• NEWS PORTAL

  • মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

সাংবাদিকদের জন্য নতুন সান্ত্বনা পুরস্কার ‘হাইকোর্টকে ধন্যবাদ’

মেহেদী হাসান অর্নব

প্রকাশিত: ১৩:১৪, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
সাংবাদিকদের জন্য নতুন সান্ত্বনা পুরস্কার ‘হাইকোর্টকে ধন্যবাদ’

‘সাংবাদিক তথ্য খুঁজবেই, এতে অপরাধের কিছু নেই- হাইকোর্ট’  ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি ফেনীর নুসরাত হত্যা মামলায় সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের মোবাইলে নুসরাতের জবানবন্দি সংক্রান্ত ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে হাইকোর্ট এ কথা বলেছিলেন।

সম্প্রতি রাজশাহীতে এটিএন বাংলার সাংবাদিক ও ক্যামেরা পারসনের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলার পর গত বছর হাইকোর্টের করা এ উক্তিটিই আবার নতুন করে ফুলিয়ে-ফাপিয়ে প্রচার করছেন সাংবাদিকরা। এটা প্রচার করে অনেক সাংবাদিকই নিজেকে নিজে সান্ত্বনা দেওয়ার বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছেন। আমার কাছে এটাকে অনেকটা লটারিতে বা প্রতিযোগিতায় বিজয়ী বা কোনো স্থান অর্জন করতে না পেরে পাওয়া সান্ত্বনা পুরস্কারের মতোই লাগছে!

অথচ যদি একটু চিন্তা করি তবে দেখা যাবে, হাইকোর্টের এই মূল্যায়নটি সাংবাদিকদের গলার কাঁটা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক।  কারণ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কোনো সরকারি, বেসরকারি, প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের  অনুমতি ছাড়া ছবি তোলা, ভিডিও ধারণ করা যাবে না। এক কথায় বলতে গেলে সংবাদ সংগ্রহই করা যাবে না ঐ প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছাড়া। এটা অনেকটা চোরের অনুমতি নিয়ে চুরির ছবি তোলার মতো অদ্ভুত বিষয়!

যা হোক আমরা এটা নিশ্চিত গত বছর হাইকোর্টের করা ঐ মন্তব্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। বলাবাহুল্য,  হাইকোর্টের ঐ কথাটি নিছক একটি মন্তব্য বা মূল্যায়ন মাত্র, কোনো আইন কিন্ত নয়! তাহলে হাইকোর্টের ঐ মূল্যায়ন তো সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট নয়। বরং সাংবাদিকদের কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষার জন্য যথাযথ ও সুনির্দিষ্ট  আইন প্রণয়নই অতীব জরুরি। সে আইনের দাবিতে সাংবাদিকদের প্রয়োজনে মাঠে নামা উচিত। 

কিন্ত না, বাস্তবে দেখা যায় অধিকাংশ সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় অন্য কোনো সাংবাদিক দলের ইন্ধন কিংবা অপতৎপরতা থাকে। আর এমনটা চলতে থাকলে কুড়িগ্রাম, টেকনাফ, রাজশাহীর, মতো এমন সব ঘটনা অহরহ ঘটতে থাকবে। আর আমরা হাইকোর্ট সাংবাদিকসুলভ কবে কি মন্তব্য দিলো তা ফেসবুকে পোস্ট করে নিজেই নিজেকে সান্ত্বনা দিতে থাকবো। এভাবে মিথ্যা সান্ত্বনায় দায় সারবো। এটাই একসময় ঐতিহ্যে পরিণত হবে।

আমার বিশ্বাস, সিনিয়র সাংবাদিক নেতারা চাইলে  সাংবাদিক সুরক্ষা আইন প্রণয়ন সময়ের ব্যাপার মাত্র। যদিও অধিকাংশ সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় কম-বেশি বিচার হচ্ছে, তবে যতদিন সুনির্দিষ্ট সাংবাদিক সুরক্ষা আইন না আসছে ততদিন পর্যন্ত আমরা কেউ কর্মক্ষেত্রে নিরাপদ নয়৷ যারা উচ্চ পর্যায়ের সাংবাদিক নেতা তারা যদি এটার গুরুত্ব অনুধাবন করে কোনো পদক্ষেপ নিতেন তাহলে দৃশ্যপট ভিন্ন হলেও হতে পারতো।

লেখক: সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত), সাপ্তাহিক অগ্রযাত্রা।

বিভি/এনএ

মন্তব্য করুন: