• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

রোজার আগে সিলেটে হঠাৎ পর্যটকদের চাপ 

মোহাম্মদ অলিদ সিদ্দিকী তালুকদার

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ২৯ মার্চ ২০২২

ফন্ট সাইজ
রোজার আগে সিলেটে হঠাৎ পর্যটকদের চাপ 

কর্মব্যস্ত জীবনের অবসাদ দূর করতে বরাবরই পর্যটকদের পছন্দের শীর্ষে থাকে পুণ্যভ‚মি সিলেট। জল, পাথর, পাহাড় আর চা-বাগান দেখতে গত দুই দিন ধরে ভিড় জমাচ্ছেন পর্যটকেরা। গত শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির পাশাপাশি স্বাধীনতা দিবসের ছুটি থাকায় সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। এই ফাঁকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন ঘুরে বেড়ানোর জন্য ভিড় জমিয়েছেন সিলেটে।

এদিকে পর্যটকদের চাপে সিলেটের বেশির ভাগ হোটেল-মোটেলের আসন পরিপূর্ণ ছিলো। এছাড়া নগরীর অভ্যন্তরে রেস্তোরাঁগুলোতেও ছিলো পর্যটকদের বাড়তি চাপ। অন্যদিকে ভিড় ছিলো শাহজালাল (রহ.) দরগাহ এবং শাহপরান (রহ.)-এর মাজারেও।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ মাসের শুরু থেকেই ভালো পর্যটক সমাগম ঘটেছে। ইতোমধ্যে পর্যটকদের সেবা, থাকা-খাওয়া, নিরাপত্তাসহ নানা বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পর্যটক সমাগম বাড়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যেও চাঙাভাব দেখা দিয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর, আইসিটি পার্ক, বিছনাকান্দি, জাফলং, রাতারগুল, লালাখাল ও শহরতলির মালনীছড়া, লাক্কাতুরা চা-বাগান, টিলাগড় বন্য প্রাণী সংরক্ষণকেন্দ্রসহ বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্রে পর্যটকদের ভিড় ছিলো লক্ষ্য করার মতো।

হোটেল-মোটেলের মালিকেরা বলছেন, বৃহস্পতিবার থেকে হঠাৎ পর্যটকদের চাপ বাড়তে থাকে। এতে সিলেট নগরীর অভ্যন্তরের বেশ কয়েকটি হোটেল-মোটেল এবং শহরতলির কয়েকটি কটেজে কক্ষ খালি পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত অধিকাংশ হোটেলের কক্ষ অগ্রিম বরাদ্দ করে রাখা হয়েছিলো। 

 

শুক্র ও শনিবার শহরতলির বিভিন্ন চা-বাগান, কোম্পানীগঞ্জের আইসিটি পার্ক, সাদা পাথর এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়। বিশেষ করে বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত ভিড় লক্ষ করা গেছে আইসিটি পার্কে। সেখানে সিলেট নগরসহ আশপাশের মানুষ বেশি। আবার কোম্পানীগঞ্জের সাদা পাথরে ভিড় জমানো পর্যটকদের অধিকাংশই ছিলেন অন্য জেলার বাসিন্দা।
ভোলাগঞ্জ সাদা পাথর দেখতে আসা সিলেট নগরীর আমেরিকান প্রাবসী আরিফ আহমদ বলেন, ছুটি কাটাতে দেশে এসেছি। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে সিলেটের বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র ঘুরতে এসেছি। জাফলংয়ে ও সাদা পাথর দেখে খুবই ভালো লেগেছে।


কোম্পানীগঞ্জ ফটোগ্রাফিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন, শুক্রবার থেকে সাদা পাথরে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় ছিলো। এছাড়া সম্প্রতি বৃষ্টি হওয়ায় সাদা পাথরে পানি কিছুটা বেড়ে যাওয়ায় সৌন্দর্য আরও বেড়েছে। তিনি বলেন, সামনে ঈদের মৌসুমে সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্র আরো পর্যটক টানবে বলে আশা প্রকাশ করেন।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লুসিকান্ত হাজং বলেন, সাদা পাথর পর্যটনকেন্দ্রে যাতে পর্যটকদের কোনো ধরনের হয়রানি করা না হয়, সে জন্য প্রশাসনের নজরদারি রয়েছে। এছাড়া পুলিশ প্রশাসনের প্রতি বিষয়টি নজর রাখার জন্য বলা রয়েছে। পর্যটনকেন্দ্রে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে প্রশাসনের সহযোগিতা চাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

জাফলং ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. রতন শেখ বলেন, শুক্র ও শনিবার জাফলংয়ে বিপুল পরিমাণ পর্যটকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। এ সময় ট্যুরিস্ট পুলিশ পর্যটকদের সহযোগিতায় কাজ করেছে। জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকায় যাতে বাংলাদেশের পর্যটকেরা প্রবেশ না করেন এবং ভারতের পর্যটকেরা যাতে সীমানা অতিক্রম না করেন, সে জন্য হ্যান্ড মাইকের মাধ্যমে পর্যটকদের সচেতন করা হয়।

সিলেট হোটেল মোটেল রেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুমাত নুরী বলেন, পর্যটকেরাই সিলেটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোর প্রাণ। দৃষ্টিনন্দন পর্যটনকেন্দ্রগুলো সামনে বর্ষা মৌসুমে আরো নানা রূপ নিয়ে হাজির হবে। সে সময় পর্যটকদের উপস্থিতি আরো বৃদ্ধি পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

মন্তব্য করুন: