বিএনপি আজ গভীর সংকটে নিপতিতঃ ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম এবং তাদের দল বিএনপি ভুল রাজনীতির কারণে এখন চরম দুর্দিনের ছায়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।

ঐতিহাসিক গণ অভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে সোমবার (২৪ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের একথা বলেন।

তিনি বলেন, নিজেদের রাজনৈতিক ব্যর্থতায় বিএনপি আজ গভীর সংকটে নিপতিত। রাজনৈতিক দৈন্যতায় চরম দুর্দিনের কালো অন্ধকারের হতাশা-অবসাদ ঝেঁকে বসেছে তাদের মনে। সেই সংকট ঢাকতে মির্জা ফখরুল জাতিকে দুর্দিনের আষাঢ়ে গল্প শোনানোর পাঁয়তারা করছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিভিন্ন সময় বিএনপি শাসনামলের দুঃসহ নির্যাতন-নিষ্পেষণ এখনও দেশবাসীর স্মৃতিতে দগদগে ক্ষতের স্মারক বহন করছে। বাংলার জনগণ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ক্ষুধা-দারিদ্র্য ও চরম অনিশ্চয়তার দুর্বিসহ সময়ে ফিরে যেতে চায় না। সেই অন্ধকারময় সময় কাটিয়ে বাংলার জনগণ শেখ হাসিনা’র সুদক্ষ নেতৃত্বে আলোকোজ্জ্বল আগামীর পথে এগিয়ে চলেছে।

সেতু মন্ত্রী বলেন, সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’র কালজয়ী নেতৃত্বে স্বৈরতন্ত্রের প্রতিভূ বিএনপি-জামাতের সকল ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত মোকাবিলা এবং পারিপার্শ্বিক সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা জয় করে উন্নয়ন-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশ তার কাক্সিক্ষত অভিষ্ঠে পৌঁছাবেই।

গণ অভ্যুত্থান দিবস প্রসংগে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসে ২৪ জানুয়ারি এক ঐতিহাসিক দিন। এই দিনে তৎকালীন স্বৈরশাসক আইয়ুব খান-এর পতনের লক্ষ্যে দুর্বার গণআন্দোলনে শহীদ হন কিশোর মতিউর রহমান, রুস্তমসহ অনেকেই। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে দিনটি অনন্য গুরুত্ব বহন করে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত বাঙালির মুক্তির সনদ ছয়-দফা ভিত্তিক আন্দোলনে সোচ্চার হয় সমগ্র জাতি।’

তিনি বলেন, বাঙালির স্বাধিকার ও স্বাধীনতা সংগ্রামে যে দেশদ্রোহী অপশক্তি স্বৈরচার আইয়ুব ও মোনেম-এর পক্ষে তথা বাঙালির স্বাধীনতা এবং মুক্তির বিপক্ষে ছিলো তাদের উত্তরাধিকার আজও বাংলাদেশের গণতন্ত্র-উন্নয়ন অগগ্রতি-মুক্তি ও সমৃদ্ধির পথে প্রধান অন্তরায়।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, সেই অপশক্তির প্রতিভূ বিএনপি-জামাত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে ব্যাহত করতে নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সামরিক স্বৈরশাসনের গর্ভে জন্ম নেওয়া বিএনপি গায়ে গণতন্ত্রের আস্তিন জড়ালেও তাদের আস্তিনের মধ্যেই রয়েছে গণতন্ত্রের টুঁটি চেপে ধরা দানবীয় রূপ।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ছয় দফা আন্দোলন দমন করতে স্বৈরাচার আইয়ুব খান আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে বঙ্গবন্ধুসহ অনেককে গ্রেফতার করেন। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়াই ছিলো পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর দূরভিসন্ধি। প্রহসনের এই বিচারের বিরুদ্ধে গণ-আন্দোলন গড়ে তোলে বাংলার জনগণ।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ছয় দফা ভিত্তিক আন্দোলনের আদর্শকে ধারণ করে ছাত্রলীগসহ চারটি প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ১৯৬৯ সালের ৪ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলে এবং ১১ দফা দাবি ঘোষণা করে। ছয় দফা ভিত্তিক ১১ দফা দাবিতে ছাত্রসমাজের সমস্যাকেন্দ্রিক দাবিদাওয়ার পাশাপাশি কৃষক ও শ্রমিকদের স্বার্থসংক্রান্ত দাবিসমূহ অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

তিনি বলেন, ৬৯-এর ১৭ জানুয়ারি দেশব্যাপী সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ধর্মঘটের ডাক দিলে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনেম খান ছাত্র আন্দোলন দমনের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেন। পাকিস্তানি শাকসগোষ্ঠীর রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে ২০ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্রসভা ও প্রতিবাদ মিছিলের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।

সূত্রঃ বাসস।