• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

নারদের পাশে আমরা দাঁড়াবো, বাংলাদেশ দাঁড়াবে

তুষার কান্তি সরকার

প্রকাশিত: ২০:৫০, ২২ আগস্ট ২০২২

ফন্ট সাইজ
নারদের পাশে আমরা দাঁড়াবো, বাংলাদেশ দাঁড়াবে

নারদ হালদার। জেলে পরিবারের সন্তান। ক্লাস ফাইভের পর আর পড়া হয়নি টাকার অভাবে। বাপ-দাদার সঙ্গে মাছ ধরতে গেছেন জালের নৌকায়। দুই টাকা এলেও তাতে সংসারের উপকার হয়। পেটের খিদে যেখানে বড়, লেখাপড়া সেখানে তুচ্ছ মনে হয়েছে ওদের কাছে।

যৌবনে জাল-নৌকা আর জীবনের প্রতি বিরক্ত হয়ে একদিন ঢাকা চলে আসেন নারদ। বাস্তবতার আগুনে পুড়ে কয়লা হয় দেহ-মন। প্রচণ্ড পরিশ্রম আর দিনের পর দিন উপোস থাকায় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। টিবিতে আক্রান্ত হন তিনি। মনের জোর আর বন্ধু-বান্ধবের সহযোগিতায় একসময় ভালো হয়ে ওঠেন। কিন্তু শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা থেকেই যায়। আবার টাকা রোজগারের চিন্তা। অক্লান্ত পরিশ্রম। দিনের পর দিন উপোস। আবার শরীর বিদ্রোহ করে। প্রচণ্ড অসুস্থতার পর ডাক্তাররা ওর রোগ নির্ণয় করেন। রোগের নাম পোস্ট টিউবারকিউলোসিস বি/এল লাঙ ব্রংকাইটাসিস (ফুসফুসের প্রায় ৫০ শতাংশ ড্যামেজ হয়ে গেছে।)

চিকিৎসা শুরু হয়। বন্ধু-বান্ধবদের সহযোগিতা আর ধার-দেনা করেও রোগ থেকে মুক্তি মেলে না। বক্ষব্যাধি হাসপাতাল অনেক চেষ্টা করেও রোগ মুক্তির বার্তা ওকে শোনাতে পারেনি। ফুসফুসের ৫০ শতাংশ নষ্ট। শারীরিক সক্ষমতাও নেই। ধুকে ধুকে মরা ছাড়া বাংলাদেশে ওর কোনো চিকিৎসা নেই।

৩৮ বছরের হাড্ডিসার নারদ এখন রাজবাড়ী জেলার রতনদিয়া গ্রামে থাকে। মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ও। ক্ষয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে। ও জানে, সামনে ওর নিশ্চিত মৃত্যু। তবু বাঁচার স্বপ্ন ওর চোখে-মুখে। ও এখন এক মুহূর্তও অক্সিজেন ছাড়া থাকতে পারে না। চলতে পারে না। বুক ভরে নিশ্বস নিতে পারে না। কথা বলতে প্রচণ্ড কষ্ট হয়। ঠাণ্ডা-গরমে সমস্যা হয়। কাশি দিলে গলগল করে রক্ত পড়ে। রক্ত বন্ধ করতে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকতে হয় ১০/১৫ দিন। নির্দিষ্ট ওষুধের সঙ্গে চলে কড়া এন্টিবায়োটিক। তখন ওর মুখের দিকে তাকানো যায় না। কষ্ট হয়, প্রচণ্ড কষ্ট!

মানুষ বাঁচতে চায়। নারদও চান। তাই বাঁচার স্বপ্ন নিয়ে যোগাযোগ করতে থাকেন ভারতে বিভিন্ন হাসপাতালে। একসময় সাড়া দেয় চেন্নাই এপোলো হাসপাতাল। আশ্বাস দেন তারা রোগ মুক্তির। বেঁচে থাকার মূল্য নির্ধারণ করেন সাড়ে ২৬ লাখ রুপি। মেজর দুটো অপারেশন হবে। একজনকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া, ওখানে থাকা-খাওয়া, পরবর্তী যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা... সবমিলিয়ে বাংলাদেশের ৩২ থেকে ৩৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। যে নিঃস্ব পরিবারের ৩৫ হাজার টাকা নেই সেই পরিবারটি কি করে ৩৫ লাখ টাকা জোগাড় করবে?

নারদের বেঁচে থাকার ইচ্ছে প্রবল। পরিবারের সামর্থ্য নেই, কিন্তু আমাদের আছে। বাংলাদেশের আছে। আমরা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছি পদ্মাসেতুর মতো সেতুও আমরা নিজেদের টাকায় করতে পারি। আমরা নারদকেও বাঁচাতে পারবো। দেশের ১৭ কোটি মানুষ যদি একটি করে টাকা দেয় তাহলে ১৭ কোটি টাকা। নারদের চিকিৎসায় এতো টাকার প্রয়োজন নেই। শুধু ৩৫ লাখ টাকা দরকার। আমরাই পারি নারদকে বাঁচিয়ে রাখতে, নারদের স্বপ্নকে সফল করতে। মাত্র ৩৫ লাখ টাকার বিনিময়ে মা ফিরে পাবে সন্তান, দাদা ফিরে পাবে ছোট ভাই, বোন ফিরে পাবে তার দাদাকে। এক জনমে এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে! 

নারদের পাশে আমরা দাঁড়াবো। বাংলাদেশ দাঁড়াবে। মানবতার জয় হবেই। 

নারদের জন্য সহায়তা পাঠানোর ঠিকানা:
নারদ হালদার, সোনালি ব্যাংক, কালুখালী শাখা- এসি নম্বর-২২১৩৭০১০১২৩৮২
নারদ হালদার, ডাস বাংলা ব্যাংক, কালুখালী শাখা- এসি নম্বর-৭০১৭৩১৭৭৪৯৬৩২
নগদ, বিকাশ, রকেট নম্বর- ০১৯৫৩১৩৭৩৩১ ও ০১৯৮৫৬৪৮৬১৪

লেখক: সম্পাদক. প্রকৃতিবার্তা

মন্তব্য করুন: