• NEWS PORTAL

  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪

মাকে হত্যা করে ‘আত্মহত্যার গল্প’ বানিয়েছিলেন ছেলেরা

প্রকাশিত: ১৮:৩৬, ২২ জানুয়ারি ২০২২

ফন্ট সাইজ
মাকে হত্যা করে ‘আত্মহত্যার গল্প’ বানিয়েছিলেন ছেলেরা

প্রতীকী ছবি

দুই মাস আগে বাড়ির পাশে একটি গাছে বিধবা ফুলজান ভানুর (৭০) ঝুলন্ত মৃতদেহ পাওয়া যায়। দুই ছেলে জানান, তাঁদের মা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনে বেরিয়ে এলো চাঞ্চল্যকর তথ্য।

শরীয়তপুরের জাজিরা থানা সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৫ নভেম্বর জাজিরার পাচু মাতবরকান্দি গ্রামে ফুলজান ভানু’র মৃতদেহ বাড়ির পাশের একটি গাছ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। তখন পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, ফুলজান আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ মরদেহের ময়নাতদন্ত করে। ভিসেরার রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। 

সেসময় পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করে। মামলাটি তদন্ত করছিলেন জাজিরা থানার পরিদর্শক শামছুল হক। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও রাসায়নিক পরীক্ষার ফলাফলে ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার প্রমাণ পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার ওই প্রতিবেদন হাতে পান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। পরে অপমৃত্যুর মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হয়।

এ ঘটনায় ফুলজান ভানু’র এক ছেলে হাবিবুর রহমান সিকদারকে (৪৮) গ্রেফতার করে পুলিশ। শুক্রবার হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন ওই ছেলে। পরে তাঁকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। জানা গেছে, হত্যার সংগে জড়িত রয়েছেন আরেক ছেলে সেলিম সিকদারও। তবে তিনি পলাতক।

ফুলজান ভানু শরীয়তপুরের জাজিরার উপজেলার পাচু মাতবরকান্দি গ্রামের মৃত আবদুল গফুর সিকদারের স্ত্রী। এ দম্পতির ১০ ছেলেমেয়ে। জমি দলিল করে না দেওয়ায় দুই ছেলে ফুলজান বিবিকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। 

জাজিরা থানার উপপরিদর্শক ইকরাম হোসেন জানান, হাবিবুর জানিয়েছেন, জমি-জমার বণ্টন নিয়ে ভাই-বোনদের মধ্যে বিরোধ চলছিলো। ২৫ নভেম্বর রাতে সেলিম সিকদার ও হাবিবুর রহমান সিকদার তাঁদের নামে জমি লিখে দেওয়ার জন্য চাপ দেন তাঁর মাকে। ফুলজান জমি লিখে দিতে অস্বীকৃতি জানান। ক্ষোভে দুই ভাই মায়ের গলা টিপে ধরেন। এতে শ্বাস বন্ধ হয়ে ফুলজান ভানু মারা যান। পরে বাড়ির পাশে একটি আমগাছে মরদেহ রশি দিয়ে ঝুলিয়ে দেন। পরের দিন মা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচারণা চালান তাঁরা।

ফুলজান ভানু’র মেয়ে রুবিনা আক্তার বলেন, বসতভিটা ছাড়াও আমাদের চাষের ৮ বিঘা জমি রয়েছে। হাবিব ও সেলিম সব জমি চাষাবাদ ও ভোগদখল করতো। ওই জমি বণ্টনের জন্য ২৮ নভেম্বর তারিখ নির্ধারণ ছিলো। কিন্তু দু’দিন আগে মায়ের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। বিশ্বাসই করতে পারিনি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। পুলিশ বলছে, আমার দুই ভাই মাকে হত্যা করেছে। হাবিব ভাই আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে। যারা আমার মায়ের হত্যায় জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

বিভি/এসডি

মন্তব্য করুন: