বন্যার্তদের সহায়তায় গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা
লাবিবের চিকিৎসায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের হস্তক্ষেপ চায় বুটেক্স শিক্ষার্থীরা
ছবি: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আব্দুল্লাহ আল লাবিব
বন্যার্তদের ত্রাণ বিতরণের করতে ২৪ আগস্ট (শনিবার) ফেনীতে যায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুটেক্স) একদল শিক্ষার্থী। পরদিন ত্রাণ বিতরণ শেষে ঢাকায় ফেরার সময় তাদের বহনকারী পিকআপ ভ্যানটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গৌরিপুরে ট্রাক্টরের সাথে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা শিকার হয়। এতে গুরুতর আহত হন বুটেক্সের ২ জন শিক্ষার্থী। তারা উভয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
আহত শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল লাবিব ও সাজ্জাদ আল মামুনকে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলা কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর আব্দুল্লাহ আল লাবিবের অবস্থা খারাপ দেখে তাকে কুমিল্লার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করানো হয়ে। সেখানে লাবিবের অবস্থা আশঙ্কাজনক ও গুরুতর দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সেখান থেকে হেলিকপ্টার করে ঢাকা সিএমএইচ-এ পাঠায়।
লাবিব এখন ঢাকার সিএমএইচের লাইফ সাপোর্টে আছে। দুর্ঘটনার কারণে তার ভেতরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো (ব্রেইন, ফুসফুস, বক্ষপিঞ্জর, মেরুদন্ডের স্পাইনাল কর্ড, অন্ডকোষ) মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে লাবিবের শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয়।
জানা যায়, শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল লাবিব ২০১৮ সালের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন ও কোটা আন্দোলনের সাথে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলো। তাছাড়া চলতি বছরের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও লাবিব শুরু থেকে আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলো। যখন আন্দোলনটা শুধুমাত্র কোটা আন্দোলনের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিলো তখন থেকেই লাবিব নিয়মিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে আন্দোলন করতো। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বুটেক্সের সমন্বয় প্যানেলের একজন ছিলো লাবিব।
পাশাপাশি বুটেক্সের জোন প্রথা ও ছাত্ররাজনীতি বন্ধ এবং বুটেক্সকে সংস্কার করার জন্য যে আন্দোলন হয়েছিলো তাতেও লাবিবের সক্রিয় ভূমিকা এবং অংশগ্রহণ ছিলো।
তাকে নিয়ে বুটেক্স শিক্ষার্থীরা জানান, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য বুটেক্সের পক্ষ থেকে ত্রাণ তহবিল শুরু করার উদ্যোগ নেয় লাবিব। সে তার বন্ধুদের নিয়ে পুরো তেজগাঁও এলাকায় মানুষের কাছে গিয়ে ত্রাণের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা শুরু করে। বন্যাদুর্গতদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শেষে ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে লাবিব।
শিক্ষার্থীদের দাবি লাবিবের এই দুর্দিনে যেন অন্তর্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মো. ইউনূস তার পাশে দাড়ান এবং লাবিবের চিকিৎসার ভার রাষ্ট্র বহন করে।
শিক্ষার্থীদের মতে, লাবিব বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা এবং একজন সমন্বয়ক। তার জন্য রাষ্ট্রের কিছু করা প্রয়োজন।
বিভি/এমআর
মন্তব্য করুন: