• NEWS PORTAL

শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

হ্যারি কেনের রেকর্ডের রাতে সিটিকে হারালো টটেনহ্যাম

প্রকাশিত: ১৬:৩২, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

ফন্ট সাইজ
হ্যারি কেনের রেকর্ডের রাতে সিটিকে হারালো টটেনহ্যাম

হ্যারি কেন। ছবি: ইউরো স্পোর্টস

ইংল্যান্ড জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক হ্যারি কেনের একমাত্র গোলে কাল প্রিমিয়ার লিগে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ জয় তুলে নিয়েছে টটেনহ্যাম হটস্পার। এই গোলের মাধ্যমে টটেনহ্যাম ক্যারিয়ারে ২৬৭তম গোল করে ক্লাবের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে কৃতিত্ব গড়েছেন কেন।

১৫ মিনিটে কেনের গোলে স্পার্সদের জয় নিশ্চিত হয়। একইসাথে কেন সাবেক ফরোয়ার্ড জিমি গ্রীভসের দীর্ঘদিনের গোলের রেকর্ড ভেঙ্গে নতুন মাইলফলক গড়েছেন। ১৯৭০ সাল থেকে গ্রীভস এই রেকর্ড নিজের করে রেখেছিলেন। গত ২৩ জানুয়ারি ফুলহ্যামের বিপক্ষে গোল করে কেন গ্রীভসকে স্পর্শ করেছিলেন। এর সাথে এ্যালান শিয়েরার (২৬০) ও ওয়েইন রুনির (২০৮) সাথে প্রিমিয়ার লিগে তৃতীয় খেলোয়াড় হিসেবে ২০০ গোলর মাইলফলক স্পর্শ করেছেন কেন। 

দারুণ এই রেকর্ডের পর কেন বলেছেন, ‘আমি কিছু বলতে পারছি না। এটা আসলেই যাদুকরী এক মুহূর্ত। এই কৃতিত্ব অর্জনে আমি মরিয়া ছিলাম। একইসাথে দলের জয়ও চেয়েছিলাম। ঘরের মাঠের সমর্থকদের সামনে এই অর্জন কখনই ভোলা যায় না।’

ডিসেম্বরে বিশ্বকাপে ফ্রান্সের বিপক্ষে গোল করে রুনির সাথে ইংল্যান্ডের সর্বকলের সর্বোচ্চ গোলাদাতার তালিকায় যৌথভাবে শীর্ষস্থান দখল করেছেন কেন। গ্রীভসকে ছাড়িয়ে যাওয়া ক্রমেই উন্নতির শিখরে পৌঁছানো কেনের জন্য অনিবার্য ছিল। যদিও ২০২১ সালে সিটিজেনরা যদি তাকে দলে ভেড়াতে পারতো তাহলে কেনের এই কৃতিত্ব অর্জন করা সম্ভব হতো না। ক্যারিয়ারের শুরুটা কেনের মোটেই সহজ ছিল না। বেশ কয়েকবার ধারে অন্যত্র খেলতে যাওয়াটাও তার জন্য সুখকর ছিল না। শেষ পর্যন্ত অবশ্য টটেনহ্যামই বুঝতে পেরে তাদের সেরা তারকাকে আর অন্য ক্লাবে যেতে দেয়নি। 

২০২১ সালে ৮১ বছর বয়সে গ্রীভস মৃত্যুবরণ করেন। ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশী সাবলীল গোলদাতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন গ্রীভস। এই ধরনের একজন কিংবদন্তী স্ট্রাইকারের পাশে নিজের নাম উঠাতে পেরে কেন গর্ব অনুভব করছেন, ‘ক্যারিয়ারের শুরুতে  কখনই মনে হয়নি প্রিমিয়ার লিগে ২০০ গোল করবো। তখন থেকে এ পর্যন্ত যাত্রাটা মোটেই সহজ ছিলনা, নানা নাটকীয়তায় শেষ পর্যন্ত আমি এখানে আসতে পেরেছি। জিমি গ্রীভস একজন পরিপূর্ণ নায়ক, ইংলিশ ফুটবলের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। তাকে ছাড়িয়ে যাবার মুহূর্তটা চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে।’

২৯ বছর বয়সী কেন ইউরোপা লিগে ২০১১ সালে শামরক রোভার্সের বিরুদ্ধে সর্বপ্রথম টটেনহ্যামের জার্সি গায়ে গোল করেছিলেন। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি ইংলিশ অধিনায়ককে। 

এর আগে শনিবার এভারটনের কাছে আকস্মিকভাবে ১-০ গোলে হেরে গিয়েছিল টেবিল টপার আর্সেনাল। আর সেই সুযোগে সিটির সামনে শিরোপা ধরে রাখার নতুন স্বপ্ন জেগে উঠেছিল। কিন্তু এবারের মৌসুমের সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে কেনের ১৯তম গোলে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিটিজেনরা আর্সেনালের থেকে পাঁচ পয়েন্টের ব্যবধানে পিছনে পড়েছে। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পেপ গার্দিওলার দলের সাথে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি হবে গানাররা। 

সিটি বস গার্দিওলা বলেছেন, ‘আমাদের শুরুটা ভালই হয়েছিল। কিন্তু এক ভুলেই তারা আমাদের শাস্তি দিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হিসেবে এখন আর এই পরাজয় নিয়ে চিন্তা করার পরিস্থিতিতে আমরা নেই।’

পিত্তথলির জরুরী অস্ত্রোপচারের কাল টটেনহ্যামের ডাগ আউটে ছিলেন না কোচ এন্টোনিও কন্টে। সহকারী কোচ ক্রিস্টিয়ান স্টেলিনির অধীনে স্পার্সরা ম্যাচ খেলতে নামে। এই ফলাফলে নিউক্যাসলের থেকে এক পয়েন্ট পিছিয়ে পঞ্চম স্থানে রয়েছে টটেনহ্যাম। স্টেলিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমি এন্টোনিওর সাথে ফোনে কথা বলেছি। সে পুরো দলকে অভিনন্দন জানিয়েছে। বিশেষ করে কেনকে। কেন এই লিগের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়, একজন ভাল খেলোয়াড়ের উৎকৃষ্ট উদাহরণ সে। 

রড্রির একটি ভুল পাসে ম্যানুয়েল আকাঞ্জির  কাছ থেকে বল ছিনিয়ে নেন পিয়েরে-এমিলে হোবার্গ। ড্যানিশ এই মিডফিল্ডারের পাসেই কেন লো শটে এডারসনকে পরাস্ত করেন। এসময় স্কোরবোর্ডে কেনকে অভিনন্দন জানিয়ে বার্তা দেয়া হয়। টটেনহ্যামের সমর্থকরা উচ্চস্বরে চিৎকার করে বলতে থাকে, ‘হ্যারি কেন শুধুই আমাদের।’

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: