• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

আমাদের বিচার চাইতেও বাধা দেওয়া হয়েছে, ব্যাশেলেকে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১৯:২৫, ১৭ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
আমাদের বিচার চাইতেও বাধা দেওয়া হয়েছে, ব্যাশেলেকে প্রধানমন্ত্রী

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ সামরিক শাসনামলে বাংলাদেশ মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন প্রত্যক্ষ করেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার গণভবনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাশেলে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাকে এসব কথা বলেন। খবর: বাসস।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় বলেন, আমি ও আমার ছোট বোন এ হত্যাযজ্ঞ থেকে বেঁচে গিয়েছিলাম কারণ বিদেশে ছিলাম। ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার বন্ধ করতে তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকার ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল। ওই অধ্যাদেশের কারণে আমাদের বিচার চাইতেও বাধা দেওয়া হয়।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী মিশেল ব্যাশেলেট বলেন, ‘তৎকালীন সামরিক সরকার বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করেছিল।’

ইহসানুল করিম জানান, ‘বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এবং মিশেল ব্যাশেলে বর্তমান বিশ্ব সমস্যা নিয়ে আলোচনা করেন। তারা একমত হন যে চলমান কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা ও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বজুড়ে সংকট তৈরি করেছে।’

রোহিঙ্গা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গারা তাদের নাগরিক তা মিয়ানমার অস্বীকার করে না। তবে তারা এখনও তাদের বাস্তুচ্যুত নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে সাড়া দেয়নি। মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশ কখনও কারো সঙ্গে যুদ্ধ চায় না।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই চুক্তির পর ৬২ হাজার শরণার্থী বাংলাদেশে ফিরেছে এবং ১৮শ সশস্ত্র ক্যাডার আত্মসমর্পণ করেছে।’

মিশেল ব্যাশেলে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের জন্য শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন।

প্রধানমন্ত্রী জবাবে বলেন, ‘ভাসান চরে রোহিঙ্গাদের জন্য সেই ব্যবস্থা করা যাবে।’

জাতিসংঘের হাইকমিশনার বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে জাতিসংঘ আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে এবং এ লক্ষ্যে কিছু পর্যবেক্ষণ দিয়েছে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিনি বিষয়টি জানেন এবং বাংলাদেশ কাউকে সন্ত্রাসবাদের জন্য তার মাটি ব্যবহার করতে দেবো না।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরে বলেন, ‘পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের উন্নয়নে অবদান রাখছে। আমরা কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প স্থাপনের পাশাপাশি দেশের উন্নয়নের জন্য কৃষির ওপর জোর দিচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ১ দশমিক ৮৭ লাখেরও বেশি পরিবার বিনামূল্যে বাড়ি পেয়েছে। কারণ, সরকার প্রতিটি গৃহহীন এবং ভূমিহীন মানুষকে আবাসন প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে।’

মিশেল ব্যাশেলেট বৈষম্য দূর করার জন্য বাংলাদেশের এসডিজি বাস্তবায়নের অগ্রগতি এবং কাজের প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার উপকূলীয় অঞ্চলে বনায়নের ওপর জোর দিয়েছে। কারণ উপকূলীয় এলাকার মানুষ জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে রয়েছে।’

এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়ক গুয়েন লুইস উপস্থিত ছিলেন।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন: