রাজধানীকে একখন্ড গাজায় পরিণত করেছিলো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার

ছবি: সংগৃহীত
গত বছর আজকের (১৯ জুলাই) এই দিনে ঢাকাসহ সারাদেশে কারফিউ জারি করে রাজধানীকে একখন্ড গাজায় পরিণত করেছিলো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার। ওই দিন শুধু রাজধানীর উত্তরাতে ১১ জনকে হত্যা করা হয়। সারাদেশে নির্মমভাবে পুলিশি ও আওয়ামী লীগের হামলায় ঝড়ে পড়ে ৫৬টি তাজাপ্রাণ। আহত হন ৬শর বেশি মানুষ। কারফিউ জারি করেও সেদিন ছাত্র জনতাকে দমাতে পারেনি আওয়ামী লীগ।
১৮ জুলাই রাত থেকে সারাদেশে বন্ধ ছিলো ইন্টারনেট সেবা বা কমপ্লিট শাটডাউন। ১৯ জুলাই সকাল থেকে সারাদেশে কারফিউ জারি। আন্দোলন হবে কীনা তা নিশ্চিত ছিলো না ছাত্র জনতা। আগেরদিন সরকার থেকে ঘোষণা দেওয়া হলো আন্দোলনে কোনো শিক্ষার্থী মারা গেলে দায় নেবে না সরকার। এমন পরিস্থিতি অনেক অভিভাবকই সন্তানদের বের হতে দেবে কীনা এমন দ্বন্দ্বে ছিলেন তারা। সেদিন শিক্ষার্থীরা পরিবারের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাষ্ট্রকে বেছে নিয়েছিলো।
১৯ জুলাই ২০২৪ সকাল থেকে রাজধানীর রামপুরা টিভি সেন্টার এলাকায় থেমে ছাত্র জনতা ও পুলিশ বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সাথে সংঘর্ষ হচ্ছিলো। রামপুরা বাজার এলাকা থেকেও আন্দোলনকারীরা এগিয়ে আসলে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী। মুহুর্তেই পুরো এলাকায় রূপ নেয় রণক্ষেত্রে। সেদিন রামপুরায় হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে যোগ দিয়ে এক চোখ হারান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী জসিম উদ্দিন। বলছিলেন ১৮ তারিখ থেকে ইন্টারনেট বন্ধ থাকায় কোনো ধরণের যোগাযোগ না করতে পারলেও ১৯ জুলাই যে যার জায়গা থেকে রাজপথে নেমে আসে। হাসিনা পতনে সবাই সেদিন দাড়িয়েছিলো একপথে একমতে।
জুমআর নামাজের পরপরই রাজধানীর বসুন্ধরা গেটের সামনে গগণবিদারী স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে জনতার মিছিল। মুখে ছিলো একটাই স্লোগান এক দফা এক দাবি হাসিনা তুই কবে যাবি?
ওই দিন আন্দোলনের সম্মুখযোদ্ধা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে বসুন্ধরা এলাকা পরিণত হয়েছিলো একখন্ডে গাজায়।
এদিকে, যাত্রাবাড়িতে সকাল থেকেই রাস্তায় অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। রাস্তা অবরোধ করে মিছিল নিয়ে এগিয়ে আসার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাধে পুলিশের সাথে। দুপক্ষের মধ্যে থেমে চলে সংঘর্ষ। মহাখালিতেও আন্দোলনকারী ও পুলিশের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। ব্যাপক ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলে মোহাম্মদপুরে। একে অপরকে লক্ষ্য করে টিয়ার শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও ইট পাটকেল নিক্ষেপ করছে পুলিশ ও বিক্ষোভকারীরা।
১৯ জুলাই ঢাকার বাইরে সহিংসতায় ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন মহাসড়ক বন্ধ করে আন্দোলনে নামেন ছাত্র-জনতা। পুলিশি হামলার প্রতিবাদে বিক্ষুদ্ধ জনতা সেদিন বিভিন্ন থানায় হামলা চালায়। দিনভর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে সারাদেশে সেদিন প্রাণ হারিয়েছিলো ৫৬টি তাজা প্রাণ।
পে অফ,
বিভি/এআই
মন্তব্য করুন: