প্রেমিকের সাথে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণ, হেল্প চাওয়ায় ছাত্রীকে গণধর্ষণ

পঞ্চগড়ে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্কে কথিত প্রেমিকের সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এক স্কুলছাত্রী (১৬)। শুরুতে দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণ করে স্কুলছাত্রীকে। সাহায্য চাওয়ার আবেদন করায় বাইরের কিছু যুবকের কাছে গণধর্ষণের শিকার হয় ওই স্কুলছাত্রী।

রবিবার (৭ আগষ্ট) সন্ধ্যায় ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মো. রাজু (১৯) ও সাইফুল ইসলাম (৪৮) নামে দুই জনকে গ্রেফতার করেছে আটোয়ারী থানা পুলিশ। সোমবার (৮ আগস্ট) সকালে গ্রেফতার দুই অভিযুক্ত ধর্ষণকারীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

প্রেপ্তার মো. রাজুর বাড়ি আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের মালগোবা এলাকায় এবং সাইফুল ইসলাম একই ইউনিয়নের পুরাতন আটোয়ারী এলাকার বাসিন্দা। 

শনিবার রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্ত এলাকা বন্দরপাড়ায় একটি জঙ্গলের নির্জন এলাকায় গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। রবিবার বিকেলে ওই স্কুলছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে কথিত প্রেমিক হাসান (২৫), তার বন্ধু রাজু, সাইফুলসহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে আটোয়ারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ধর্ষণকারীরা পলাতক রয়েছেন এবং তদন্তের স্বার্থে বাকী আসাদের নাম উল্লেখ না করাই ভালো বলে পুলিশ জানায়।

পুলিশ, মামলার এজাহার ও ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সুত্র ধরে তার সঙ্গে আটোয়ারী উপজেলার ধামোর ইউনিয়নের মালগোবা এলাকার মো. হাসানের প্রেমের সম্পর্ক হয়। শনিবার বিকেলে হাসান মোবাইল ফোনে তাকে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে পঞ্চগড় শহরে ডেকে আনেন। পরে তাকে নিয়ে হাসান তার বন্ধু মো. রাজুসহ মোটরসাইকেলে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরেন। এক পর্যায়ে তাকে ফুসলিয়ে রাত ৮টার দিকে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা বন্দরপাড়া এলাকায় একটি নির্জন বাগানে নিয়ে যান। সেখানে কথিত প্রেমিক হাসান প্রথমে তাকে ধর্ষণ করেন। এরপর হাসানের বন্ধু রাজুও মেয়েটিকে ধর্ষণ করলে মেয়েটির সঙ্গে তাদের ঝগড়া শুরু হয়। 

এরই মধ্যে স্থানীয় আরও পাঁচজন সেখানে চলে আসে। এরপর অবস্থা বেগতিক দেখে কথিত প্রেমিক হাসান ও রাজু মেয়েটিকে রেখে পালিয়ে যান। পরে সে ওই পাঁচ জনের কাছে সাহায্য চাইলে তারা স্কুল ছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন এবং পালিয়ে যায়। সেখানে মেয়েটির চিৎকার ও কান্নাকাটি শুনে রাত ১ টার দিকে স্থানীয় আব্দুল মান্নান নামে এক ব্যক্তি তাকে উদ্ধার করে আরেক প্রতিবেশির সহায়তায় তার পরিবারকে খবর দেয়। 

রাত আড়াই টার দিকে তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই স্কুল ছাত্রী সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

আটোয়ারী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, ‘ঘটনাটি জানার পর থেকেই অভিযুক্তদের ধরতে আমাদের অভিযান শুরু হয়। রবিবার সন্ধ্যার দিকে মামলার এজাহারভুক্ত দুজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয় এবং বাকী আসামিদেরও ধরতে রাতভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। 

সোমবার সকালে গ্রেফতার দুইজনকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে তাদের বিরুদ্ধে রিমান্ড আবেদন করা হবে। ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর শারীরীক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের একাধিক দলের মাধ্যমে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।।