• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

স্বামী-স্ত্রী চাইতেন একই দিনে মৃত্যু, হলোও তাই, দাফনও পাশাপাশি

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশিত: ২৩:০৩, ১৫ মার্চ ২০২৪

ফন্ট সাইজ
স্বামী-স্ত্রী চাইতেন একই দিনে মৃত্যু, হলোও তাই, দাফনও পাশাপাশি

একই সাথে মৃত্যু কামনা করা দম্পতির কবরও পাশাপাশি

প্রায় পাঁচ যুগের দাম্পত্য জীবন তাদের। দীর্ঘ সময়ের এই পথ পরিক্রমায় ছোটখাটো কিছু মান অভিমান থাকলেও ছিল অগাধ বিশ্বাস আস্থা আর ভালোবাসা। সেই ভালোবাসার টানে সব সময় কামনা করতেন একই সঙ্গে যেন মৃত্যুও হয়, যেন কবরও হয় পাশাপাশি। তাদের সেই ইচ্ছাই যেন পূরণ হয়েছে। একই দিনে পৃথিবী ছেড়ে চির বিদায় নিয়েছেন ওই বয়স্ক দম্পতি। 

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার দামোদরপুর ইউনিয়নের ইন্দিরাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন আজগার আলী (৮০) ও তার স্ত্রী তহিদা খাতুন (৭২)। দীর্ঘ সংসারজীবনে ঘাত-প্রতিঘাত সামলিয়েছেন একসঙ্গে। কখনো পরস্পরকে ছেড়ে থাকতেন না তারা।

একসঙ্গে যেন মৃত্যু হয় সৃষ্টিকর্তার কাছে এমন পবিত্র চাওয়া ছিল দুজনেরই। তাদের সেই ইচ্ছাই যেন পূরণ হয়েছে।  বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) ভোরে আজগার আলী এবং একই দিনে রাত আটটার দিকে তার স্ত্রী তহিদা খাতুন ইন্তেকাল করেন।

আজগার আলীর ভাতিজা নুরু মিয়া জানান, রোজা শেষে গত বুধবার দিবাগত রাতের খাবার একসঙ্গে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন ওই দম্পতি।  বৃহস্পতিবার সকাল আটটার দিকে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন তহিদা খাতুন। এ সময় ডাকাডাকি করেও স্বামীর সাড়া পাননি। তার কান্না শুনে বাড়ির অন্য লোকজন ছুটে আসেন। তখন তারা বুঝতে পারেন আজগর আলী মারা গেছেন।

স্বজনরা জানিয়েছেন, আজগার আলী ছিলেন কৃষক। তিনি কিছুদিন ধরে অ্যাজমা রোগে ভুগলেও গৃহিণী তহিদা খাতুনের তেমন কোনো রোগ ছিল না।

স্থানীয় ইউপি সদস্য শামসুল হক জানান, আজগার আলীর মৃত্যুর পর থেকে স্ত্রী তহিদা খাতুন শোকার্ত ছিলেন। বৃহস্পতিবার বাদ জোহর জানাজা শেষে বাড়ির পাশেই পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আজগার আলীকে। জানাজা ও দাফনকার্যে অংশগ্রহণকারী স্বজনদের অনেকটা শক্ত মনে বিদায় দেন তহিদা খাতুন। পরে রাত আটটার দিকে বাড়িতে হঠাৎ মাথা ঘুরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে তাৎক্ষণিক মারা যান তহিদাও। পরে মধ্যরাতে জানাজা শেষে স্বামীর কবরের পাশেই তাকে দাফন করা হয়।

ওই দম্পতির সন্তান লাভলু মিয়া বলেন, ‘আমার বাবা-মায়ের মধ্যে যে ভালোবাসা ও বন্ধুত্ব ছিল, তা এ যুগের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দেখতে পাই না। জীবদ্দশায় বাবা-মা সব সময় কামনা করতেন একসঙ্গে মৃত্যুবরণের। আল্লাহ তাদের সেই মনোবাসনা পূর্ণ করেছেন।’

ওই ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে থাকা (বিট কর্মকর্তা) বদরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ আলম বলেন, ঘটনাটি বিস্ময়কর। স্বামী-স্ত্রীর একই দিনে স্বাভাবিক মৃত্যু তেমন দেখা যায় না।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন: