বন্যা মোকাবিলায় সাড়ে ৫ কোটি ডলার ঘাটতি: ডব্লিউএফপি
বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে টানা বর্ষণে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতির প্রেক্ষিতে জরুরি সহায়তা কার্যক্রম শুরু করেছে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি)। সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৫ সালে জলবায়ুজনিত দুর্যোগ মোকাবিলার আগাম প্রস্তুতিতে ৫ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের তহবিল ঘাটতি রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ঢাকায় ডব্লিউএফপির কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সরকারের অনুরোধে ২৯ মে কক্সবাজারের টেকনাফে বন্যার পূর্বাভাস জারির কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সংস্থাটি আগাম সহায়তা কার্যক্রম শুরু করে। এই কার্যক্রমের আওতায় সাড়ে ৬ হাজার পরিবারকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।
সহায়তা পাওয়া টেকনাফের বাসিন্দা নুরুল বেগম বলেন, আগের বন্যাগুলোতে কখনো কোনো আর্থিক সাহায্য পাইনি। এবার এই টাকা দিয়ে আমি আমার সন্তানদের খাবার কিনব, ঘর মেরামত করব এবং ভবিষ্যতের জন্য কিছু টাকা জমাব। এই সহযোগিতার জন্য ডব্লিউএফপিকে ধন্যবাদ।
ডব্লিউএফপির বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্ক্যালপেলি বলেন, জলবায়ুজনিত দুর্যোগ সবসময়ই দারিদ্র্য ও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় থাকা মানুষের ওপর বেশি প্রভাব ফেলে। আগাম পদক্ষেপ নেয়ার ফলে এসব পরিবার দুর্যোগ মোকাবিলায় নিজেদের প্রস্তুত করতে পেরেছে।
ডব্লিউএফপি ২০২৫ সালের জন্য চারধাপের জরুরি প্রস্তুতি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে আগাম প্রস্তুতি, দুর্যোগের পরপরই খাদ্য সরবরাহ, আর্থিক সহায়তা এবং নগদ অর্থের বিনিময়ে কাজের সুযোগ সৃষ্টি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৬০ লাখেরও বেশি দুর্যোগপ্রবণ মানুষের কাছে সহায়তা পৌঁছানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তবে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অর্থের সিংহভাগই এখনো অনুদানের অপেক্ষায়। ডম স্ক্যালপেলি বলেন, এই উদ্যোগের জন্য সময় ও সম্পদ খুবই সীমিত। আমরা আমাদের অংশীদারদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, যেন তারা দ্রুত ও বৃহৎ পরিসরে আমাদের পাশে দাঁড়ায়।
ডব্লিউএফপির এ উদ্যোগ বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ের আগাম প্রস্তুতির বৃহত্তর কাঠামোর অংশ। ২০২৪ সালে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও এনজিও মিলিয়ে ১৫টির বেশি আগাম প্রস্তুতি কাঠামো চালু করে। ২০২৫ সালে এই সংখ্যা ৪৬-এ পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ভূমিধস, খরা ও তাপপ্রবাহসহ বিভিন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করবে।
ডব্লিউএফপির এ কার্যক্রমে সহায়তা করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, জার্মানি, আয়ারল্যান্ড, বেলজিয়ামসহ একাধিক বৈশ্বিক দাতা সংস্থা।
এ ছাড়া কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতেও বন্যা ও ভূমিধসের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রায় ৩৩টি শিবির ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ডব্লিউএফপি। স্থানচ্যুত পরিবারগুলোর জন্য সংস্থাটি পুষ্টিসমৃদ্ধ বিস্কুট ও গরম খাবার সরবরাহ করছে। পাশাপাশি, স্কুল ফিডিং কর্মসূচির আওতায় ব্যবহৃত ভিটামিনযুক্ত পুষ্টি বিস্কুটের ঘাটতি পূরণে অতিরিক্ত ২০ লাখ ডলারের জরুরি তহবিল প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিভি/টিটি




মন্তব্য করুন: