• NEWS PORTAL

  • বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

Inhouse Drama Promotion
Inhouse Drama Promotion

মাল্টা চাষে রাবি শিক্ষার্থীর বাজিমাত!

সৈয়দ সাকিব, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

প্রকাশিত: ১২:১৩, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

ফন্ট সাইজ
মাল্টা চাষে রাবি শিক্ষার্থীর বাজিমাত!

করোনার মধ্যে ৯৬০টি মাল্টা গাছ রোপণের মাধ্যমে শুরু করি মাল্টা চাষ। ফলনের প্রথম বছরে সফলতা ধরা না দিলেও চলতি মৌসুমে দশ লাখ টাকা মাল্টা বিক্রি হবে বলে আশা করছি। এ প্রজেক্টে সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা এবং সুযোগ-সুবিধা পেলে মাইলফলক সৃষ্টি করতে পারবো। 

কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) লোকপ্রশাসন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তরুণ উদ্দ্যোক্তা মো. ফারাদুজ্জামান ফাহিম।

ফাহিম নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার মির্জাগঞ্জ গ্রামের মোজাম্মেল হক ও মোছা. ফরিদা বেগম দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে তৃতীয়। গ্রামের মির্জাগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা শেষ করে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগে।

ফাহিমের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২১ সালের জুলাই মাসে ৩.১৫ একর জমিতে ৯২০টি মাল্টা ও ৪০টি কমলার চারা রোপণ করেন ফাহিম। রোপণের দ্বিতীয় বছর আশানুরূপ ফলন না পেলেও হতাশ হননি তিনি। ২ লক্ষ ২০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেন ফলনের প্রথম বছরে। তবে চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকূলে এবং ভালো ফলন হওয়ায় ১০ লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রির সম্ভাবনার কথা জানান এ তরুণ উদ্যোক্তা। চলতি বছর ইতোমধ্যেই ৩ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করেন ফাহিম। এ মাল্টা সহজলভ্য হওয়ায় প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণে সহায়ক ভূমিকা রাখার পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে বলে জানান এ উদ্যোক্তা।

সৃষ্টি করেছেন কর্মসংস্থান 

ফারাদুজ্জামান ফাহিম নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি সৃষ্টি করেছেন গ্রামীণ মানুষের কর্মসংস্থান। তার মাল্টা বাগানে চারজন শ্রমিক প্রতিনিয়ত বাগান দেখাশোনা ও পরিচর্যার কাজে কর্মরত রয়েছেন। এছাড়াও মৎস্য খামার এবং মাঠ ফসলের বিভিন্ন প্রজেক্টে ১০ জনের অধিক শ্রমিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। তবে সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা এবং সুযোগ-সুবিধা পেলে কৃষিতে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন এ তরুণ উদ্যোক্তা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ফাহিম বলেন, ২০২১ সালে ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড পাবলিক কলেজে অধ্যয়নরত অবস্থায় এক শিক্ষকের ছাদবাগানে মাল্টা চাষ দেখে আমি অনুপ্রাণিত হই। পরে সশরীরে বিভিন্ন বাগান পরিদর্শন করি এবং স্থানীয় ডোমার উপজেলা কৃষি বিভাগের সাথে যোগাযোগ করি। তৎকালীন উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আনিসুজ্জামান স্যারের পরামর্শক্রমে বাগান স্থাপন করি।

তিনি আরও বলেন, রোপণের দ্বিতীয় বছরে বাগানে সেভাবে ফলন ধরেনি; তবুও হতাশ হয়নি। এ বছর ইতোমধ্যে প্রায় তিন লক্ষ টাকা মাল্টা বিক্রি করেছি এবং আরও ৬-৭ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবো বলে ধারণা করছি।

ফাহিমের বাগান ঘুরতে এসে অভিভূত হোন তার স্কুল শিক্ষক মো. দুলাল উদ্দিন। এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে তিনি জানান, ফাহিমের মাল্টা বাগানে গিয়ে আমি সত্যি অভিভূত হয়েছি। ৯ বিঘা জমির উপর অসাধারণ এক মাল্টা বাগান করেছে ফাহিম। মাল্টা গাছগুলো দেখতেও বেশ সুন্দর লাগছিল। ফাহিম পরিশ্রমী একটা ছেলে। ছাত্রজীবনে পরিবার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনার পাশাপাশি সে বাগান করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছে—যা দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে, পাশাপাশি গ্রামীণ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বাংলাদেশের বেকারত্ব কমিয়ে নিয়ে আসছে; বিষটি প্রশংসার দাবিদার। সবাই যদি ফাহিমের মতো এমন আগ্রহী হয়ে উঠে তাহলে বাংলাদেশে বেকারত্বের হার অনেকটাই কমে আসবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডোমার উপজেলার কৃষি অফিসার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ফাহিম ডোমার উপজেলার একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তিনি উপজেলা কৃষি বিভাগের সহায়তায় তিন একর জমিতে মাল্টা চাষ করেছেন। তার বাগানে প্রায় ১০০০টি বারি মাল্টা-১ জাতের গাছ এবং ১৫০টির মত কমলার গাছ আছে। এ বছর প্রায় ৫ লক্ষ টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন। উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারাও তাকে নিয়মিত পরামর্শ প্রদান করেন। এছাড়াও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা প্রায়ই তার বাগান পরিদর্শন করেন। ফাহিমের মত তরুণ উদ্যোক্তাদের হাত ধরে বদলে যাবে বাংলাদেশের কৃষি কার্যক্রম।

বিভি/এজেড

মন্তব্য করুন:

সর্বাধিক পঠিত
Drama Branding Details R2
Drama Branding Details R2