• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

মুন্সীগঞ্জে সংঘর্ষে পুলিশের মামলা

বিএনপির সমাবেশের প্রধান অতিথি মামলার ২নং আসামি

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:২৪, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
বিএনপির সমাবেশের প্রধান অতিথি মামলার ২নং আসামি

তেল-গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মুন্সীগঞ্জ বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, বিশেষ অতিথি সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু পুলিশের দেয়া মামলায় আসামি হয়েছেন। 

তাদেরকে এজাহারে ২ ও ৩ নং আসামি করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তাদের হাতে থাকা ইটপাটকেল, ককটেল নিক্ষেপ ও লাঠিসোটা নিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মিনহাজ উল ইসলামের মাথার বাম পাশে গুরুতর জখম করার অভিযোগ আনেন মামলার বাদী এস আই মাইন উদ্দিন।

এদিকে,  মামলার আসামি হয়ে গ্রেফতার আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে হাজারও বিএনপি নেতাকর্মী। ঘটনার পর থেকে স্ত্রী সন্তানের মুখও দেখেননি অনেক নেতাকর্মী। এদের মধ্যে অধিকাংশ নেতাকর্মীর জানেনই না তাদের বিরুদ্ধে আদৌও মামলা হয়েছে কিনা!

পুলিশের এজাহার নিয়ে লুকোচুরির কারণে বিএনপি নেতাকর্মীদের মনে গ্রেফতার আতঙ্কটা আরো বেড়ে যায়। এজাহারে নাম না থাকায় অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে স্বস্তি ফিরে আসলেও গ্রেফতার এড়াতে পারবেন কিনা তা নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন। তাদের ধারণ, এজাহারের নাম না থাকলেও গ্রেফতার করে অজ্ঞাতদের তালিকায় গ্রেফতার দেখাবে পুলিশ। 

মামলা দুটি নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ এর পাশাপাশি হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। এজাহারে এমন অনেকের নাম এসেছে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়াতো দূরের কথা সমাবেশেই আসেননি। পিতার নামের পাশাপাশি প্রাপ্ত বয়স্ক সবকটি ছেলের নামে মামলা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এমন কয়েকজনের নাম এসেছে যারা বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত নেই, এমনকি আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতাদের সাথে সখ্যতার পাশাপাশি প্রশাসনসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের খুব কাছের জন হিসেবে সুবিধা দিয়েও নিয়ে আসছিলেন। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রাতারাতি রাজনীতিবীদ হতে অনেকে মামলার এজাহারে নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অনুরোধও করে।

মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষ ঘটনা ও মামলার ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা বিএনপি'র আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, বিএনপি'র শান্তিপূর্ণ সমাবেশে জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে গুলি করার দৃশ্য বলে দেয় বিএনপি নয় একটি বিশেষ মহল এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটায়। বিএনপি'র নেতাকর্মীদের বাড়িছাড়া এবং এলাকাছাড়া করার জন্য উদ্দেশ্যমূলকভাবে এই হামলা এবং মামলার ঘটনা ঘটায়। মামলার এজাহারে এমন অনেক নেতাকর্মীর নাম রয়েছে যাদের মধ্যে অনেকে  দেশে নেই,  মৃত্যুবরণ করেছে এমনকি সমাবেশে আসেনি। 

সমাবেশটি ছিল সদর থান, মিরকাদিম ও মুন্সীগঞ্জ পৌর বিএনপি শাখার উদ্যোগে। সমাবেশে অন্য কোন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা আসেনি, অথচ উপজেলা পর্যায়ের অনেক নেতার নাম রয়েছে মামলায়। এতেই বোঝা যায় প্রশাসন আগামী দিনের আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপি মাঠে থাকতে না পারে সেজন্য এ মামলা করেছে। 

ঢাকা থেকে কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতন অতিথি হিসেবে আমাদের সমাবেশে এসেছে, তারা সমাবেশে যোগ দেওয়ার সুযোগই পায়নি অথচ তাদের আসামি করে মামলা দেওয়া হয়েছে। দেশে আজ গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকলে প্রশাসন এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটাতে পারতো না।

উল্লেখ্য মুন্সীগঞ্জ শহরের উপকণ্ঠ মুক্তারপুরে বিএনপি'র মিছিলে বাধা দেয়া নিয়ে বুধবার পুলিশের সঙ্গে নেতাকর্মীদের ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশের মুহুর্মুহু শটগানের গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ এবং বিএনপি'র নেতাকর্মীদের বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপে মুক্তারপুর পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। 

আহতদের মধ্যে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে একজনসহ আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মিনহাজ উল ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তারিকুজ্জামানসহ ২৫ পুলিশ সদস্য ও চার সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: