ইরানে হামলা: জায়োনিস্টদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি খামেনির

ছবি: সংগৃহীত
মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে আবারও আরেকটি বড় যুদ্ধের মেঘ জমতে শুরু করেছে। অঞ্চলটি যেন স্থায়ী শান্তির পরিবর্তে বারবার সংঘর্ষ আর যুদ্ধের আবর্তে ফিরে যাচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যের যেকোনো অঞ্চলে সংঘাত শুরু হলে তা কতদূর গড়াবে, তা আগেভাগে বলা কঠিন। সম্প্রতি তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন শহরে সামরিক হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। এই হামলাকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে। এদিকে ইরানে আক্রমণের আগে জেরুজালেমের ওয়েস্টার্ন ওয়ালে একটি নোট লিখে রেখেছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু।
এই হামলার আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার কর্মীদের মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। এমন পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্বের দৃষ্টি এখন মধ্যপ্রাচ্যের দিকে এবং সবার মনে একটাই প্রশ্ন, তাহলে কি মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি বড় ধরনের সংঘাত শুরু হচ্ছে?
ইরানে ইসরাইলের হামলার পর দেশটির বিভিন্ন এলাকার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ছবি প্রকাশিত হয়েছে। স্থানীয় টেলিভিশন ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অনেক নারী ও শিশুরাও রয়েছেন।
এদিকে রাতের অন্ধকারে ইরানে ইসরাইলের হামলার পর কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি। শুক্রবার (১৩ জুন) জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া এক ভাষণে তিনি বলেন, জায়োনিস্ট শাসনব্যবস্থাকে কঠোর প্রতিশোধের জন্য তৈরি থাকতে হবে।
খামেনি বলেন, জায়নিস্ট শাসকগোষ্ঠী তাদের অশুভ ও রক্তলিপ্সু হাত দিয়ে ইরানিদের প্রিয় ভূমিতে এক জঘন্য অপরাধ সংঘটিত করেছে। তারা বেসামরিক এলাকায় হামলা চালিয়ে তাদের দমনপীড়নমূলক চরিত্রকে আরও স্পষ্টভাবে প্রকাশ করেছে।
ইরনা নিউজের তথ্যমতে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুলফজল শেকারচি বলেন, ইসরাইল ইরানের ভূখণ্ডে ও আবাসিক এলাকাগুলোতে হামলা চালিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন ইসরাইলি বাহিনীকে এই আক্রমণে সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শেকারচি জানান, তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন শহরে সারা রাত ধরে বিমান হামলা চালানো হয়েছে। ফলে এই আগ্রাসনের জন্য ইসরাইলকে চরম মূল্য দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
ইরানে ইসরাইলের বিমান হামলার পর জেরুজালেমে পশ্চিম প্রাচীরের সামনে প্রার্থনা করেছেন ইহুদিরা। হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শহরের কিছু বাসিন্দা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। রয়টার্সের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এক বাসিন্দা বলেন, তিনি এ ঘটনায় অত্যন্ত আনন্দিত।
এদিকে ইসরাইল জানিয়েছে, তাদের সামরিক অভিযানে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন কেন্দ্র ও উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ইসরাইলের মতে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির সম্ভাব্য হুমকি প্রতিরোধে এ অভিযান দীর্ঘমেয়াদী হতে পারে।
এক বার্তায় ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, এই হুমকি দূর না হওয়া পর্যন্ত তাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এদিকে, ইরানের পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন আক্রমণের আশঙ্কায় ইসরাইলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
বিভি/আইজে
মন্তব্য করুন: