• NEWS PORTAL

  • বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

পর্যটকদের ডাকছে খাগড়াছড়ির ‘রিছাং ঝর্ণা’

এইচ এম প্রফুল্ল, খাগড়াছড়ি

প্রকাশিত: ১২:৩৭, ১২ জুলাই ২০২২

ফন্ট সাইজ
পর্যটকদের ডাকছে খাগড়াছড়ির ‘রিছাং ঝর্ণা’

খাগড়াছড়িতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের অন্যমত আকর্ষণ ‘রিছাং ঝর্ণা’। রিছাং ঝর্ণার শীতল পানিতে গা ভাসাতে প্রতি বছর বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে বিপুল সংখ্যক পর্যটকের আগমন ঘটে। তবে এবার ঈদ উল আজহার ছুটিতে ব্যতিক্রম হয়েছে। ঈদের তৃতীয় দিনেও চোখে পড়ার মতো দর্শনার্থী আসেননি রিছাং ঝর্ণার শীতল পানিতে গা ভেজাতে।

রিছাং ঝর্ণার অবস্থান খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে ১১ কিলোমিটার আর খাগড়াছড়ি-ঢাকা আঞ্চলিক সড়ক ছেড়ে প্রায় এক কিলোমিটার দক্ষিণে। 

মারমা ভাষায় ‘রি’ শব্দের অর্থ পানি আর ‘ছাং’ শব্দের অর্থ কোন উঁচু স্থান হতে গড়িয়ে পড়া। অথাৎ কোন উঁচু স্থান হতে জলরাশি গড়িয়ে পড়া। আবার ত্রিপুরা ভাষায় এর অন্য নাম ‘তেরাং তৈকালাই’। অথাৎ তেরাং-এর অর্থ পানি আর তৈকালাই’ এর অর্থ হচ্ছে পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া পানি। তবে ঝর্ণাটি “রিছাং ঝর্ণা” নামে বেশি পরিচিত।

খাগড়াছড়ি জেলার বেশ ক'টি ঝর্ণার মধ্যে ‘রিছাং ঝর্ণা’ অন্যতম আকর্ষণীয়। ২০০৩ সালে ভ্রমণ পিপাসুদের নজরে আসে রিছাং ঝর্ণাটি। সময়ের ব্যবধানে খাগড়াছড়ির অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছে রিছাং ঝর্ণা। 

এক সময় এই ঝর্ণায় যাওয়ার রাস্তা না থাকলেও জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের উদ্যোগে রাস্তা হওয়ায় পর্যটকরা সহজে এ ঝর্ণায় যেতে পারছেন। প্রায় ৩৫ মিটার উচ্চ পাহাড় থেকে পানি আছড়ে পড়ছে নিচে। এমন মনোরম দৃশ্য আপনাকে অন্য জগতে নিয়ে যাবে। যা  ঘণ্টার পর ঘণ্টা উপভোগ করার মত। আর আপনি চাইলে রিঝাং ঝর্ণার পানিতে অনায়াসেই শরীর ভিজিয়ে নিতে পারবেন।

রিছাং ঝর্ণাটি পাহাড়ি প্রকৃতির মাঝে অবস্থিত। ঝর্ণায় যাত্রা পথটাই দারুণ রোমাঞ্চকর। এই ঝর্ণাকে ঘিরে প্রতিদিন বহু সংখ্যক পর্যটক এসে ভিড় করেন। আর প্রকৃতির সাথে একাত্ম হন।

খাগড়াছড়ি শহর থেকে চাঁদের গাড়ী, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাসে ঝর্ণার পাদদেশে এসে নেমে প্রায় ২০০ গজ পায়ে হাঁটা পথ। এই সামান্য পাহাড়ি রাস্তায় পাড়ি দিলেই দেখতে পাবেন পাহাড়ের বুক বেয়ে প্রায় ১০০ ফুট উঁচু থেকে নিচে আছড়ে পড়ছে ঝর্ণার জলরাশি। 

হয়তো আপনার ইচ্ছে করবে প্রকৃতির মাঝেই কাটিয়ে দিই সারাক্ষণ। ভ্রমণকারীরা যাতে  সহজে রিছাং ঝর্ণায় পৌঁছতে পারেন তার জন্য এখানে পাকা সিড়ি তৈরী করা হয়েছে।   
আপনি রিছাং ঝর্ণায় লোকাল বাসে ১০ টাকায় যেতে পারে পারেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে খাগড়াছড়ি-ঢাকা আঞ্চলিক সড়কে হৃদয় মেম্বার পাড়া এলাকা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পায়ে হেঁটে যেতে হবে। অথবা মোটরসাইকেলে আসা-যাওয়া ১০০ টাকা ভাড়ায় রিছাং ঝর্ণায় ভ্রমন করতে পারবেন। 

এছাড়া আলুটিলা গুহা, বৌদ্ধ মন্দির ও জেলা পরিষদের ঝুলন্ত কাছাকাছি দূরত্বে অবস্থিত এই ঝর্ণা। সে ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো হয় ,সবগুলো জায়গা একসাথে ঘুরে দেখলে। সবগুলো জায়গা ঘুরতে ১০/১২ জন মিলে চাঁন্দের গাড়ি রিজার্ভ করতে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা লাগবে। এই জায়গাগুলো ঘুরে দেখতে সময় লাগবে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা।

এছাড়া ঢাকা হতে সেন্টমার্টিন, সেন্টমার্টিন হোন্ডায়, গ্রীনলাইন, শান্তি পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, শ্যামলী, ইকোনো এবং ঈগল পরিবহনের এসি/নন-এসি বাসে চড়ে সরাসরি খাগড়াছড়ি যাওয়া যায়। বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়ার পরিমাণ নন এসি ৬২০ টাকা এবং এসি ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা।

খাগড়াছড়ি শহরে রাত্রি যাপনের জন্য বিভিন্ন মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। দরদাম করে আপনার পছন্দমত হোটেলে রাত্রিযাপন করতে পারবেন। হোটেলে ভেদে এক রাত অবস্থানের জন্য আপনাকে ৪০০ টাকা থেকে ৩৫০০ টাকা প্রদান করতে হবে। খাগড়াছড়ি শহরে ভালো মানের আবাসিক হোটেলের মধ্যে রয়েছে পর্যটন মোটেল, হোটেল গাইরিং, হোটেল ইকোছড়ি ইন, অরণ্য বিলাস ও হোটেল প্যারাডাইজসহ মান সম্মত হোটেল। 

খাবারের জন্য খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর এবং বাস স্ট্যান্ড এলাকায় বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়া পানখাইয়া পাড়ায় সিস্টেম রেস্তোরা, ব্যাম্বুতে ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি খাবারের স্বাদ নিতে পারেন।

বিভি/এইচএমপি/এজেড

মন্তব্য করুন: