লিবিয়া থেকে দেশে ফিরতে ২ হাজারের বেশি বাংলাদেশির নিবন্ধন

লিবিয়া থেকে দেশে ফেরার জন্য দুই হাজারের বেশি বাংলাদেশি নিবন্ধন করেছেন। পর্যায়ক্রমে এসব বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মুহাম্মদ খায়রুল বাশার।
সম্প্রতি লিবিয়ার মিসরাতা সফরে এক গণশুনানিতে দেওয়া বক্তব্যে এ তথ্য জানান তিনি। রবিবার (২০ জুলাই) ত্রিপলির বাংলাদেশ দূতাবাস এ তথ্য জানায়।
দূতাবাস জানায়, রাষ্ট্রদূতের নেতৃত্বে সম্প্রতি দূতাবাসের একটি দল লিবিয়ার মিসরাতা সফর করেন। সফরকালে রাষ্ট্রদূত মিসরাতা শহরে কর্মরত বাংলাদেশি পেশাজীবীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন। তিনি প্রবাসীদের সঙ্গে দূতাবাসের উদ্যোগে আয়োজিত একটি গণশুনানিতে উপস্থিত ছিলেন। গণশুনানিতে শতাধিক প্রবাসী তাদের অভিজ্ঞতা, মতামত ও সমস্যার কথা তুলে ধরেন।
রাষ্ট্রদূত গণশুনানিতে অংশগ্রহণ করে প্রবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা ও পরামর্শ দেন। তিনি জানান, দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট চালুর লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ চলছে এবং ২০২৫ সালের মধ্যেই এই সেবা চালু করা সম্ভব হবে আশা করা যাচ্ছে। এক্ষেত্রে কারও ই-পাসপোর্ট হারানো বা নষ্ট হলে, দূতাবাস থেকে সার্টিফিকেট সংগ্রহ করে স্থানীয় থানায় জিডি করার পরামর্শ দেন।
তিনি আরও জানান, লিবিয়ায় প্রবাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দূতাবাস স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে এবং দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। লিবিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় সবাইকে সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরা করার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত অবৈধ অভিবাসনের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সকলকে সচেতন করেন এবং বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর গুরুত্ব তুলে ধরেন। প্রবাসীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রবাসী স্কিমে অংশগ্রহণের জন্যও অনুরোধ জানান তিনি।
রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রবাসীদের ভিসা বা আকামা-সংক্রান্ত জটিলতা নিরসনে দূতাবাস স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা করছে। তিনি সব প্রবাসীকে তাদের আকামা নবায়নের ব্যাপারে সচেতন থাকার আহ্বান জানান। এবং দেশের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে লিবিয়ার স্থানীয় আইন-কানুন মেনে চলা এবং নৈতিক আচরণ বজায় রাখার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানান।
রাষ্ট্রদূত জানান, গত দেড় বছরে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) সহায়তায় ৫ হাজার ৫০০-এরও বেশি অভিবাসীকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে আরও দুই হাজারের বেশি অভিবাসী স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার জন্য নিবন্ধন করেছেন এবং পর্যায়ক্রমে এসব বাংলাদেশিদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
সফরকালে দূতাবাসের প্রতিনিধি দল মিসরাতা থেকে প্রাথমিক তালিকাভুক্ত ২১৮ জন অভিবাসীকে আইওএমের কাছে নিবন্ধন সম্পন্ন করতে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে। এ ছাড়া, দূতাবাসের পক্ষ থেকে মিসরাতা শহরে কনস্যুলার ও কল্যাণ সেবা প্রদান করা হয়। এ সময় মিসরাতা এবং এর আশপাশের শহরে বসবাসরত উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রবাসী দূতাবাসের বিভিন্ন সেবা গ্রহণ করেন।
বিভি/টিটি
মন্তব্য করুন: