আমরা কারো চোখ রাঙানোকে ভয় করি না: জাহিদুল ইসলাম

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, অনেকে আমাদের কথায় কথায় ভয় দেখায়। অনেক বার বলেছি আমরা এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না। আমরা কারো চোখ রাঙ্গানোকে ভয় করি না।
শনিবার (১৯ জুলাই) বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, জুলাই আমাদের কাছে যেমন নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতার ছিল তেমনি প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এবং বিজয়ের মাস। আজ শহীদ পরিবারদের আর্তনাদ করে বলতে হচ্ছে, তারা বিচারহীনতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। জুলাইয়ের যে আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা ছিল, এখনো তা বাস্তবায়ন হয়নি। এর চেয়ে দুঃখজনক আর কিছু হতে পারে না। অন্তর্বর্তী সরকার স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় বসে নাই। আপনারা হাজার হাজার ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে ক্ষমতায় বসেছেন। এর জন্য আমাদের সংবিধানের হাইকোর্ট দেখাবেন না। জুলাই মাসের মধ্যে শহীদ গাজীদের স্বীকৃতি দিয়ে জুলাই সনদ ঘোষণা করতে হবে।
শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন নিয়ে তিনি আরও বলেন, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সন্ত্রাস ও মাদকের অভয়ারণ্যে পরিণত করা হয়েছিল। বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ, যুবসমাজ এবং দেশবাসী নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছে। কিন্তু শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়নি। ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া দাসত্ব মূলক, পাশ্চাত্যের চাপিয়ে দেওয়া এবং পার্শ্ববর্তী দেশের জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা বহাল রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব, ইসলামী ও আদর্শিক মূল্যবোধ এবং জাতিসত্ত্বার ইতিহাসকে ধারণ করে নতুন একটি আদর্শিক শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্র জনতার প্রাণের দাবি, দ্রুত সময়ের মধ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেওয়া। কিন্তু ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মহল টাল বাহানা ও খুনের রাজনীতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে। শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি এই ছাত্র সংসদ নির্বাচন দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দ্রুত সময়ের মধ্যে আয়োজন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৭ সাল থেকে ইসলামী ছাত্রশিবির সৎ দক্ষ ও মেধাবী এবং দেশপ্রেমিক নাগরিক গঠনে দুর্বার গতিতে নির্লসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রথম ও দ্বিতীয় কেন্দ্রীয় সভাপতি মীর কাসেম আলী ও কামরুজ্জামান এবং জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে ফাঁসি দিয়ে আমাদের অগ্রযাত্রাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের অগ্ৰযাত্রাকে থামানো যায়নি। অনেকে আমাদের কথায় কথায় ভয় দেখায়। অনেক বার বলেছি আমরা এক আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না। আমরা কারো চোখ রাঙ্গানোকে ভয় করি না। এক আল্লাহ ছাড়া পৃথিবীর কোন শক্তিই ইসলামী ছাত্রশিবিরকে থামাতে পারবে না। অনেক রক্ত এবং ত্যাগের মধ্য দিয়ে এখানে সমবেত হয়েছি। প্রয়োজনে আবার রক্ত ও জীবন দেব। তবুও বাংলাদেশকে কোন ফ্যাসিবাদের হাতে তুলে দেব না।
এছাড়াও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি জেনারেল নুরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেন, জুলাই আন্দোলনে যাদের পাটাতনের উপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছি সেই শহীদ পরিবার এবং আহত ও পঙ্গুত্বদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিগত ফ্যাসিফাদের আমলে শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আগামী নির্বাচনে বাংলাদেশ বিনির্বানে এক সুবর্ণ সুযোগ আমাদের সামনে এসেছে। এই সুযোগ যেন আমরা হেলায় খেলায় না হারায়। আমাদের সজাগ থেকে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সর্বশক্তি বিনিয়োগ করতে হবে।
জামায়াতের এই সমাবেশে এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, গণঅধিকার পরিষদসহ কয়েকটি দলের প্রতিনিধি সমাবেশে অংশ নেন।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: