• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪

প্লাস্টিক দূষণে আবারও শীর্ষে কোকা-কোলা, প্রাণ, পেপসিকো এবং ইউনিলিভার

প্রকাশিত: ১৪:১২, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১

আপডেট: ১৪:১৭, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১

ফন্ট সাইজ
প্লাস্টিক দূষণে আবারও শীর্ষে কোকা-কোলা, প্রাণ, পেপসিকো এবং ইউনিলিভার

সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে প্লাস্টিক দূষণকারীর তালিকায় এবারও শীর্ষে রয়েছে কোকা-কোলা কোম্পানি। এরপরে রয়েছে  প্রাণ আরএফএল লিমিটেড, পেপসিকো, নেসলে এবং ইউনিলিভার বাংলাদেশ।

মাঠ পর্যায়ে জরিপ শেষে এই তথ্য প্রকাশ করেছে এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন - এসডো। একই গবেষণা সংস্থার করা গত তিন বছরের জরিপেও উঠে এসেছিলো একই তথ্য।
 
‘দ্যা বিটার ট্রুথ অব প্লাস্টিক পলিউশন’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর) একটি ভার্চ্যুয়াল সেশনের মাধ্যমে প্রকাশ করে এসডো। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই বছর এসডো ঢাকা এবং ময়মনসিংহ শহরে টানা ৩ দিন এই ব্র্যাণ্ড অডিট পরিচালনা করেছে; যেখানে প্রায় ১৯,৯৬৩ পিস প্লাস্টিক বর্জ্য পাওয়া গেছে, যার মোট ওজন প্রায় ১৩২ কেজি এবং এর মধ্যে ১১টি আন্তর্জাতিক এবং ৩৩টি দেশীয় প্যারেন্ট কোম্পানিকে চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য কোকা-কোলা, পেপসিকো, নেসলে, ইউনিলিভার, পারফেটি ভ্যান মেল্লে, বোম্বে সুইটস অ্যান্ড কোং লিমিটেড, প্রাণ আরএফএল লিমিটেড, স্কয়ার ফুডস অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেড, আকিজ গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ ইত্যাদি।

ভার্চ্যুয়াল সেশনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সরকারের সাবেক সচিব এবং এসডো চেয়ারপারসন সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আবু জাফর মাহমুদ এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রাসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও এসডো’র টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড. আবুল হাসেম, সাবেক প্রধান বন সংরক্ষক  ও এসডো’র সিনিয়র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ পুলিশ-এর  সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি ও এসডো’র টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার মো. মোখলেসুর রহমান, টক্সিক লিঙ্ক-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর আলকা দুবে, বিএফএফপি'র গ্লোবাল কো-অর্ডিনেটর ভন হারনানদেজ, বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনপর সভাপতি শামীম আহমেদ, বাংলাদেশ পেট (পিইটি) ফ্লেক্স ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নাজমুল হাসান প্রমুখ।

 

সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ বলেন, “একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক শুধু পরিবেশের জন্যই নয়, মানুষের স্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। করপোরেশনগুলোকে তাদের দ্বারা সৃষ্ট প্লাস্টিক দূষণের দায় নিতেই হবে। এই কোম্পানিগুলোর অপুনঃব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পণ্যে ও স্যাশেতে আমাদের বাজার সয়লাব, যা আমাদের আরও হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।”

“টানা চার বছর প্লাস্টিক দূষণে এই বড় কোম্পানিগুলোই দোষী চিহ্নিত। যদিও কোম্পানিগুলো দাবি করে যে, তারা একটি পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু সত্য হলো- তারা এখনও কোনো যথার্থ সমাধানে আসতে পারছে না। কোকা-কোলা, পেপসিকো, ইউনিলিভার, প্রাণ প্রভৃতি বহুজাতিক করপোরেশনকে প্লাস্টিকের দূষণ রোধে একবার ব্যবহারের প্লাস্টিকের প্যাকেজিং ব্যবহার বন্ধ করতে হবে”, বলেন ইশতিয়াক উদ্দিন আহমেদ। 

ব্র্যান্ড অডিটের ফলাফল থেকে এটি স্পষ্ট যে, এই জনপ্রিয় করপোরেশনগুলোই আমাদের দেশে একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক দ্বারা সৃষ্ট দূষণের জন্য দায়ী। করপোরেশনগুলোর এই বিষয়ে সচেতন হওয়া উচিত এবং সুষ্ঠু সমাধানের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন সাবেক এই প্রধান বন সংরক্ষক।

এসডো'র নির্বাহী পরিচালক, সিদ্দিকা সুলতানা বলেন, যে প্লাস্টিকের প্যাকেজিং থেকে ডাই-অক্সিনের মতো রাসায়নিক পদার্থ পানি এবং খাদ্যে চলে যায়; যা এন্ডোক্রাইন সমস্যা, ক্যান্সার, জন্মগত ত্রুটি, ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা এবং শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। সরকারকে অবিলম্বে এই বিষয়ে জোর দিতে হবে।

এসডো'র মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন বলেন, "প্লাস্টিক দূষণের সমাধান হলো- জিরো ওয়েস্ট পদ্ধতি; যার মাধ্যমে প্লাস্টিকমুক্ত পৃথিবী অর্জন করা কেবল সহজই নয়, সম্ভবও।"

ব্র্যান্ড অডিট উদ্যোগটি ব্রেক ফ্রি ফ্রম প্লাস্টিক (বিএফএফপি) গ্লোবাল মুভমেন্ট দ্বারা পরিচালিত। ব্র্যান্ড অডিট মূলতঃ জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য এবং নির্মাতাদের একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষতিকর পরিণতি থেকে পরিবেশ রক্ষার জন্য পালন করা হয়।

বিভি/কেএস/এসডি

মন্তব্য করুন: