বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস উদযাপন
নিউমোনিয়া সারা বিশ্বে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। শ্বাসতন্ত্রে ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস বা ছত্রাক সংক্রমণের ফলে এই রোগের সৃষ্টি হয়। এটি একটি প্রতিরোধযোগ্য ব্যাধি হলেও বিশ্বে প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে একজন শিশু নিউমোনিয়ায় প্রাণ হারায়।
বাংলাদেশেও প্রতিবছর ৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ২৪ হাজার শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, হাসপাতালের মোট ভর্তি রোগীর প্রায় ২০ শতাংশই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশু।
নিয়মিত টিকা প্রদান, প্রথম ছয় মাস শুধুমাত্র মাতৃদুগ্ধ পান করানো, অ্যান্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহার, সঠিক স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ এবং ধোঁয়ামুক্ত, নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে নিউমোনিয়া-জনিত শিশু মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো সম্ভব।
নিউমোনিয়া রোগের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে প্রতি বছর ১২ই নভেম্বর পালিত হয় 'বিশ্ব নিউমোনিয়া দিবস'। এই দিবসটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সাথে সংগতি রেখে বাংলাদেশেও নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে উদযাপিত হয়।

এ বছর বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন (সিএইচআরএফ) এবং বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরাম (বিএনএফ) যৌথভাবে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করছে। নানামুখী আয়োজনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান দুটি নিউমোনিয়া প্রতিরোধ, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং শিশুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে একটি জনসচেতনতামূলক র্যালি ও ফটো প্রদর্শনী ক্যাম্প স্থাপন করা হয়, যেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণ নিউমোনিয়া প্রতিরোধ ও চিকিৎসা বিষয়ে সাধারণ জনগণকে পরামর্শ প্রদান করেন। পাশাপাশি লিফলেট বিতরণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণা এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়। ফটো প্রদর্শনীতে শ্বাসতন্ত্রজনিত রোগে আক্রান্ত মানুষের বাস্তব জীবনের চিত্র ফুটে ওঠে।
শিশু হাসপাতালের অডিটোরিয়ামে একটি বিশেষ সায়েন্টিফিক সেমিনার আয়োজন করা হয়, যেখানে দেশের খ্যাতনামা শিশু বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানীরা বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নিউমোনিয়া প্রতিরোধ ও চিকিৎসা বিষয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা ও গবেষণালব্ধ তথ্য শেয়ার করেন।
বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউটে দিবসের কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন অধ্যাপক ডা. এ. কে. এম. আজিজুল হক, চেয়ারম্যান, ম্যানেজমেন্ট বোর্ড, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট; অধ্যাপক ডা. মাহবুবুল হক, পরিচালক, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট ও সভাপতি, বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরাম এবং দেশের বিশিষ্ট বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. সমীর কুমার সাহা, নির্বাহী পরিচালক, চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মনির হোসেন, প্রধান শিশু মেডিসিন ও বিভাগীয় প্রধান পেডিয়াট্রিকস, নিওনেটাল মেডিসিন, (নিউনেটোলজি) ও সদস্য পরিচালনা বোর্ড (বাশিহাই) ও একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, অধ্যাপক ডা. জাহাঙ্গীর আলম, প্রধান, রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, অধ্যাপক ডা. এ. আর. এম. লুৎফুল কবির, চিফ অ্যাডভাইজার, বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক পালমোনোলজি ফোরাম, অধ্যাপক ডা. মো. আতিয়ার রহমান, সভাপতি, বাংলাদেশ পেডিয়াট্রিক পালমোনোলজি ফোরাম, অধ্যাপক ডা. মো. মজিবুর রহমান, মহাসচিব, বাংলাদেশ নিওনেটাল ফোরাম, সহযোগী অধ্যাপক ডা. রওশন জাহান, জেনারেল পেডিয়াট্রিকস, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট ও সদস্য পরিচালনা বোর্ড, (বাশিহাই)।
এছাড়াও বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট এবং চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিভি/এআই




মন্তব্য করুন: