• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

স্কুলে শিশু মনোবিজ্ঞানী রাখা কি জরুরি নয়

মিজানুর রহমান খান

প্রকাশিত: ১৪:১১, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

আপডেট: ১৪:১২, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
স্কুলে শিশু মনোবিজ্ঞানী রাখা কি জরুরি নয়

নরসিংদীর এক স্কুল ছাত্রী ইউনিফর্ম ঠিক মতো পরে না যাওয়ায় একজন শিক্ষক তাকে বকা দেন। কেউ কেউ তাকে চড় মারা, বেত্রাঘাত করার কথাও বলেছেন। এতে মেয়েটি অপমান বোধ করে এবং স্কুল ছুটি হওয়ার পর সে দোকান থেকে ইঁদুর মারার বিষ কিনে খায়। এবং সোজা থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে নালিশ করে যে তার মৃত্যু হলে ওই শিক্ষক দায়ী হবেন। মেয়েটিকে পরে আর বাঁচানো যায় নি। 


কী মর্মান্তিক এক ঘটনা। খবরটা পড়ে কাল রাতে ঘুমাতেও পারিনি। কারণ আমারও এই বয়সের একটা কন্যা আছে। বারবার তার মুখটা ভেসে উঠছিল আর মনে হচ্ছিল আমিও তো তাকে মাঝে মধ্যে বকাঝকা করি।
অবাক হয়ে দেখলাম এই ঘটনা নিয়ে কোনো কথা বার্তা হলো না। রাষ্ট্রে, সরকারি, নীতি নির্ধারক, সংসদ, স্কুল, অভিভাবক কোনো পর্যায়েই এর কোনো অভিঘাত পড়লো না। এমনকি ব্যক্তি পর্যায়ে এটি কোনো উদ্বেগ তৈরি করেনি। করলে ফেসবুকে এর প্রতিক্রিয়া দেখতে পেতাম। অথচ ক্রিকেট নিয়ে মানুষের শোকের কোনো কমতি ছিল না।
কিন্তু এটা নিয়ে কথা বলা দরকার। কারণ আজ ওই মেয়েটির বেলায় এমন হয়েছে, কাল যে আমার কিংবা আপনার মেয়ের এমন হবে না কেউ কি তার গ্যারান্টি দিতে পারবে?

স্কুলে শাসনের ব্যাপারে নাকি আইন হয়েছে কিন্তু এর তো কোনো প্রয়োগ চোখে পড়ে না। একটা প্রশ্ন উঠতে পারে যে তাহলে কি ছাত্র ছাত্রীকে কিছু বলা যাবে না? অবশ্যই বলা যাবে, কিন্তু এমন ভাবে বলতে হবে যাতে সে অপমানিত বোধ না করে। সবার সামনে শাসন না করে, একজন শিক্ষার্থীকে আলাদা করেও শাসন করা যায়।
তার পরে আসে ইঁদুর মারার বিষ কেনার বিষয়টি। দোকান থেকে একটি কিশোরী এতো সহজেই বিষ কিনে ফেলতে পারলো? সে চাইলো আর পেয়ে গেল! এটা কী করে সম্ভব? 

পত্রিকায় দেখলাম মেয়েটির মা বলেছেন যে তিনি এর বিচার চান না। কারণ মেয়েটির আচরণ এরকমই। সে আগেও বিষ খেয়েছে। এখানে চলে আসে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়- শিশু মনোবিজ্ঞান। আমরা কি এই দিকটা নিয়ে ভাবি? কদিন আগে দেখলাম একজন কিশোরী অঙ্কে ফেল করে ছাদ থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করলো। ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজানা প্রাণ দিলো নিজের পিতাকে অভিযুক্ত করে সুইসাড নোট লিখে। এই বয়সটা খুব কঠিন একটা সময়। এমন বয়সে ছেলে মেয়েরা খুব নাজুক থাকে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কি এর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়? এসব বিষয়ে বাংলা ইংরেজির মতো আলাদা করে কোনো ক্লাস হয়? একটি বিদ্যালয়ে নানা ধরনের কর্মকর্তা কর্মচারী থাকেন, কিন্তু সেখানে একজন শিশু মনোবিজ্ঞানী বা শিক্ষা মনোবিজ্ঞানী রাখা কি জরুরি নয়? আছে কি কেউ?

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের ফেসবুক থেকে নেয়া

মন্তব্য করুন: