• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

অনলাইনে সাড়া কম, সরেজমিনেই প্রবাসীদের এনআইডি সেবা দিতে চায় ইসি

প্রকাশিত: ২১:০০, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১

আপডেট: ২২:৪৭, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১

ফন্ট সাইজ
অনলাইনে সাড়া কম, সরেজমিনেই প্রবাসীদের এনআইডি সেবা দিতে চায় ইসি

সংগৃহীত ছবি

প্রাথমিক পর্যায়ে মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অনলাইনে ভোটার হওয়ার সুযোগ দিয়েছিলো নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু এতে বেশি সাড়া পায়নি কমিশন। এরমধ্যে করোনা মহামারির কারণে এই কার্যক্রম স্থগিতও রাখা হয়েছে। যেহেতু অনলাইনে এই বিষয়ে সাড়া কম, তাই এবার বিদেশে সরেজমিনে গিয়ে প্রবাসীদের ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা দিতে চায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার তালিকা এবং নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় তথ্য প্রযুক্তির প্রয়োগ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান ও নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শাহাদাত হোসেন চৌধুরী’র সভাপতিত্বে এই সংক্রান্ত একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিদেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার নিবন্ধন এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
 
এই বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক একেএম হুমায়ূন কবীর বাংলাভিশন ডিজিটালকে বলেন, সম্প্রতি লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি আমাদেরকে এই বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। তিনি চিঠিতে বলেছেন, সেখানে অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করার জন্য তাঁর অফিস আমাদেরকে ব্যবহার করতে দেবেন। বিষয়টি নিয়ে আমাদের নিজেদের মধ্যে কথা হয়েছে। কমিশন বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।

তিনি বলেন, কোন প্রক্রিয়ায় সেখানে এই কাজ করা যায়, কতো জন লোকবল লাগবে, এসব নিয়ে কার্যক্রম চলছে। এছাড়া এই বিষয়ে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংগে বসতে হবে।

লন্ডনের রাষ্টদূতের অফিসের তথ্য মতে, সেখানে ছয় লাখের উপরে ভোটারযোগ্য প্রবাসী বাংলাদেশি রয়েছেন। 

সূত্র জানায়, লন্ডনে পাইলট হিসেবে নিবন্ধনের কাজ করবে ইসি। এতে সফল হলে পুরো ইংল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও এই কার্যক্রম চালু করা হবে। 

অনলাইনে ভোটার হওয়ার সুযোগ দেওয়ার পর থেকে ইসি’র দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় ৪৮ জন, সৌদি আরবে ৩৯ জন, সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫৩০ জন ও যুক্তরাজ্যে ১২১ জন প্রবাসী বাংলাদেশি অনলাইনে ভোটার হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

সূত্র জানায়, প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা অনলাইনে আবেদন করেছেন তাদের তথ্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা/থানা নির্বাচন অফিসে পাঠানো হয়েছে। ইসি’র টিম বিদেশে গিয়ে ছবি, দশ আঙুলের ছাপ, চোখের আইরিশের প্রতিচ্ছবিসহ আনুসাঙ্গিক কাজ করার কথা ছিলো। কিন্তু করোনা’র কারণে তা আপাতত বন্ধ আছে।

জানা যায়, ৪০টি দেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার করতে চায় কমিশন। ইতিমধ্যে প্রবাসীদের এনআইডি সেবায় ফি নির্ধারণ করা যায় কি না সেটিও যাচাই-বাছাই করছে ইসি।

ইসি’র তথ্য অনুযায়ী, ২০০৮ সাল থেকে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও নাগরিকদের এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর সেই সময়ের দুই নির্বাচন কমিশনার প্রবাসীদের ভোটার করার এবং ভোট নেওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য বিদেশও সফর করেন।

এর ধারাবাহিকতায় ২০১০ সালে ভোটার তালিকা আইন সংশোধন করা হয়, যার লক্ষ্য ছিলো বিদেশে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিকদের ভোটার তালিকায় এনে তাদের ভোট দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। কিন্তু তা না হওয়ায় এবং দেশে না ফিরে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যদিও কমিশন মাঠপর্যায়ে প্রবাসীদের ভোটার করা বা এনআইডি সেবা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেওয়ার জন্য বারবার নির্দেশনা দিয়েছে। অবশেষে ২০১৯ সালের ৫ নভেম্বর থেকে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা শুরু হয়।

এখন প্রবাসী বাংলাদেশি ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে বৈধ পাসপোর্ট, বিদেশি পাসপোর্টধারী হলে দ্বৈত নাগরিকত্বের সনদ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতিপত্র, শনাক্তকারী প্রবাসী বাংলাদেশির পাসপোর্টের কপি, সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হয়।

২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন ও এনআইডি সংক্রান্ত সব সেবা ফ্রি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে প্রাথমিকভাবে ভোটার নিবন্ধন ও প্রথমবার ফ্রিতে এনআইডি দিলেও ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে এনআইডি সংশোধন করতে, এনআইডি নষ্ট হলে পুনরায় তুলতে বা হারানো এনআইডি সেবা নিতে হলে নাগরিকদের ফি দিতে হচ্ছে। 

সর্বশেষ ভোটার তালিকা হালনাগাদের তথ্য অনুযায়ী, ইসি’র দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে ১১ কোটি ১৭ লাখ ২০ হাজার ৬৬৯ জন ভোটার রয়েছে। 

বিভি/এইচকে/এসডি

মন্তব্য করুন: