শাহবাগে জলবায়ু ধর্মঘটঃ দোষী দেশগুলোর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে প্রতিনিয়ত ক্ষতির দিকে ধাবিত হচ্ছে বিশ্ব। উষ্ণয়ণের কারণে বাড়ছে ভূপৃষ্টের তাপমাত্রা, হিমালয়ের বরফ গলে বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্টের উচ্চতা, বাড়ছে ঝড়-জলোচ্ছ্বাস। জলবায়ু পরিবর্তনে তেমন দায় না থাকলেও এতে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম সারিতে। তাই জলবায়ু পরিবর্তন রোধে বিশ্বব্যাপী ব্যবস্থাগ্রহণ, দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং দ্রুত এই পরিবর্তনে দোষী দেশগুলোর কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ের দাবিতে রাজধানীর শহাবাগে জলবায়ু অবরোধ করেছে পরিবেশবাদীরা।
রবিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে আন্তর্জাতিক জলবায়ু কর্ম দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা এবং ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে এই কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে নানান দাবির প্ল্যাকার্ড হাতে অংশ নেন তরুণরা।
এই সময় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে দেশের ঋতুবৈচিত্র্যে পরিবর্তন এসেছে। শরৎকালেও এখন শীতের দেখা মিলছে না। বরং কাঠফাটা রোদ পড়ছে। মাঝে মাঝে ঝড়ে পড়ছে কাল বৈশাখীর মতো বৃষ্টি। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে হচ্ছে বন্যাও। এর সবই জলবায়ু পরিবর্তনের দৃশ্যমান উদাহারণ।
তারা বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বাংলাদেশের দায় নেই বললেই চলে। অথচ ক্ষতির তালিকায় সবার সামনে রয়েছে আমাদের দেশ। দোষ না করে সাজা পাওয়ার কোনো মানে হয় না। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দেশের ক্ষতির দায় বিশ্ব মোড়লদের নিতে হবে। এবং তাদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করতে হবে।
দেশের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ দূষণ বন্ধে সরকারকে তৎপর হওয়ার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, দিন দিন জলাভূমির পরিমাণ কমায় আবহাওয়ার তাপমাত্রা বরাবরই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে থেকে বাঁচতে হলে প্রাকৃতিক পরিবেশ ধরে রাখতে হবে। তাই জলাভূমি রক্ষা, কলকারখানার দূষণ নিয়ন্ত্রণ, বৃক্ষ নিধন বন্ধ করে বেশি বেশি গাছ লাগানো এবং কীটনাশকের ব্যবহার কমানোর দাবি জানান বক্তারা।
পরে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের পক্ষ থেকে আট দফা দাবিও তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো:
১। নদী সংক্রান্ত হাইকোর্টের ২০০৯ ও সুপ্রিমকোর্টের ২০২০-এর রায়সমূহের সবগুলো নির্দেশনা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
২। জরুরি ভিত্তিতে বুড়িগঙ্গাসহ দেশের সব নদীতে ঠিকভাবে সীমানা নির্ধারণ, বেদখলকৃত নদীর জমি উদ্ধার ও দখল সম্পূর্ণভাবে উচ্ছেদ এবং নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে।
৩। নদীতে সব রকমের দূষণ বন্ধ করতে হবে।
৪। নদী থেকে অপরিকল্পিত সম্পদ আহরণ বন্ধ করতে হবে।
৫। নদীর জন্য ধ্বংসাত্মক অবৈজ্ঞানিক খননকাজ বন্ধ করতে হবে।
৬। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে কার্যকর ও সক্রিয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে গঠন করতে হবে।
৭। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী নদী কমিশন আইনকে পরিবর্তন করে শক্তিশালী ও কার্যকর আইনে পরিণত করতে হবে।
৮। বাংলাদেশ ও বিশ্বে কার্বন নিঃসরণ বন্ধ করতে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিভি/কেএস/রিসি
মন্তব্য করুন: