• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

বিদায়ী বছরে দেশ হারিয়েছে অনেক গুণী মানুষকে (ভিডিও)

মিরাজ হোসেন গাজী

প্রকাশিত: ১১:৪৪, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১

আপডেট: ১১:৪৫, ২৯ ডিসেম্বর ২০২১

ফন্ট সাইজ

বিদায়ী বছরে দেশ হারিয়েছে বেশ কয়েকজন গুণী মানুষকে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন জাতীয় অধ্যাপক, সাহিত্যিক, রাজনীতিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক। ২০২১-এ গত হওয়া  এমন গুণীজনদের পরম শ্রদ্ধায় স্মরণ করেছে বাংলাভিশন ডিজিটাল।

অতিমারি করোনা’র ছোবলসহ নানান কারণে গত হয়েছেন অনেক বিশিষ্ট নাগরিক। বছরের শেষ দিকে ৩০ নভেম্বর মারা যান জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। ভাষা সৈনিক, মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কর্মজীবনে অসামান্য অবদানের জন্য পান একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও বাংলা একাডেমির সভাপতিসহ জাতীয় নানান গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। 

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক মারা যান ১৫ নভেম্বর। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন তিনি। ১৯৭০-এ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৯৯-এ একুশে পদক ও ২০১৯-এ স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হক।

২০২১-এ রাজনৈতিক অঙ্গন হারিয়েছে বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে। ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ-এর মৃত্যু হয় ১৬ মার্চ। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও উপ-রাষ্ট্রপতি এবং একাধিকবার মন্ত্রী ছিলেন তিনি। আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবেও বেশ সুনাম ছিলো মওদুদ আহমদ-এর। আমৃত্যু বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ছিলেন বর্ষিয়ান এই রাজনীতিক। 

৪ মার্চ মারা যান দেশের প্রথম মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। ২০০৯-এ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর, প্রথমে জনপ্রশাসন ও ২০১৪-এ তাঁকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বছরের ২ অক্টোবর মারা যান জাতীয় পার্টির মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ- ডাকসুর সাবেক জিএস জিয়াউদ্দিন বাবলু চট্টগ্রাম ৬ ও ৯ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। এরশাদ সরকারের আমলে একাধিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। 

বছরের শেষ দিকে ২৭ ডিসেম্বর মারা যান ফেনির আলোচিত নেতা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলির সদস্য জয়নাল হাজারি। ১৯৮৬, ৯১ ও ১৯৯৬ তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য ছিলেন তিনি।

সারাহ বেগম কবরী। চলচ্চিত্রের মিষ্টি মেয়ে কবরি নামেই যিনি বেশ পরিচিত। ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের অভিনয় জীবনে দেড় শতাধিক চলচ্চিত্রে সরব উপস্থিতি ছিলো তাঁর। ২০০৮-এ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন কবরী। বিদায়ী বছরের ১৭ এপ্রিল মারা যান তিনি।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাবেক আমীর জুনায়েদ বাবুনগরী মারা যান বছরের ১৯ আগস্ট। সংগঠনের প্রতিষ্ঠার সময় থেকেই তিনি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের শীর্ষ এই আলেম ৭৪ বছর বয়সে মারা যান। 

সাংস্কৃতিক অঙ্গন থেকেও হারিয়ে গেছেন গুণী বেশ কয়েকজন। ২০ ফেব্রুয়ারি মারা যান জনপ্রিয় অভিনেতা এটিএম সামছুজ্জামান। শ্রেষ্ঠ অভিনেতা, শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেতা, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও একুশে পদকে ভূষিত হন অভিনেতা, পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার এটিএম সামছুজ্জামান। 

আরেক গুণী ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ইনামুল হক মারা যান ১১ অক্টোবর। বুয়েটের সাবেক শিক্ষক, নাট্যকার ও নির্দেশক ইনামুল হক ছিলেন নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

জনপ্রিয় ফোক ও গণসঙ্গীত শিল্পী ফকির আলমগীর মারা যান ২৩ জুলাই। ১৯৫০-এর ২১ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার কালামৃধায় জন্ম তাঁর। একুশে পদকপ্রাপ্ত ফকির আলমগীর-এর রয়েছে অসংখ্য কালজয়ী গান।

বিশিষ্ট রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মিতা হক চির বিদায় নেন ১১ এপ্রিল। তিনি ছিলেন বাংলাদেশ বেতারের সর্বোচ্চ গ্রেডের তালিকাভুক্ত শিল্পী। ২০০৬-এ শিল্পকলা পদক, ২০২০-এ একুশে পদকে ভূষিত হন এই গুণী। 

বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ মারা যান, বছরের শুরুর দিকে ২৩ ফেব্রুয়ারি। সাহসী এই কলম সৈনিকের লেখনিতে রাজনীতি ও সমাজের স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যেতো। বাংলা সাহিত্যে সামগ্রিক অবদানের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান সৈয়দ আবুল মকসুদ। 

বছরের শেষ দিকে গণমাধ্যম হারিয়েছে বিশিষ্ট সাংবাদিক রিয়াজউদ্দিন আহমেদকে। একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য এই সাংবাদিক দ্য নিউজ টুডে পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক। তিনি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাব ও অবিভক্ত বিএফইউজের সভাপতি। সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য ১৯৯৩-এ একুশে পদক পান রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ।

প্রথম আলোর যুগ্ম-সম্পাদক মিজানুর রহমান খান করোনায় আক্রান্ত হবার পর মারা যান ১১ জানুয়ারি। দীর্ঘ ৩ দশকের সাংবাদিকতায় মিজানুর রহমান খান সংবিধান ও আইন বিষয়ে লেখালেখি করেন। তাঁর লেখা বইয়ের মধ্যে সংবিধান ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিতর্ক, ১৯৭১ আমেরিকার গোপন দলিল এবং মার্কিন দলিলে মুজিব হত্যাকাণ্ড উল্লেখযোগ্য।

 

বিভি/রিসি 

মন্তব্য করুন: