যে কারণে আর্মেনিয়া সীমান্তে হাজারো উদ্বাস্তু মানুষের ভিড়

নাগর্নো-কারাবাখ ছেড়ে পালাচ্ছেন আর্মেনিয়ানরা
গত এক সপ্তাহ ধরেই নাগর্নো-কারাবাখের আর্মেনিয়ান মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছিলেন। বৃহস্পতিবারের ঘোষণার পর কেউ আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা করেননি। হাতের কাছে যা পেয়েছেন সঙ্গে নিয়ে তারা আর্মেনিয়ার পথে রওনা হয়েছেন। হাজার হাজার মানুষের ঢল নেমেছে আর্মেনিয়ার সীমান্তে। সেখানে সরকারের তরফে চারটি সাদা তাঁবু লাগানো হয়েছে।
সেখানে রেজিস্ট্রেশন করে এবং হেলথ চেকআপ করে আর্মেনিয়ায় ঢুকতে পারছেন উদ্বাস্তুরা। ট্রাক, ট্রাক্টর, গাড়ি, বাস- যে যা পেয়েছেন তাই নিয়েই চলে এসেছেন আর্মেনিয়ার সীমান্তে।
বৃহস্পতিবার আজারবাইজান ঘোষণা করেছে রিপাবলিক অফ নাগর্নো-কারাবাখ আর থাকবে না। রিপাবলিকের প্রধানকে গ্রেপ্তার করে গোপন বন্ধিশিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জেলে তার ছবিও প্রকাশ করেছে আজারবাইজান। তারপরেই এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। যার অর্থ নাগর্নো-কারাবাখ মিশে যাবে আজারবাইজানের সঙ্গে। বস্তুত, এর আগে গত ১৯ সেপ্টেম্বর আজারবাইজানের সেনা নাগর্নো-কারাবাখে অভিযান চালায়।
প্রায় এক লাখ ২০ হাজার আর্মেনিয়ান নাগর্নো-কারাবাখে থাকতেন। তারমধ্যে অন্তত ৬৫ হাজার মানুষ ইতিমধ্যেই পালিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। বেশ কিছু মানুষকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আজারবাইজানের সেনা এবং রাশিয়ার শান্তিরক্ষা বাহিনীর হাতে তারা খুন হয়েছেন বলে কেউ কেউ মনে করছেন।
এখনো পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি উদ্বাস্তু পৌঁছেছেন দক্ষিণ আর্মেনিয়ার গরিস শহরে। সেখানে পৌঁছে ডিডাব্লিউয়ের রিপোর্টারকে কেউ কেউ জানিয়েছেন, ২৪ ঘণ্টা ধরে না খেয়ে সেখানে পৌঁছেছেন তারা। এক বোতল জল পর্যন্ত নিয়ে আসতে পারেননি তারা।
অধিকাংশ উদ্বাস্তু সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন না। তাদের চোখে মুখে আতঙ্ক। অনেকেই দোষ দিচ্ছেন রাশিয়ার শান্তিরক্ষা বাহিনীকে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুটিনকেও দোষারোপ করছেন অনেকে। তার মধ্যস্থতাতেই এই ঘটনা ঘটলো বলে তাদের দাবি। কেউ কেউ আবার শান্তিরক্ষা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তাদের নিরাপদে সীমান্ত পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার জন্য।
নাগর্নো-কারাবাখের বেশ কিছু অঞ্চলে আজারবাইজানের সেনা ঢুকে পড়েছে বলে জানা গেছে। বস্তুত, কিছুদিন আগেই এই অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া এবং আজারবাইজানের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয়েছিল। শেষপর্যন্ত রাশিয়া এবং তুরস্কের মধ্যস্থতায় তাদের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি সই হয়েছিল। এবার নাগর্নো-কারাবাখ পুনর্দখলের ঘোষণা দিল আজারবাইজান। স্থানীয় অনেকেই মনে করছেন, আরো বড় যুদ্ধ শুরু হতে পারে। ফলে উদ্বাস্তুদের অনেকেই আর্মেনিয়ায় থাকতে চাইছেন, আর্মেনিয়া ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যাবেন তারা।
বিভি/এজেড
মন্তব্য করুন: