছে।

সংলাপ চলাকালে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, সব দলের প্রস্তাবগুলো বিবেচনার জন্য পর্যালোচনা করবেন। এগুলো ফেলে রাখবেন না। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের যাবতীয় পদক্ষেপ নেবেন। সংলাপে পাওয়া প্রস্তাবগুলো দলীয় প্রধানদের কাছেও পাঠানোর পাশাপাশি সরকারের কাছেও পৌঁছে দেবেন বলেও জানান তিনি।

রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের মধ্যেও সংলাপ করে চলমান সংকট উত্তোরণেরও পরামর্শ দেন সিইসি। 

দায়িত্ব পালনে রাজনৈতিক দলগুলো সহায়তা চেয়ে সিইসি বলেন, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান খুব সহজ নয়। আমরা বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সদিচ্ছা থাকলে কাজটা যতই কঠিন হোক-জটিল হোক, আমরা সম্মিলিতভাবে সুসম্পন্ন করতে সক্ষম হব।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি নতুন কমিশন নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। পরদিন ২৭ ফেব্রুয়ারি শপথ নিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি অফিস শুরু করে কাজী হাবিবুল আউয়ায় কমিশন। এরপর ১৩ মার্চ দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবী, ২২ মার্চ নাগরিক সমাজ, ৬ এপ্রিল প্রিণ্ট মিডিয়ার সম্পাদক/সিনিয়র সাংবাদিক, ১৮ এপ্রিল ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধান নির্বাহী/প্রধান বার্তা সম্পাদক/সিনিয়র সাংবাদিক, ৯ জুন নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার প্রতিনিধি এবং ১২ জুন নির্বাচন বিশেষজ্ঞদের সাথে মতবিনিময় করে কমিশন। 

এছাড়া প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে ইভিএম নিয়ে ইতোমধ্যে মত বিনিময় করেছে কমিশন। এখন আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কের মধ্যে যন্ত্রটি প্রদর্শন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কারিগরি বিষয়ে প্রশ্নোত্তর, মত বিনিময়ের জন্য রাজনৈতিক দলগুলো সঙ্গে ১৯, ২১ ও ২৮ জুন তিন দফায় নিবন্ধিত ৩৯ টি দলকে ডেকেছিল কমিশন। সেই মতবিনিময় সভায় ২৮টি দল অংশ নেয়। বাকি ১১টি দল ইসির ডাকে সাড়া দেয়নি। 

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। আর প্রথম সংসদ অধিবেশন বসে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি। সংবিধান অনুযায়ী, সংসদের মেয়াদ প্রথম অধিবেশন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর। সেই হিসেবে ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত বর্তমান সংসদের মেয়াদ রয়েছে। নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সংবিধানে সংসদের মেয়ার শেষ হওয়ার আগের নব্বই দিনের কথা বলা হয়েছে। সেই হিসেবে ২০২৪ সালের ৩০ জানুয়ারির পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
 

বিভি/এইচকে

মন্তব্য করুন: