• NEWS PORTAL

  • শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

৫৪ ঘণ্টায় পুরো মাসের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশিত: ০৮:০৯, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

আপডেট: ০৮:১৫, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফন্ট সাইজ
৫৪ ঘণ্টায় পুরো মাসের চেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ছবি: সংগৃহিত

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে রবিবার (১১ সেপ্টেম্বর) থেকে বৃষ্টি হচ্ছে। বরিশাল আবহাওয়া বিভাগ বলছে, মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই বিভাগে বৃষ্টি ঝরেছে ৪২৭ দশমিক ৩ মিলিমিটার। অথচ পুরো সেপ্টেম্বরে এ অঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টি হওয়ার কথা ২৫৯ দশমিক ৪ মিলিমিটার। অর্থাৎ মাত্র ৫৪ ঘণ্টায় পুরো মাসের মোট বৃষ্টিপাতের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বরিশাল বিভাগের সব জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নদ-নদীর পানি বেড়েছে। এবার বর্ষা মৌসুমে দেশের অন্যান্য অংশের মতো দক্ষিণাঞ্চলেও বৃষ্টিপাত তুলনামূলক কম ছিল। তবে শরতে এসে প্রবল বর্ষণে এ অঞ্চলের জনজীবন অনেকটাই থমকে গেছে। অনেক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া বিভাগ বলছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি স্থলভাগের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এটি ক্রমে দুর্বল হচ্ছে। এর প্রভাবে আরও দুই-তিন দিন বৃষ্টিপাত হবে। দেশের চার সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলেছে আবহাওয়া অফিস। 

বরিশাল নগরের বেশির ভাগ সড়ক তলিয়ে গেছে। জরুরি কাজ ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী ও অল্প আয়ের মানুষ। বৃষ্টির পাশাপাশি দক্ষিণ উপকূলের নদ-নদীতে তিন দিন ধরে চলছে উঁচু  জোয়ারের তাণ্ডব। এতে এসব নদ–নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে বাসিন্দাদের দুর্ভোগ বেড়েছে। অস্বাভাবিক জোয়ারে বরিশাল সদরের দপদপিয়া, চরবাড়িয়াসহ অনেক এলাকা এবং জেলার মেহেন্দীগঞ্জ, হিজলা, মুলাদি উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ছে। একইভাবে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় বিষখালী নদী ও বলেশ্বর নদ উপচে অনেক গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বরিশাল নগর পয়েন্টে মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টায় কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ভোলার দৌলতখান পয়েন্টে সুরমা-মেঘনা নদীর পানি বিপৎসীমার ৬৪ সেন্টিমিটার, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ পয়েন্টে পায়রা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৪ সেন্টমিটার এবং বরগুনার পাথরঘাটা পয়েন্টে বিষখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

সাতক্ষীরায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপকূল রক্ষা বাঁধের ৮২ কিলোমিটারে অন্তত ৪০টি স্থান ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে প্রবল জোয়ারের চাপে আশাশুনির একাধিক স্থানে বাঁধ উপচে পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে। সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।

বাগেরহাট সদর, মোরেলগঞ্জ, রামপাল, মোংলা উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে জেলার কয়েক’শ চিংড়ির ঘের ভেসে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

টানা তৃতীয় দিনের জোয়ারে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নদ–নদীতে যে হারে পানি বাড়ছে, তাতে সুন্দরবনের প্রাণিকুল হুমকির মুখে পড়ছে।

বিভি/এমআর

মন্তব্য করুন: